প্রয়াত বলিউডের বর্ষীয়ান অভিনেতা দিলীপ কুমার। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৮ বছর। জুন মাসের শেষে মুম্বইয়ের হিন্দুজা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে। সেখানেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। দিলীপ কুমারের প্রয়াণ মানে একটা যুগের অবসান। তাঁকে নিয়ে স্মৃতিচারণা করলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় এবং ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত।
একটা অধ্যায় শেষ হয়ে গেল। ভারতবর্ষের সিনেমার এক অধ্যায় ছিলেন দিলীপ কুমার। দিলীপ কুমার-রাজ কাপুর-দেব আনন্দ, এই তিন নাম ভারতবর্ষের সিনেমায় এক অদ্ভূত জায়গা করে রেখেছিল। তাঁদের মধ্যে দু’জন অনেক আগে চলে গিয়েছেন। দিলীপকুমারজিও চলে গেলেন। এটা অধ্যায়ের অবসান। খুব উঁচু মানের, উঁচু দরের একজন অভিনেতা ছিলেন। এ নিয়ে আমার বলার মতো কিছুই নেই। উনি কত বড় অভিনেতা ছিলেন তা বলার সাহসও আমার নেই। কিন্তু হ্যাঁ, এটা ঠিকই যে এটা একটা ইতিহাস এবং যতদিন ভারতবর্ষে সিনেমা থাকবে দিলীপ কুমারের নাম একেবারে উজ্জ্বল হয়ে থাকবে।
—প্রসেনজিৎ
যখন আমি খুব ছোট ছিলাম তখন থেকে আমি ওঁর নাম শুনতাম। দিলীপ কুমার। তখন সে সময়ে আমি কিছুই বুঝতাম না যে এই মহান মানুষটি আসলে কে? এরপর যখন আস্তে আস্তে বড় হলাম, আমি জানতে শুরু করলাম যে গোটা ইন্ডাস্টিতে এই মানুষটি কতটা আধিপত্য বিস্তার করে রেখে ছিলেন। দিলীপ কুমার অভিনীত প্রথম ছবি যা আমি দেখি তা হল ‘শক্তি’। আমি তখন স্কুলে পড়ি। সেই সময় আমি দিলীপ কুমার এবং অমিতাভ বচ্চনকে একই ফ্রেমে দেখি। দুই মহান অভিনেতাকে একসঙ্গে দেখাটা আমার কাছে ভীষণ রোমাঞ্চকর ছিল। তারপর একে একে ‘কর্মা’, ‘সৌদাগর’ দেখলাম। পরেরদিকে ‘দেবদাস’, ‘মধুমতী’ দেখি। আমার বাবা তাঁর ভীষণ বড় ফ্যান। আমি বেশিরভাগ সময় বাবার মুখে দিলীপ কুমারের নাম শুনতাম। আজ গোটা বিশ্ব তাঁকে চেনে এবং মহান মানুষটির মৃত্যুতে গোটা বিশ্ব আজ শোকাহত। কিন্তু উনি যা রেখে গিয়েছেন, ওঁর রাজত্ব, ওঁর লিগেসি, প্রজন্মের পর প্রজন্মে ওঁর এই অবদানের স্বীকৃতি দিয়ে যাবেন। তাঁকে বলা হতো ‘ট্র্যাজিকের রাজা’ কারণ তিনি এতটা ভার্সেটাইল ছিলেন। যেভাবে তিনি সংলাপ বলতেন, থামতেন, পজ় নিতেন, এক্সপ্রেশন সব ছিল মন্ত্রমুগ্ধকর। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি এক অন্ধকারচ্ছন্ন সময়ের মধ্যে দিয়ে চলছে। আমরা একের পর মূল্যবান রত্ন হারিয়ে ফেলছি। উনি আমাদের কোহিনূর ছিলেন। আমরা আমাদের ইন্ডাস্ট্রিক কোহিনূর হারিয়ে ফেললাম। ওঁর সঙ্গে আমার কোনও ব্যক্তিগত আলাপ হয়নি কিন্তু অনেকবার আমাদের দেখা হয়েছিল। এক বড় ক্ষতি হয়ে গেল… ওঁর পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা রইল। আমি আশা করি ওঁর লিজেসি থেকে যাবে। মহান ব্যক্তিত্বদের মৃত্যু হয় না। উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো দীলিপ কুমার আমাদের সঙ্গে থেকে যাবেন।
—ঋতুপর্ণা
আরও পড়ুন তরুণ অভিনেতাদের বুকে জড়িয়ে ধরতেন তারপর তাঁদেরই পিছনে লাগতেন: রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত
আরও পড়ুন বাংলা কবিতা কী সুন্দর যে বলতেন তা আমি নিজের কানে শুনেছি: সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়