লখনউ: সাত দফায় উত্তর প্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। ফেব্রুয়ারি মাসের ১০ থেকেই দেশের সর্ববৃহৎ রাজ্যে শুরু হবে নির্বাচন। তাঁর আগেই নতুই করে রাজনৈতিক বিতর্ক উস্কে দিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। তিনি জানিয়েছেন, এবারের উত্তর প্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন “৮০ বনাম ২০”-র লড়াই। বিরোধীদের অভিযোগ, নির্বাচনের আগে সাম্প্রদায়িক বিভাজন তৈরি করতে এই মন্তব্য করেছেন যোগী। তাদের অভিযোগ ৮০ ও ২০ সংখ্যার কথা বলে বকলমে হিন্দু-মুসলিম মেরুকরণের তাস খেলার চেষ্টাই করেছেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী।
রবিবার এক বেসরকারি সংবাদমাধ্যম আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উত্তর প্রদেশ নির্বাচেন বিজেপির প্রধান সেনাপতি। সেখানে ব্রাক্ষ্মণ ভোট নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে এই মন্তব্য করেন যোগী আদিত্যনাথ। তিনি বলেন, “এবারে নির্বাচনের প্রতিযোগিতা মাত্রা অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। এবার উত্তর প্রদেশে ৮০-র সঙ্গে ২০-র লড়াই। ৮০ শতাংশ জাতীয়তাবাদ, সুশাসন ও উন্নয়নের সমর্থক। এই শতাংশের অন্তর্ভুক্ত অধিকাংশরাই বিজেপিকে ভোট দেবেন। যাঁরা মাফিয়া ও অপরাধীদের সমর্থক অথবা কৃষক বিরোধী সেই ১৫ থেকে ২০ শতাংশ মানুষ অন্য রাস্তা বেছে নেবেন। লড়াইয়ের শেষে পদ্ম ফুলই ফুটবে।”
বিগত কয়েক মাস ধরেই ভারতের সব থেকে বড় রাজ্যে নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক উত্তাপ ক্রমেই বাড়ছে। বিভিন্ন সভা সমাবেশে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যানাথে মুখে ‘আব্বাজান’ বা ‘কবরস্থান’-এর মতো প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে উত্তর প্রদেশে জাতপাত ও ধর্ম নিয়ে রাজনাীতি দীর্ঘদিনের। অতীতেও ধর্মীয় মেরকরণ ও জাতপাতের রাজনীতিকে হাতিয়ার করে সফল হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলি। তাই এবারের নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দলগুলি কম বেশি সেই অস্ত্রকে ব্যবহার করতে চাইছে। তাতে সর্বশেষ সংযোজন যোদী আদিত্যানাথের এই মন্তব্য।
প্রসঙ্গত, ভারতীয় রাজনীতিতে কথিত আছে, “দিল্লির রাস্তা উত্তর প্রদেশ হয়েই যায়।” ৪০৩ আসনের উত্তর প্রদেশে ক্ষমতা ধরে রাখা বিজেপির কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ এবার নির্বাচনে বিজেপি জয়ী হয়ে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন জয়ের পথ অনেকটা মসৃণ হবে বলে মনে করছে গেরুয়া শিবির। সবথেকে উল্লেখযোগ্য, দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও উত্তর প্রদেশে বারণসী থেকে নির্বাচিত সাংসদ। তাই উত্তর প্রদেশের বিজেপির ফল খারাপ হলে তার দায় মোদীর ওপরও পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাই উত্তর প্রদেশের একদিকে একাধিক উন্নয়নমূলক কর্মসূচির সূচনা ও পাশাপাশি ধর্মীয় মেরুকরণকে হাতিয়ার করেই ভোট বৈতরণী পার হতে চাইছে বিজেপি।
আরও পড়ুন: Caste Census: জাতি সুমারির ইস্যুতে নীতীশের পাশে বিহার কংগ্রেস, পূর্ণ সমর্থনের আশ্বাস
আরও পড়ুন: New guidelines Covid patients: করোনা রোগীদের হাসপাতাল থেকে ছুটির নির্দেশে বদল কেন্দ্রীয় সরকারের