সময় থেমে থাকে না। যে মঞ্চে শেষ পারফরম্যান্স দিয়েছিলেন কেকে সেই নজরুল মঞ্চেই তিন দিন পর প্রথম বার গান গাইতে উঠছেন অনুপম রায় ও তাঁর টিম। এক কলেজের ফেস্টে বহুদিন আগেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল অনুপমকে। পেশাদারিত্বের খাতিরে ভারাক্রান্ত হৃদয়েই শুক্রবার আর কিছুক্ষণ পরেই সেখানে অংশ নেবেন অনুপম। তবে কেকে’র ঘটনার পর নজরুল মঞ্চের ব্যবস্থাপনার উপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। রাখা হচ্ছে অ্যাম্বুলেস, থাকছেন চিকিৎসক। এমনকি আসনসংখ্যাও নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। সূত্র জানাচ্ছে, ২৪৮২টি আসন সংখ্যার মধ্যে পাস বিলি করা হয়েছে ১২০০টি। এ ছাড়াও বেশি সংখ্যক পুলিশও মোতায়েন করা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা রক্ষীর সংখ্যাও। নিযুক্ত করা হয়েছে বাউন্সারও।
এ তো গেল নিরাপত্তার কথা আর অনপুমের মন? তিন দিনেই আগে তাঁর পছন্দের গায়কের শেষ গান এই মঞ্চ থেকেই যে ছড়িয়ে পড়েছিল দর্শকের কাছে? এই মঞ্চেই যে কেকে গেয়েছিলেন, ‘পল… ইয়াদ আয়েঙ্গে ওহ পল’। আজও কি সেই পল বা মুহূর্তের কথা মনে পড়বে অনুপমের? টিভিনাইন বাংলাকে বললেন, “ভারাক্রান্ত হৃদয়েই আজ গান গাইতে উঠব। বারবার মনে পড়বে মানুষটার কথা। এখানেই তো তাঁর শেষ গান। আমাদের অনুষ্ঠান যদিও এক মাস আগে থেকেই ঠিক ছিল”। কেকে মারা যাওয়ার পর নজরুল মঞ্চ ও আয়োজকদের উপরে উঠেছিল নানা প্রশ্ন। মাত্রাতিরিক্ত দর্শকের প্রবেশ, এসি ঠিকঠাক কাজ না করা– কেকে’র মৃত্যুর নেপথ্যে দায়ী করা হয়েছিল এ হেন একাধিক কারণকে। অনুপম কি চিন্তিত? তিনি বললেন, “ওই অনুষ্ঠানের পর মানুষ অনেক সিরিয়াস। আমার মনে হয় না আজ অত সংখ্যক ভিড় হবে বলেও। এ ছাড়াও কলকাতা পুলিশ যথাযথ ভাবে ব্যবস্থা নিচ্ছে। আয়োজকদের উপরেও আমার আস্থা রয়েছে। কারণ মানুষ তো ভুল থেকেই শিক্ষা নেয়”।
মঙ্গলবারের রাত। আচমকাই এক খবরে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল তামাম বিশ্ব। কলকাতায় শো করতে এসে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হল সঙ্গীতশিল্পী কেকে। এক কলেজের ফেস্টে অংশ নেওয়ার পরেই হোটেলে ঢুকে অসুস্থ হন গায়ক। তারপরেই সব শেষ। ওই দিন অসমর্থিত সূত্র মারফৎ জানা যায় মোট আসন সংখ্যার দ্বিগুণেরও বেশি দর্শক হাজির হয়েছিলেন কেকে’র গান শুনতে। মঞ্চেও বারংবার অস্বস্তি বোধ করলেও গান থামাননি গায়ক। পরিণতি মৃত্যু। শোক ফিকে হয়নি। কিন্তু শিল্প থামে না। থামে না সময়ও। ওই মঞ্চেই আবারও অনুপম। কালের নিয়মই যে তাই…।