‘আফগানিস্তান থেকে পালিয়ে এসেছিলাম…’, অতীতের ভয়ঙ্কর স্মৃতি হাতড়াচ্ছেন বলি অভিনেত্রী

TV9 Bangla Digital | Edited By: বিহঙ্গী বিশ্বাস

Aug 22, 2021 | 4:25 PM

আরশি-ওয়ারিনারা আজ ভীত... উদ্বিগ্ন। ছোটবেলায় এ দেশে না চলে এলে সেই সব মহিলাদের মধ্যে একজন যে হতে পারতেন তাঁরাও সে কথা মনে করেই শিউরে উঠছেন তাঁরা।

আফগানিস্তান থেকে পালিয়ে এসেছিলাম..., অতীতের ভয়ঙ্কর স্মৃতি হাতড়াচ্ছেন বলি অভিনেত্রী
ওয়ারিনা

Follow Us

কেটে গেছে বহু বছর… স্মৃতি আজ ফিকে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে মনের কোণে পড়ে থাকা সেই দগদগে ক্ষত হঠাৎ করেই যেন জীবন্ত হয়ে ফুটে উঠছে অভিনেত্রী ওয়ারিনা হুসেনের স্মৃতিতে। বর্তমানে আফগানিস্তান জুড়ে তালিব-রাজ দেখে তিনি ফিরে যাচ্ছে বছর কুড়ি আগে তাঁর ছোটবেলায়।

ওয়ারিনার কথায়, “একদম বছর কুড়ি আগের ঘটনা। আফগানিস্তানে যুদ্ধ শুরু হয়। আমি ও আমার পরিবার সেখান থেকে পালাতে বাধ্য হই। বহু বছর পর একই চিত্র দেখছি। বহু মানুষের মাথার উপরে ছাদটুকুও নেই।” তাঁর কাছে কাবুল মানে পরিবার, বসন্ত, বনভোজন… কিন্তু যে দিন যুদ্ধের বীভৎসতা টের পেল পরিবার সে দিন থেকে আর থাক হয়নি দেখানে। ওয়ারিনা জানাচ্ছেন, কাবুলের বাতাসে আজ শুধুই অত্যাচারের কালো বাতাস।

নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছেন তিনি। ভারত তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে গ্রহণ করেছিল সে সময়। কিন্তু এই মুহূর্তে তা হচ্ছে না। ওখানকার মহিলাদের তালিবানরা যে বাচ্চা তৈরি করার মেশিন ছাড়া কিছুই ভাবছে না তা স্পষ্ট করে জানিয়ে অভিনেত্রী বলছেন, “ছোট ছোট বাচ্চাদের মাথায় এখন শুধু প্রতিশোধের আগুন।” অন্যান্য দেশগুলির কাছে তাঁর একান্ত অনুরোধ, “এই সময় দয়া করে আফগানিস্তানকে একা করে দেবেন না।” দিন কয়েক আগে আফগানিস্তানের মানুষের চরম অসহায়তা নিয়ে মুখ খুলেছিলেন আর এক অভিনেত্রী আরশি খান। তিনি বলেছিলেন, “আমি আফগানি পাঠান। আমার পরিবার ইউসুফ জাফার পাঠান গোষ্ঠীর অন্তর্গত। আমার দাদু আফগানিস্তান থেকে এ দেশে চলে আসেন। ভোপালে জেলার ছিলেন। আমার শিকড় ওখানকার হতে পারে, কিন্তু আমি ভারতীয় নাগরিক।”

আরও পড়ুন-আফগানিস্তানে জন্মালেও আমি কিন্তু মনে প্রাণে ভারতীয়: আরশি খান

তালিবানি শাসনে আবারও আফগানিস্তান জুড়ে লাগু হয়েছে শরিয়া আইন। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল অবধি যখন তালিবানদের দখলে ছিল আফগানিস্তান, তখনই চালু করা হয়েছিল শরিয়া আইন। সেখানে যেমন স্বামী বা রক্তের সম্পর্ক রয়েছে, এমন পুরষসঙ্গী ছাড়া বেরোনোয় নিষেধাজ্ঞা ছিল, তেমনই শিক্ষা, চাকরি করার অধিকারও কেড়ে নেওয়া হয়। মার্কিন সেনা অভ্যুত্থানের পর আফগান সরকারের অধীনেই ধীরে ধীরে সেই অধিকার ফিরে পেয়েছিল আফগানিস্তানের মহিলারা। কিন্তু আবারও দেশে ফিরে এসেছে সেই পুরনো দিন। রাস্তায় বেরলে যদি মহিলার পায়ের আওয়াজও শোনা যায় সেই কারণে হিল জুতো পরা নিষিদ্ধ হয়েছে।

 

তালিবান শীর্ষনেতাদের তরফে নারী শিক্ষা ও স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ না করার আশ্বাস দেওয়া হলেও পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, নির্দিষ্ট অঞ্চল শাসনের দায়িত্বে যে তালিবান নেতা থাকেন, তাদের চিন্তাধারার উপরই সমস্ত নিয়ম নির্ভর করে। ইতিমধ্যেই কাবুল, কুন্দুজ, কান্দাহারের প্রতিটি রাস্তা থেকে মুছে ফেলা হচ্ছে নারীদের যাবতীয় পোস্টার। অশোভন পোশাক নয়, কেবল হিজাব না থাকার কারণেই সাদা বা কালো রঙে ঢেকে ফেলা হচ্ছে যাবতীয় পোস্টার।

আরশি-ওয়ারিনারা আজ ভীত… উদ্বিগ্ন। ছোটবেলায় এ দেশে না চলে এলে সেই সব মহিলাদের মধ্যে একজন যে হতে পারতেন তাঁরাও সে কথা মনে করেই শিউরে উঠছেন তাঁরা।

 

Next Article