পশ্চিমবঙ্গ: মঙ্গলবারের ভোটপ্রচারেও শুভেন্দুকে তীব্র আক্রমণ ছিল মমতার। ছিল অধিকারী পরিবারের প্রতি তাঁর বিশ্বাসভঙ্গের কথা। সেই সঙ্গে ২০ বছর আগে শুভেন্দুর হার মনে করাতেই যেন এক বিশেষ নেতাকে সভায় উপস্থিত করালেন তৃণমূল নেত্রী। তিনি কিরণময় নন্দ। রাজ্যের প্রাক্তন মৎস্যমন্ত্রী তথা সমাজবাদী পার্টির বর্ষীয়ান নেতা। ২০০১ সালের বিধানসভা ভোটে মুগবেড়িয়া কেন্দ্রে যাঁর কাছে হারতে হয়েছিল তৎকালীন তৃণমূল প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারীকে। এদিন সেই কিরণময়কে পাশে নিয়ে নন্দীগ্রামের বাসুলিচকের লকগেট এলাকায় সভা করলেন মমতা। কী বললেন কিরণময়?
২০ বছর আগে শুভেন্দুকে পরাস্ত করা এই দুঁদে রাজনীতিবিদ মমতার পাশে দাঁড়িয়ে শুভেন্দুকে সরাসরি আক্রমণের পথে হাঁটলেন না। বরং তাঁর কথায় উঠে এল বৃহত্তরভাবে বিজেপি বিরোধিতার কথা। তাঁর কথায়, “বাংলার এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তৃতীয়বারের জন্য মমতাকে মুখ্যমন্ত্রী করুন আর দেশ থেকে বিজেপিকে বিদায় দিন।” শুভেন্দু অধিকারী যখন বারবার ডবল ইঞ্জিন সরকার গড়ার ডাক দিচ্ছেন তখন নাম না করে তাঁকে কটাক্ষ করে কিরণময়ের বার্তা, ভোট ফুরালেই এই ডবল ইঞ্জিন আবার আকাশপথে দিল্লি চলে যাবে। আর বাংলার দিকে ফিরেও তাকাবে না এরা। কিরণময় আরও বলেন, “২০২১ সালে যদি তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হন মমতা, তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার হয়, তবে ২০২২ সালে উত্তর প্রদেশের নির্বাচনে বিজেপিকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করবে সমাজবাদী পার্টি। ২০২৪ সালে বিজেপি দেশ থেকে চিরতরে বিদায় নেবে।”
অর্থাৎ, ব্যক্তিকেন্দ্রিক আক্রমণ বা শুভেন্দু ফ্যাক্টরকে একেবারেই পাত্তা না দিয়ে কিরণময় একুশের বাংলার ভোটকে অ্যাসিড টেস্ট হিসেবে দেখছেন। একুশের ভোটে বাংলাকে পাখির চোখ করা বিজেপি যদি পরাস্ত হয় তবে এক বছর পর যোগী রাজও শেষ হবে বলে মন্তব্য করতে শোনা যায় তাঁকে। তবে রাজনৈতিক মহল মনে করছে, নন্দীগ্রামে কিরণময়কে দিয়ে প্রচার করে যেন কুড়ি বছর আগে শুভেন্দুর হারের কথাও মনে করাতে চাইল তৃণমূল।
আরও পড়ুন: নন্দীগ্রামে মীনাক্ষীর উপর ‘হামলা’, আঙুল তৃণমূলের দিকে
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগেও তৃণমূলের পক্ষ নিতে দেখা গিয়েছে এই সমাজবাদী দলের নেতাকে। সেই সময় এক সভা থেকে শুভেন্দুর মন্তব্য ছিল, ভারত নির্মাণ পার্টির নেতা লক্ষণ শেঠ ও সমাজবাদী পার্টির নেতা কিরণময় নন্দের সিপিএম সমালোচনাই তৃণমূলের কাজ কমিয়ে দিয়েছে। এবার সেই শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে কিরণময় নন্দকে দেখা গেল মমতার সভায়।