কুপার হাসপাতাল, এই হাসপাতালেই অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের দেহ নিয়ে আসা হয়েছিল ময়নাতদন্তের জন্য। আড়াই বছর পর ওই হাসপাতালেরই মর্গকর্মীর চাঞ্চল্যকর দাবি, সুশান্ত সিং রাজপুতের ঘটনা আদপে আত্মহত্যা নয়। তা আদপে এক সুপরিকল্পিত খুন। সত্যিই কি খুন হয়েছিলেন সুশান্ত? আর তা যদি হয়েও থাকে তবে খুন করল কে? এ নিয়ে যখন তোলপাড় গোটা দেশ তখন মুখ খুলেছেন সুশান্তের দিদি শ্বেতা সিং। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি স্ক্রিনশট শেয়ার করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। স্ক্রিনশট শেয়ার করে শ্বেতা লেখেন, “মর্গকর্মী যা বলেছেন তাতে যদি এক ফোঁটাও সত্যি থাকে তবে সিভিআইকে আমরা অনুরোধ করছি ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে। আমরা আপনাদের বিশ্বাস করেছি। বিশ্বাস করেছি এক স্বচ্ছ তদন্তে হবে। আমাদের সত্যিটা জানান প্লিজ। আমরা জানতে চাই। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনার কোনও সমাধান আমরা পেলাম না।”
প্রসঙ্গত, কুপার হাসপাতালের কর্মী রূপকুমার শাহ টিভিনাইন মরাঠিকে বলেছিলেন, ““সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর দিন আমাদের কাছে ময়নাতদন্তের জন্য পাঁচটি দেহ এসেছিল। জায়গাটি ছিল কুপার হাসপাতাল। ওই পাঁচটি দেহের মধ্যে আমরা জানতে পারি, একটি ভিআইপি। ময়নাতদন্তের সময় দেখি তা সুশান্তের দেহ। ওর গায়ের একাধিক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। এমনকি ঘাড়েও আঘাতের চিহ্ন দেখতে পারি আমরা।” তাঁর আরও দাবি, “যদিও ওই ময়নাতদন্তের ভিডিয়ো করতেও আমাদের বারণ করা হয়, উপর মহল থেকে শুধুমাত্র ছবি তুলে রাখতে। তাঁদের নির্দেশে তেমনটাই করি আমরা।” ওই ব্যক্তি যোগ করেন, বারংবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও তাঁকে ‘নিয়ম মেনে কাজ’ করতে বলা হয়। তাঁর কথায়, “যখন প্রথম বার ওঁর নিথর দেহ দেখি তখন আমার সিনিয়রদের জানিয়েছিলাম আত্মহত্যা নয়, খুন বলে মনে হচ্ছে। কিন্তু কিছুতেই আমার কথা শোনা হয়নি। তাঁরা যত দ্রুত সম্ভব আমাকে কাজ শেষ করে অভিনেতার দেহ পুলিশকে হস্তান্তর করতে বলে।”
তাঁর এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে মুখ খুলেছেন সুশান্তের পরিবারের আইনজীবী বিকাশ সিংও। তিনি বলেন, ““ঘাড়ে আঘাতের চিহ্ন ছিল কিনা তা নিয়ে মন্তব্য করতে পারব না কারণ ওর দিদিরা এই বিষয় নিয়ে আমাকে কিছু বলেননি। কিন্তু আমি সব সময়েই বলে এসেছি সুশান্তের মৃত্যু নিছকই আত্মহত্যার ঘটনার নয়। এর নেপথ্যে রয়েছে এক গভীর ষড়যন্ত্র। শুধুমাত্র সিবিআই-ই এই রহস্য উদ্ঘাটন করতে সক্ষম হবে।” ২০২০ সালের ১৪ জুন– মুম্বইয়ের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় অভিনেতার ঝুলন্ত দেহ। মৃত্যু নাকি হত্যা– তা নিয়ে সে সময় চর্চা হয়েছিল প্রচুর। এনসিবি, সিবিআই, ইডি– সুশান্ত কাণ্ডে হস্তক্ষেপ করেন এই তিন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। অথচ প্রায় দু’বছর কেটে গেলেও তাঁর মৃত্যু রহস্যের কিনারা আজও হয়নি। অবশেষে কি সেই রহস্যের জট খুলতে চলেছে? উত্তরের অপেক্ষায় সকলেই।