‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ ইতিমধ্যে বক্স অফিসে রেকর্ড করেছে। এই ছবি রাজনৈতিক-সামাজিক দু’তরফ থেকেই সমানভাবে নানা ধরনের মতামত পাচ্ছে। ভাল-খারাপ দু’রকম মন্তব্যই উঠে এসেছে। কেউ ছবির নৃশংস প্রতিফলনকে পছন্দ করেছেন, তো কেউ প্রশ্ন তুলেছেন ছবির আসল উদ্দেশ্য নিয়ে। তবে ছবির পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রী এবং তাঁর স্ত্রী পল্লবী যোশি, যিনি ছবির অন্যতম অভিনেত্রী আর প্রযোজকও সমস্ত বিতর্ককে সাহসীকতার সঙ্গে সামলাচ্ছেন। তাঁরা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে একটি মানবীয় ছবি তৈরি করেছেন বলেই দাবি রেখেছেন। যেখানে তাঁরা ছবির বিষয়ের উপর আস্থা রাখতে, যা যা দেখানো প্রয়োজন তা-ই করেছেন বলেই মনে করেন।
অনেকেই মনে করছেন ছবিটির সমস্ত শিল্পকেই ইচ্ছাকৃতভাবে রাজনৈতিক রং দেওয়া হচ্ছে। এমন একটি প্রশ্নের মুখোমুখি হয়ে বিবেক জানিয়েছেন, তিনি অন্যরকমভাবে ভাবেন, তাঁর কাছে রাজনীতি একটা শিল্প। খারাপ প্রচার বলে কিছু হয় না, এমন অনেকেরই মত। এর উত্তরে ই-টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিবেক প্রশ্ন রেখেছেন, কে বলল খারাপ প্রচার নেই? তাঁর মতে, “অবশ্যই আছে। যদি তা না থাকত, তবে আগের সরকার হেরে যেত না। যদি খারাপ প্রচার বলে কিছু না থাকত, তবে অনেক বলিউড অভিনেতার কেরিয়ার উপরে উঠত না, কিংবা এক ঝকটায় পড়ে যেত না। আমি কিছুতেই বুঝতে পারি না, কেন লোকজন খারাপ প্রচারকে আমন্ত্রণ জানান”!
এই ছবি নিয়ে বিভিন্ন মানুষের মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন মত তৈরি হয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, এটা মেরুকরণের ছবি। কি মনে করেন বিবেক, এটা খুব জনপ্রিয় বিষয়? এর উত্তরে বিবেকের দাবি, খুব বড় সমাজসেবা এটা। গণতন্ত্রের ভাল আর খারাপ দিকের বিভাজন তাঁর ছবি। তিনি বলেছেন, “মেরুকরণ শব্দটা আমি ব্যবহার করতে চাই না, বরং বলতে চাই, এখানে দুটো পক্ষ রয়েছে- একদল যাঁরা মানবতার পক্ষে, যাঁরা মানুষের মূল্য আর মানবাধিকারে বিশ্বাসী। অন্যদল সন্ত্রাসবাদের পক্ষে। কিছু মানুষ রয়েছেন আদর্শগত বা বুদ্ধিজীবী, আর রয়েছে কিছু সংবাদ মাধ্যম যাঁরা সন্ত্রাসবাদীদের পক্ষে। আজ একটা বড় সংখ্যক মানুষ মানবতার পক্ষে, কিছু বিপক্ষের মানুষও রয়েছেন। যাঁরা ছবিটি দেখেছে, জিজ্ঞাসা করে দেখলেই জানা যাবে, কেউ এই ছবিকে মেরুকরণের ছবি বলবে না, শুধু যাঁরা সন্ত্রাসবাদের পক্ষে তাঁরাই ছবির সমালোচনা করছেন। দ্য কাশ্মীর ফাইলস বিভাজনের ছবি নয়, বরং রাম-রাবণের ছবি”। ‘কাশ্মীর ফাইলস’ তৈরি সময় কী মাথায় ছিল পরিচালকের? কোন ইতিহাসকে তিনি তুলে ধরতে চেয়েছিলেন? “ইতিহাস যদি তিক্ত হয়, তাহলে আমি কী করব? এর মানে আমরা সত্য ঘটনাকে সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরব না? প্রশ্ন তুলেছেন পরিচালক।ছবির শেষ শুটিংয়ের দিন নাকি ফতোয়া জারি হয়েছিল বিবেকের বিরুদ্ধে? এই নিয়ে তিনি জানান, “আমরা জানতাম সন্ত্রাসবাদীরা এর বিরোধিতা করবে”। অন্যদিকে পল্লবীর মতে, “আমরা কোনও ধর্মের বিষয় নিয়ে কথা বলিনি ছবিতে। একটা ধর্মে বিশ্বাসী মানুষ, যাঁদের বিশ্বাসের জন্য নিজের বাসস্থান থেকে বিতারিত করা হয়। এটা ধর্মীয় যুদ্ধ। যেখানে কিছু খারাপ মানুষ কাশ্মীর উপত্যকাকে নিজেদের স্বার্থে শেষ করে দিয়েছে, দিচ্ছে। সঙ্গে শেষ করছে সেই জায়গার সংস্কৃতি, ঐতিহ্যকে। সমাজের কিছু মানুষ ভাবছেন, আমরা মুসলমান বিরোধী ছবি করেছি, কিন্তু সত্যিটা তা নয়। যাঁরা ধর্মের নামে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করছে, তাঁদের তুলে ধরেছি মাত্রা”। পল্লবী খুশি মানুষ ছবি দেখছেন, আর বুঝছেন এটা কোনও ধর্মের বিরুদ্ধে তৈরি ছবি নয়, এটা আসলে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ছবি।
আরও পড়ুন:The Archies: সুহানা ও খুশির প্রথম ছবির লুক ফাঁস নেটপাড়ায়! কেমন দেখাচ্ছে স্টারকিডদের