কলকাতা: বিধাননগরে ভোটের দিন ঘোষণা হয়ে গিয়েছে সোমবারই। ভোট প্রস্তুতিও শুরু। ভোট ঘোষণা হতেই ফের তৃণমূলের দলাদলির অভিযোগ সামনে আসতে শুরু করেছে। এর আগেও ভোটে উত্তপ্ত হয়েছিল বিধাননগর পুরএলাকা। এবারও ভোটের আগে থেকেই নানা অভিযোগ আসা শুরু। রাজারহাট-নিউটাউনের তৃণমূল বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ উঠল এবার। অর্থের বিনিময়ে প্রার্থীর নাম সুপারিশ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। এই নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে লিখিত অভিযোগও জানানো হয়েছে বলেই সূত্রের দাবি। যদিও এই অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন বলে দাবি বিধায়কের।
রাজারহাট-নিউটাউন বিধানসভার আওতায় রয়েছে বিধাননগর পুরনিগমের ১১টি ওয়ার্ড। এর মধ্যে রয়েছে ওয়ার্ড ১, ২, ৩, ৪, ৫, ১২, ১৩, ১৪, ২০, ২১, ২৭। ২০ নম্বর ওয়ার্ডের যিনি বিদায়ী কাউন্সিলর শিবশঙ্কর ভাণ্ডারি, তিনি বিধাননগরের তৃণমূল নেতা সব্যসাচী দত্তের অনুগামী হিসাবে পরিচিত। সব্যসাচী বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর তিনিও গেরুয়া শিবিরে যান। সব্যসাচী দলে ফেরার পর শিবশঙ্করও তৃণমূলে ফিরে যান। কিন্তু তাপস চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত রতন মৃধাকে কো-অর্ডিনেটর করা হয়।
এখানেই অভিযোগ, দলের কারও সঙ্গে আলোচনা না করে এবার তাপস চট্টোপাধ্যায় এই রতন মৃধা, বিনু মণ্ডল (২৭ নম্বর ওয়ার্ড), তাপস রায় (২১ নম্বর ওয়ার্ড)-সহ একাধিক নাম দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে সুপারিশ করেছেন। এদিকে যাঁদের কথা বিধায়ক বলেছেন, তাঁরা সকলেই নানা দুর্নীতিতে জড়িত বলেও অভিযোগ। শুধুমাত্র টাকার বদলে এঁদের প্রার্থী করা হতে চলেছে বলেও অভিযোগ তোলা হয় মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে।
রাজারহাট-নিউটাউনের বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠেছে, টাকা নিয়ে প্রার্থী করার আশ্বাস দিচ্ছেন। এই অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূলেরই একাংশ। এ প্রসঙ্গে তাপস চট্টোপাধ্যায় বলেন, “কেউ যদি প্রমাণ করতে পারে তাহলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব। এসব আমার প্রয়োজন হয় না সকলে জানে। এসব কথা শুনে নিউটাউনের মানুষ হাসবেন। আর কেউ যদি এরকম করে থাকে তার উচিৎ ছিল আগে দলীয় স্তরে বিষয়টি নিয়ে কথা বলা। সংবাদমাধ্যমে এসব জানানো মানে বোঝাই যাচ্ছে এগুলো যারা করছে তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে করছে। যিনি অভিযোগ করছেন, ওনার বোধহয় ভোটে দাঁড়ানোর ইচ্ছা ছিল। বুঝেছেন সে গুড়ে বালি।”
অভিযোগ, শুধু অনুগামীদেরই নয়, নিজের মেয়েকেও টিকিট দিতে চান তাপস চট্টোপাধ্যায়। ওই চিঠিতে তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ কর্মীরা লেখেন, ‘তাপস চট্টোপাধ্যায় নিজের স্বার্থ দেখেন। মেয়েকে প্রার্থী হিসাবে দাঁড় করাবেন বলে এলাকার বহু পুরনো তৃণমূল কর্মী ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলরকে অন্য ওয়ার্ডে সরাতে চাইছেন। একইভাবে বাদ দিয়েছেন ১ নম্বর ওয়ার্ডের সুস্মিতা দাস, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের স্বাতী বন্দ্যোপাধ্যায়কে।’