Debanjali B Joshi: ‘টলিউডে গাইবার যোগ্যতা বোধহয় এখনও হয়নি’, ‘ভেড়িয়া’য় বিগ ব্রেক কলকাতার মেয়ে দেবাঞ্জলির

Inside Story; আমি সেই অর্থে সেলিব্রিটি এখনও হয়ে উঠতে পারিনি। তবে আমার মনে হয় যখন আমি নিজের সেই পরিচিতিটা তৈরি করে ফেলতে পারব, টলিউড আমায় ডাকবে।

Debanjali B Joshi: 'টলিউডে গাইবার যোগ্যতা বোধহয় এখনও হয়নি', 'ভেড়িয়া'য় বিগ ব্রেক কলকাতার মেয়ে দেবাঞ্জলির
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 27, 2022 | 10:31 AM
জয়িতা চন্দ্র
ছোটবড় গানের সুযোগ, সঙ্গে বেশ কিছু বড় সংস্থার জিঙ্গল দিয়ে শুরু হয়েছিল গানের জগতের সফর। কলকাতার মেয়ে দেবাঞ্জলি বিশ্বাস টলিউডে কাজের পাশাপাশি বলিউডেও কেরিয়ার তৈরির স্বপ্ন দেখেছিলেন। সেই সূত্রেই তাঁর বি-টাউনে পাড়ি দেওয়া। শুক্রবার ‘ভেড়িয়া’ মুক্তির পর নতুন করে চর্চায় এই গায়িকা। ছবির শুরু থেকে শেষ ফ্রেম, থিম সং-এ দেবাঞ্জলির কণ্ঠ প্রশংসিত হয়েছে। যাদবপুরের মেয়ে কোনও যোগাযোগ ছাড়াই কীভাবে বি-টাউনে ছাপ তৈরি করার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন, শেয়ার করলেন TV9 বাংলার সঙ্গে। 
 
কলকাতা ছেড়ে বলিউডে গিয়ে স্বপ্নপূরণের চেষ্টা… কতটা কাজের সুযোগ মিলছে ওখানে?
 
না, বিষয়টা ঠিক তেমন নয়। বি-টাউনে কাজের সুযোগ প্রচুর। ‘নিউকামার’ বিষয়টা সবক্ষেত্রে খাটে না। আমার মনে হয়, কেবল বলিউডেই নয়, সব জায়গাতেই কাজের সুযোগ রয়েছে। তবে আমার-আপনার মধ্যে সেই ‘স্পার্ক’টা, মানে খিদেটা থাকা দরকার। কাজ পেতে গেলে প্রথমে আপনাকে অডিশন দিতে হবে। সেখানে আপনার দক্ষতাকে তুলে ধরতে হবে। সেই পরীক্ষায় যদি আপনি পাশ করে যান, তবেই সে কাজ আপনার। নতুন-পুরনো ভেদাভেদ খুব একটা চোখে পড়ে না বলিউডে।
 
বাতিলের তালিকায় কোনও ‘এক্স ফ্যাক্টর’ কাজ করে না? 
 
করে না বলাটা ভুল। আমি যেমন একটা বিষয় বলতে পারি… যদি আপনার সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল ভাল থাকে, তবে আপনি অগ্রাধিকার পাবেন। যদি না থাকে, সেক্ষেত্রে ঝুঁকি রয়েছে। কারণ সোশ্যাল মিডিয়া এখন প্রচারের একটা বড় অস্ত্র। ফলে সেটার গুরুত্বও দেখা হয় অনেকক্ষেত্রেই। কারও হয়তো কণ্ঠস্বর ঠিকঠাক, তবে ঠিক ‘অনবদ্য’র তকমা দেওয়া যায় না।
নতুনদের সুযোগ করে দেওয়ার বিষয়ে টলিউড কতটা ফ্লেক্সিবল বলে আপনি মনে করেন?
 
এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়াটা আমার জন্য একটু কঠিন। কারণ আমি তো টলিউডে খুব বেশি কাজ করিনি। আমি এখন কলকাতায় থাকিও না। তবে একটা কথা অবশ্যই বলব, আমি টলিউডে কাজ করতে চাই। বি-টাউনে রয়েছি বলে যে টলিউডবিমুখ, এমনটা নয়। ভাল কাজ যদি পাই, আমায় যদি কেউ ডাকে, তবে নিশ্চয়ই যাব। কাজও করব। কারণ আমার টলিউডে খুব একটা পরিচিতি নেই। মাত্র দু’টো গান বেরিয়েছে টলিউডে। তবে এখানেও আমার একটা বিষয় বলার আছে, আমার কেরিয়ার শুরুই হয়েছে মুম্বইয়ে এসে। যাকে বলে শূন্য থেকে শুরু করা। 
 
তাহলে টলিউড থেকে সেভাবে ডাক না পাওয়ার কারণ কী হতে পারে বলে আপনি মনে করেন?
 
এক, টলিউড তো বলিউডের থেকে অনেক ছোট ইন্ডাস্ট্রি, সেখানে কাজটা হয় কম। আর আমার ব্যক্তিগতভাবে একটা বিষয় মনে হয়, বাংলা বোধহয় মনে করে, যে বা যাঁরা বলিউডে গাইছেন, বা প্রচুর গান করে জনপ্রিয়, তাঁদের দিয়েই কাজটা করানো সঠিক। আমি মনে করি, আমি যদি এখানে না এসে কলকাতায় বসে চেষ্টা করতাম, তবে আমি এখন হয়তো কিছু-কিছু কাজ পেতাম। এখানে এসে বিষয়টা গিয়েছে পাল্টে। যদিও আমি সেই অর্থে সেলিব্রিটি এখনও হয়ে উঠতে পারিনি। তবে আমার মনে হয় যখন আমি নিজের সেই পরিচিতিটা তৈরি করে ফেলতে পারব, টলিউড আমায় ডাকবে। তাঁদের যুক্তিতে তো আমি এখনও তেমন বড় সেলিব্রিটি নই, হলে আমায় ডাকবে। টলিউডে সেভাবে গাইবার যোগ্যতা বোধহয় এখনও তৈরি হয়নি। ডাকবে নিশ্চয়ই…। 
 
রিয়ালিটি শো থেকে উঠে আসা গায়ক-গায়িকারা রাতারাতি সেলিব্রেটি, সেক্ষেত্রে  আপনাদের শ্রমটা কতটা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়? 
 
এটা ঠিক, সাধারণের চোখে তাঁরা রাতারাতি সেলিব্রিটি।  তাঁদের চাহিদাও হঠাৎ করে বেড়ে যায়। তবে এই ঘোরটা থাকে মেরেকেটে ছ’ থেকে সাত মাস। তারপর তাঁদের লড়াইটাও আমাাদের সঙ্গে মিশে যায়। প্রথম কাজের সুযোগটা হয়তো সহজে মেলে।
অনেককেই আছেন যাঁরা কনসার্ট করে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। এ প্রসঙ্গে আপনার কী মত? 
তাঁদের প্রসঙ্গে একটা কথাই বলব, আপনি যদি ওরিজিনালস (নিজের গান) না গান, তবে আপনার কদর একদিন না একদিন কমবেই। ‘কণ্ঠী’ হয়ে জনপ্রিয় হওয়া যায়, কিন্তু স্বতন্ত্র গান না গাইলে নিজের মনে সেই সুখ কোথায়? 
 
এখন টেকনিক্যাল সাপোর্টে কম বেশি অনেকেই গান গাইছেন। এটা যাঁরা মূলস্রোতের গানের জগতে কাজ করতে চেয়েছেন বা করছেন, তাঁদের কাজ পাওয়ার সুযোগ কি সামান্য হলেও কমিয়ে দিচ্ছে? 
 
এটা আমার মনে হয় ওই প্রযুক্তির সুফল-কুফলের মতো। আপনি যে প্রশ্নটা করলেন, সেটা খুব সত্যি। শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিখলে বা চর্চা করলেই যে গান গাওয়া যাবে, এমনটা নয়। যাঁরা গানের জগতে প্রতিষ্ঠিত, তাঁদের হয়তো সমস্যা হয় না। কিন্তু যাঁরা গানটা শিখে, জেনে আসছেন, অথচ নতুন, তাঁদের সমস্যা হয় বৈকি।
‘ভেড়িয়া’ তো হল… এরপর? 
অনেকগুলো কাজের কথা হয়েছে, বহু ছবি আসছেও। এখন অল্পবিস্তর আমায় ডাকা হয় কাজের জন্য। আমি তাতেই খুশি, কাজ করছি, কাজটা শিখছি।