AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

‘আমার মা, দিদিমা দু’ জনেই ছিলেন অ্যালঝাইমার্সের রোগী’, কেন বললেন অপরাজিতা

মোহিত সুরি পরিচালিত 'সাইয়ারা' ছবি নিয়ে এখন দেশজুড়ে আলোচনা। অনেকের দাবি, এই ছবি দেখে মাথা ধরে যাচ্ছে। তবে অভিনেত্রী অপরাজিতা আঢ্য ছবিটি দেখে আপ্লুত।

'আমার মা, দিদিমা দু' জনেই ছিলেন অ্যালঝাইমার্সের রোগী', কেন বললেন অপরাজিতা
| Edited By: | Updated on: Jul 28, 2025 | 10:46 AM
Share
মোহিত সুরি পরিচালিত ‘সাইয়ারা’ ছবি নিয়ে এখন দেশজুড়ে আলোচনা। অনেকের দাবি, এই ছবি দেখে মাথা ধরে যাচ্ছে। তবে অভিনেত্রী অপরাজিতা আঢ্য ছবিটি দেখে আপ্লুত। তিনি লিখলেন, ”’সাইয়ারা’—ভালোবাসা, যা শুধু অনুভব নয়, অস্তিত্বের সমার্থক। সিনেমা হলে গিয়ে এক সিনেমা দেখলাম—“সাইয়ারা”। বহু বহু বছর পরে এমন একটি ছবি তৈরি হয়েছে, যেখানে প্রেম কেবল কোনও চেনা কাঠামোর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং সে হয়ে ওঠে—জীবনের মানে, দায়িত্ব, নির্ভরতা, আর সমস্ত কিছুর মূলে থাকা নিঃশর্ত ভালোবাসা। পরিচালক মোহিত সুরি যা করেছেন তা নিঃসন্দেহে অসাধারণ। তিনি একেবারে নতুন মুখ—আহান পাণ্ডে ও নীত পাড্ডা এবং এক ঝাঁক তরুণ-তরুণীদের দিয়ে এমন এক জগৎ তৈরি করেছেন যেখানে প্রতিটি ফ্রেম, প্রতিটি অনুভব দর্শকের মনের মধ্যে ঝাঁকুনি দিয়ে আলোড়ন তোলে, চোখে জল আনে আর হৃদয়ের কোনে জমে থাকা কষ্টগুলোকে স্পর্শ করে। প্রযোজনা করেছে যশ রাজ ফিল্মস, এবং এ প্রসঙ্গে আলাদা করে কিছু বলার প্রয়োজন হয় না। তাঁদের সিনেমা মানেই একটি নির্দিষ্ট গুণমানের প্রতিশ্রুতি—এবং ‘সাইয়ারা’ তাতে পুরোপুরি সার্থক।
এই সিনেমার প্রেম শুধু প্রেমিক-প্রেমিকার নয়—এটা সেই প্রেম, যেখানে কেউ কাউকে নিঃশেষে ভালোবাসে। ভালোবাসে এমনভাবে, যা মাপা যায় না, বোঝানো যায় না, কেবল অনুভব করা যায়। যখন কেউ সত্যিই কাউকে ভালোবাসে, তখন সে শুধু পাশে থাকে না, সে ছায়ার মতো আচ্ছন্ন করে রাখে, যেভাবে একবার ভালোবাসলে আর ফিরে যাওয়া যায় না।আমার নিজের  জীবনের সঙ্গে এই ছবির অনেক গভীর সংযোগ আছে। আমার মা ও দিদিমা—দুজনেই ছিলেন অ্যালঝাইমার্স পেশেন্ট।
আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি, একজন মানুষ যখন তার সব স্মৃতি হারিয়ে ফেলেন, তখন তাঁকে ভালোবাসার মানে কী—তা শুধু সেই মানুষটি বোঝে, যিনি তাঁকে প্রতিদিন ধরে রাখেন, আগলে রাখেন, মনে রাখেন। আমার অভিনীত ‘বেলা শুরু’ ছবির কথা মনে পড়ে যায়—যেখানে একজন অবসন্ন বার্ধক্যের স্ত্রীর পাশে তাঁর স্বামী ছিলেন এক অকুতোভয় ভালবাসার প্রতীক। সেখানেও অ্যালঝাইমার্স ছিল, কিন্তু সেটা ছিল বৃদ্ধ এক যুগলের গল্প, একটা গোটা পরিবারের গল্প। আর ‘সাইয়ারা’-তে সেটা এসেছে নতুন প্রজন্মের চোখে, কিন্তু আবেগটা একই, ব্যথাটাও এক। কেউ যখন সত্যি ভালোবাসে, সে তখন কাঁধে হাত রাখে না—সে কাঁধ হয়ে দাঁড়ায়, অবলম্বন হয়ে যায়, আশ্রয় হয়ে যায়। সে অবস্থান থেকে না সরে, দুঃসময়েও সেই মানুষটিকেই আঁকড়ে ধরে রাখে।
এই ছবি দেখিয়ে দিয়েছে, ভালোবাসা তখনই সার্থক, যখন জীবন উলটে গেলেও আমরা যাকে ভালবাসি, তাকেই ধরে বাঁচি।
আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে আমি জানি—যদি তুমি আমার জীবনে না থাকো, আমি অসম্পূর্ণ। তুমি পাশে না থাকলে, আমি আর কিছুতেই আনন্দ পাই না—সাফল্য, খ্যাতি, অর্থ—সব কিছু তখন শুধুই শব্দ, অনুভূতি নয়। আমরা ভাবি, একাকিত্ব মানে হল পাশে কেউ নেই। না বন্ধু, একাকিত্ব মানে হল—আমি যার হাতটা চাই, সে যদি পাশে না থাকে। আমরা যতই বড় হই, যতই নামী হই, যতই সমৃদ্ধ হই—আমার “আমি” যে অন্য আরেকটা “আমি”-র সঙ্গে জুড়ে আছে, সে যদি ব্যথায় থাকে, সে যদি ভালো না থাকে, আমি কিছুতেই সুখী হতে পারি না। তখন আমার কাছে দুঃখই হয়ে যায় একমাত্র সঙ্গী। এই ছবিটি শুধুমাত্র তরুণদের নয়—
এই ছবিটি সেই সমস্ত মানুষদের জন্য, যারা সত্যিকারের ভালোবাসতে জানে। যাঁরা জানে, ভালোবাসা মানে কখনও কখনও স্মৃতিভ্রষ্ট এক সত্তাকে নিঃশব্দে আগলে রাখা, আর কখনও তাঁর চোখের দিকে তাকিয়ে চুপচাপ বলে ওঠা—”তুমি আছো, তাই আমি এখনও মানুষ।” আমি অনুরোধ করব—এই ছবিটি সিনেমা হলে গিয়ে দেখুন। দেখুন, অনুভব করুন, নিজেকে একটু খুঁজে পান।”