আফগানিস্তানে জন্মালেও আমি কিন্তু মনে প্রাণে ভারতীয়: আরশি খান

আরশির কথায়, "আমার নাগরিকত্ব নিয়ে এই ট্রোল নতুন নয়। ওঁরা ভাবেন আমি পাকিস্তানের নাগরিক। আর এই কারণে কর্মক্ষেত্রেও অনেক কিছু সহ্য করতে হয়েছে আমাকে। জীবনে অনেক দুঃখের ঘটনা ঘটেছে।"

আফগানিস্তানে জন্মালেও আমি কিন্তু মনে প্রাণে ভারতীয়: আরশি খান
আরশি খান।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 19, 2021 | 12:47 PM

তালিবানের মুঠোয় আফগানিস্তান। বিশ্বজুড়ে উত্তপ্ত বাতাস বইছে। রাজধানী কাবুলে এখন তালিবানি নিশান। সরকারি দফতর থেকে বিনোদন পার্ক, সর্বত্রই তালিব-রাজ। এমতাবস্থায় নিজের পরিচয় নিয়ে ট্রোল হতে হল অভিনেত্রী আরশি খান। কমেন্ট বক্সে লেখা হল তিনি পাকিস্তানি, কেউ বললেন তিনি তালিবান। এ নিয়েই এক সাক্ষাৎকারে মুখ খুললেন আরশি। জানালেন, তিনি আফগানিস্তানের জন্মেছেন এ কথা সত্য। কিন্তু ছোট বয়সেই পরিবারসহ ভারতে চলে আসেন। মনে প্রাণে তিনি শুধুই ভারতীয়।

আরশির কথায়, “আমার নাগরিকত্ব নিয়ে এই ট্রোল নতুন নয়। ওঁরা ভাবেন আমি পাকিস্তানের নাগরিক। আর এই কারণে কর্মক্ষেত্রেও অনেক কিছু সহ্য করতে হয়েছে আমাকে। জীবনে অনেক দুঃখের ঘটনা ঘটেছে। আমি সবাইকে খুব পরিষ্কার করে বলতে চাই, সব দিক দিয়েই আমি ভারতীয়। আমার কাছে ভারতীয় সরকারের অনুমোদন প্রাপ্ত যাবতীয় পরিচয়পত্র রয়েছে। আমি পাকিস্তানের নই, আমি ভারত, আমি ভারতীয়।”

তিনি যোগ করেন, “আমি আফগানি পাঠান। আমার পরিবার ইউসুফ জাফার পাঠান গোষ্ঠীর অন্তর্গত। আমার দাদু আফগানিস্তান থেকে এ দেশে চলে আসেন। ভোপালে জেলার ছিলেন। আমার শিকড় ওখানকার হতে পারে, কিন্তু আমি ভারতীয় নাগরিক।” বর্তমানে আফগানিস্তানে তালিবানি রাজ নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আরশি। ভয় পাচ্ছেন তিনি, গায়ের লোম খাঁড়া হয়ে যাচ্ছে– জানিয়েছেন আরশি।

তালিবানি শাসনে আবারও আফগানিস্তান জুড়ে লাগু হয়েছে শরিয়া আইন। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল অবধি যখন তালিবানদের দখলে ছিল আফগানিস্তান, তখনই চালু করা হয়েছিল শরিয়া আইন। সেখানে যেমন স্বামী বা রক্তের সম্পর্ক রয়েছে, এমন পুরষসঙ্গী ছাড়া বেরোনোয় নিষেধাজ্ঞা ছিল, তেমনই শিক্ষা, চাকরি করার অধিকারও কেড়ে নেওয়া হয়। মার্কিন সেনা অভ্যুত্থানের পর আফগান সরকারের অধীনেই ধীরে ধীরে সেই অধিকার ফিরে পেয়েছিল আফগানিস্তানের মহিলারা। কিন্তু আবারও দেশে ফিরে এসেছে সেই পুরনো দিন। রাস্তায় বেরলে যদি মহিলার পায়ের আওয়াজও শোনা যায় সেই কারণে হিল জুতো পরা নিষিদ্ধ হয়েছে।

তালিবান শীর্ষনেতাদের তরফে নারী শিক্ষা ও স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ না করার আশ্বাস দেওয়া হলেও পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, নির্দিষ্ট অঞ্চল শাসনের দায়িত্বে যে তালিবান নেতা থাকেন, তাদের চিন্তাধারার উপরই সমস্ত নিয়ম নির্ভর করে। ইতিমধ্যেই কাবুল, কুন্দুজ, কান্দাহারের প্রতিটি রাস্তা থেকে মুছে ফেলা হচ্ছে নারীদের যাবতীয় পোস্টার। অশোভন পোশাক নয়, কেবল হিজাব না থাকার কারণেই সাদা বা কালো রঙে ঢেকে ফেলা হচ্ছে যাবতীয় পোস্টার।

আরশি ভীত-চিন্তিত। মনে মনে ভাবছেন, ছোটবেলায় এ দেশে না চলে এলে সেই সব মহিলাদের মধ্যে একজন হতে পারতেন তিনিও। প্রসঙ্গত, তাঁর যখন চার বছর বয়স তখন পরিবার সহ এ দেশে পাকাপাকিভাবে চলে আসেন আরশি খান। বর্তমানে ছোট পর্দায় পরিচিত মুখ তিনি। অংশ নিয়েছিলেন বিগ বসেও।