লখনউ: দেশের উর্ধ্বমুখী করোনা সংক্রমণের মাঝেই অনুমতি দেওয়া হয়েছে পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের (Assembly Election 2022)। তবে নির্বাচনের দিন ঘোষণার আগে থেকেই জাতীয় নির্বাচন কমিশন (Election Commission of India) একটি অন্যতম শর্ত রেখেছিল, তা হল করোনা বিধি পালন। কিন্তু সেই শর্তই ভেঙেছে সমাজবাদী পার্টি(Samajwadi Party)। আজ, রবিবার বিকেল ৫টার মধ্যেই অখিলেশের দলকে করোনাবিধি ভেঙে বিপুল জমায়েত ও জনসভার কারণ জানাতে হবে নির্বাচন কমিশনের কাছে। নাহলেই কড়া শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে তাদের।
নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হতেই ফের একবার দলবদলের খেলা শুরু হয়ে গিয়েছে উত্তর প্রদেশে। বিভিন্ন নেতা-মন্ত্রীরা এক দল ছেড়ে অন্য দলে যোগ দিচ্ছেন। চলতি সপ্তাহেই বিজেপি ছাড়েন শ্রমমন্ত্রী স্বামী প্রসাদ মৌর্য্য। তাঁর দেখাদেখি আরেক মন্ত্রী ধর্ম সিং সাইনিও ইস্তফা দেন। একে একে ইস্তফা জমা দেন একাধিক বিধায়কও। এরপর শুক্রবারই স্বামী প্রসাদ মৌর্য্য, ধর্ম সিং সাইনি ও ৫ জন প্রাক্তন বিজেপি বিধায়ক ও ১ জন আপনা দলের বিধায়ক অখিলেশ যাদবের উপস্থিতিতে সমাজবাদী পার্টিতে যোগদান করেন।
লখনউয়ে সমাজবাদী পার্টির প্রধান কার্যালয় বিক্রমাদিত্য মার্গে ওই যোগদান অনুষ্ঠান ছিল। প্রথমে কথা ছিল ভার্চুয়াল মাধ্যমেই এই যোগদান অনুষ্ঠান হবে, নির্বাচন কমিশনকেও সেই তথ্যই জানানো হয়েছিল। কিন্তু দলীয় কার্যালয়ের বাইরেই উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়। সপা নেতারাও ভিডিয়ো বার্তার বদলে সরাসরিই দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে আসন্ন নির্বাচন নিয়ে বক্তব্য রাখেন। এরপরই করোনাবিধি ভঙ্গের অভিযোগে ২৫০০ অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়।
ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৮৮, ২৬৯, ২৭০, ৩৪১, ৫৪ ও ৩ নম্বর ধারা অনুযায়ী এবং মহামারি আইনেও সমাজবাদী পার্টির বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। গতকাল সমাজবাদী পার্টির অফিসে একটি নোটিসও পাঠানো হয়। জাতীয় নির্বাচন কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, সমাজবাদী পার্টি যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ওই নোটিসের জবাব না দেয়, তবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, দেশে করোনার তৃতীয় ঢেউ প্রায় শুরু হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দলগুলির অনুরোধ মেনেই বিধানসভা নির্বাচন পিছোয়নি নির্বাচন কমিশন। কিন্তু প্রথম থেকেই কমিশনের তরফে জানানো হয়েছিল যে কোনও রাজনৈতিক দল, নেতা বা কর্মীরা যদি করোনাবিধি ভঙ্গ করেন, তবে তা বরদাস্ত করা হবে না। ভোট দিতে আসা সাধারণ নাগরিকদের ক্ষেত্রেও এই নিয়মই প্রযোজ্য থাকবে।
এর আগেই উর্ধ্বমুখী করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ১৫ জানুয়ারি অর্থাৎ শুক্রবার অবধি যাবতীয় সভা, সমাবেশ, মিছিল, রোড শো বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিল কমিশন। শনিবারই সেই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ আরও সাত দিন বাড়িয়ে দেয় জাতীয় নির্বাচন কমিশন। আগামী ২২ জানুয়ারি অবধি ভোটমুখী ৫ রাজ্যে নিষিদ্ধ করা হয়েছে সভা-সমাবেশ। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের নির্দেশিকা মেনেই এই বিধিনিষেধ বাড়ানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।