‘মায়ানগরের ময়ূরবাহন’। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের স্মরণে আজ ১৩ ডিসেম্বর রবিবার সন্ধ্যায় একটি স্মরণসভার আয়োজন করেছিল ওয়েস্ট বেঙ্গল মোশন পিকচার আর্টিস্টস ফোরাম। সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুরু হয়েছিল এদিনের স্মরণসভা। প্রবাদপ্রতিম অভিনেতাকে শ্রদ্ধা জানাতে হাজির হয়েছিলেন টেলিভিশন এবং টলিপাড়ার অনেক অভিনেতা-অভিনেত্রী।
বাবার স্মরণসভায় এসেছিলেন সৌমিত্র-কন্যা পৌলমী বসু। তিনি বলেন, “বাপি ছিল অসম্ভব কাজপাগল মানুষ। হাসপাতালে থাকাকালীনও একটু সুস্থ হতেই বলেছিল আমায় কাগজ-কলম দাও। এভাবে শুয়ে থাকতে পারব না। আমি কাজ করব। বাপির এই কাজের প্রতি নিষ্ঠার ব্যাপারটাই যেন আমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি। এভাবেই বাপিকে স্মরণ করি।“ পৌলমী আরও বলেন, “বাড়িতে বাপি যেমন আমাদের ভালবাসত তেমনই আর্টিস্ট ফোরামও বাপির কাছে ছিল পরিবারসম।“
হাজির ছিলেন টলিউডের অভিনেতা জিৎ। সৌমিত্রবাবুর মেয়ের কথার প্রসঙ্গ টেনে তিনিও বলেছেন “সৌমিত্রবাবু সবসময় গুরুজনের মতো আমাদের আগলে রাখতেন। যখনই কোনও দরকারে ওঁর কাছে গিয়েছি, সাহায্য পেয়েছি। পরিবারের সবাইকে একসঙ্গে বেঁধে রেখেছিলেন উনি। আমরা সবাই ওনাকে খুব ভালবাসি। উনি আমাদের মধ্যেই থাকবেন। অসুস্থ হওয়ার আগেও আর্টিস্ট ফোরামের কাজ নিয়ে দেখা করতে গিয়েছিলাম ওনার সঙ্গে। আমার পরিবারের সদস্যদের চোখে যে ভালবাসা দেখতে পাই সৌমিত্রবাবুর মধ্যেও সেই আন্তরিকতা, ভালবাসাই ছিল। আমাদের নিজের পরিবারই ভাবতেন উনি।“
সাংসদ-অভিনেত্রী দেবশ্রী রায়ও এসেছিলেন আজকের স্মরণ সন্ধ্যায়। তিনি বলেন, “পুলুদার চলে যাওয়াটা অপূরণীয় ক্ষতি। পরজন্ম বলে যদি কিছু হয় তাহলে চাইব পুলুদা যেন আবার শিল্পী হয়েই জন্ম নেন। তাপসও (তাপস পাল) চলে গেল কিছুদিন আগে। এই বছরটাই আমাদের শিল্পী জগতের কাজে ভীষণ কষ্টের।“
অভিনেতা শঙ্কর চক্রবর্তী বলেন, “যতদিন পর্যন্ত সুস্থ ছিলেন যখনই সৌমিত্র জেঠুর কাছে কোনও সমস্যা নিয়ে গেছি উনি সমাধান করে দিয়েছেন। পাশে থেকেছেন। পরিবারের বড়র মতোই আগলে রাখতেন আমাদের।“ অভিনেতা দেবদূত ঘোষও এসেছিলেন আজকের স্মরণসভায়। তাঁর কথায়, “ফোরামের যে কাজে যখন গিয়েছি তখনই সাহায্য পেয়েছি। মাথার উপর ছাতার মতো ছিলেন সৌমিত্রবাবু।“
এছাড়াও আজকের অনুষ্ঠানে ছিলেন কৌশিক সেন, পল্লবী চট্টোপাধ্যায়, লিলি চক্রবর্তী, পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, অরিন্দম গঙ্গোপাধ্যায়, শান্তিলাল মুখোপাধ্যায় ও আরও অনেকে। এদিনের স্মরণসভায় গান গেয়েছেন শ্রীকান্ত আচার্য, সুজন মুখোপাধ্যায় এবং পৌলমী বসু। এছাড়াও এসেছিলেন জুন মালিয়া, সাহেব চট্টোপাধ্যায়, অনীক দত্ত, রূপাঞ্জনা মৈত্র, দেবযানী চট্টোপাধ্যায় ও আরও অনেকে। দলমত নির্বিশেষে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদেরও দেখা গিয়েছে এদিনের স্মরণসভায়। এসেছিলেন মদন মিত্র, সুজন চক্রবর্তী, শতরূপ ঘোষ।