TV9 Networks Exclusive: এক অদ্ভুত ডাক নাম আছে এস এস রাজামৌলীর; ফাঁস করলেন ‘আরআরআর’ ছবির আর্ট ডিরেক্টর সাবু সিরিল

Sabu Cyril: 'বাহুবলী' এবং 'আরআরআর' ছবিতে রাজামৌলীর আর্ট ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করেছেন সাবু সিরিল।

TV9 Networks Exclusive: এক অদ্ভুত ডাক নাম আছে এস এস রাজামৌলীর; ফাঁস করলেন 'আরআরআর' ছবির আর্ট ডিরেক্টর সাবু সিরিল
কী বললেন সাবু?
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 13, 2023 | 9:26 PM

আমি এমন মানুষ দেখেছি, যাঁরা সিনেমায় নিঃশ্বাস নেন, সিনেমাই খান এবং সিনেমাতেই ঘুমিয়ে পড়েন। কিন্তু এই ব্যক্তি পুরোপুরি সিনেমায় আসক্ত। সেভাবেই আমি তাঁকে দেখেছি। তিনি সিনেমা ছাড়া আর কোনও কিছু নিয়েই চিন্তাভাবনা করেন না।

অন্যদের সঙ্গে কাজের যা অভিজ্ঞতা হয়েছে, তাতে আমি বুঝেছি এসএস রাজামৌলীর চিন্তাভাবনা এক্কেবারে ভিন্ন। অবিশ্বাস্য অনেক কিছু পরিকল্পনা করেন তিনি। তারপর সেগুলিকে বাস্তব রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেন। সেখানেই চ্যালেঞ্জ নিয়ে ফেলেন তিনি। একজন হিরোকে সত্যি-সত্যিই ‘larger than life’ (লার্জার দ্যান লাইফ) ইমেজ দিতে পারেন রাজামৌলী। তিনি যা কিছু পরিকল্পনা করেন, একজন আর্ট ডিরেক্টর হিসেবে তা আরও বেশি বাস্তব করে তুলতে হয়। রাজামৌলী দারুণ পরিশ্রমী এক ব্যক্তি। সবকিছুর গভীরে যাওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। কোনও অভিনেতা স্বচ্ছন্দ বোধ করছেন কি না, তলোয়ার ঠিক মতো ধরে আছেন কি না, সে সবই স্বয়ং পর্যবেক্ষণ করেন রাজামৌলী। অন্য কারওর উপর দায়িত্ব দিয়ে রাখেন না। আমাদের মনে হয় এই কারণেই সমগ্র ব্রহ্মাণ্ড তাঁকে আরও উন্নত হতে সহায়তা করে।

আমার মতো এক পেশাদারের ক্ষেত্রে একটি কল্পনার জগৎকে বাস্তব রূপ দেওয়া সত্যিই চ্যালেঞ্জের বিষয়। সে দিক থেকে দেখতে গেলে, রাজামৌলির টিমের অংশ হওয়া আমার জন্য গর্বের বিষয়। রাজামৌলিকে সত্যি সব দর্শক দারুণভাবে গ্রহণ করে নিয়েছেন। স্টিভেন স্পিলবার্গ এবং জেমস ক্যামেরনও তাঁর কাজ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। তাঁরাও প্রশংসা করেছেন রাজামৌলীর। সেটা অনেক বড় বিষয়।

আমি ‘বাহুবলী’র জন্য ডাক পেয়েছিলাম রাজামৌলীর থেকে। শুরু থেকেই পরিবারের মতো হয়ে গিয়েছিলাম আমরা। সকলেই ছবি তৈরিতে মনোনিবেশ করেছিলাম আমরা। আমরা অনেক মিটিং করি নিয়ত। পার্টি করি একসঙ্গে। রাজামৌলী আমাদের সঙ্গে থাকেন সব সময়। আমার মনে হয় বাড়িতেই আছি। তাঁর পরিবারের সান্নিধ্যের কারণেই আমি হায়দরাবাদে থাকতে শুরু করি। কাজের পরিবেশ বজায় রাখতে পারেন রাজামৌলী। তাঁর সঙ্গে কাজ করলে বাড়তি চাপ মনে হয় না। ‘বাহুবলী’র দুটি ছবিতে কাজ করার পর ‘আরআরআর’-এর জন্য়েও তিনি আমাকে ডেকেছিলেন। আমাকে ডেকে আরও চ্যালেঞ্জিং কাজ দিলেন। বললেন, তিনি আমাকে বিশ্বাস করেন।

কেবল তাই-ই নয়। রাজামৌলীর মধ্যে অদ্ভুত পেশাদারিত্ব লক্ষ্য করেছি। সব সময় সকলের পাশে থাকেন তিনি। আমরা কোনওদিনও জানতে পারিনি, তিনি কখন ঘুমতেন। আমাকে বলা হয়েছিল, তিনি ভোর ০৪.৩০টের সময় ঘুম থেকে ওঠেন। আমি তাঁর আগে ঘুম থেকে উঠে সেটে পৌঁছে যেতে চেষ্টা করতাম। দেখতাম, তিনিই সকলের আগে পৌঁছে গিয়েছেন। একটা বিষয় জেনে অবাক হয়েছিলাম, কোনও অভিনেতাকে ঘোড়ায় চড়ার দৃশ্য বোঝানোর আগে, তিনি নিজে ঘোড়ায় চড়া শিখেছিলেন। এরকম আরও উদাহরণ আছে।

একটি ঘটনা আমি কিছুতেই ভুলতে পারব না। ‘বাহুবলী’র শুটিংয়ের সময় আমার জন্মদিন ছিল। আমার ভিডিয়োটাও আগে থেকে তৈরি করে রেখেছিলেন রাজামৌলী। এটা করার কোনও দরকার ছিল না। কিন্তু তিনি করেছিলেন। কেবল আমার জন্য নয়, ইউনিটের সকলের জন্যই এই ধরনের সারপ্রাইজ় রেখেছেন রাজামৌলী। প্রত্যেক মানুষের সঙ্গে সমান ব্যবহার করেন রাজামৌলী। টেকনিশিয়নদের খুব সম্মান করেন। তাঁদের দিয়ে সেরা কাজটা করিয়ে নিতে পারেন তিনি।

৮ বছরের সম্পর্ক আমার সঙ্গে রাজামৌলীর। আমি তাঁকে একজন পেশাদার হিসেবে, একজন শিল্পী হিসেবে উন্নতি করতে দেখেছি নিজ চোখে। প্রচণ্ড পরিশ্রম করেছেন রাজামৌলী। দিনের পর-দিন আরও কঠিন হয়েছে তাঁর পরিশ্রমের মাত্রা। আমি দেখেছি, জীবনে বড় কিছু অর্জন করলে মানুষ অনেক গা ছাড়া দিয়ে দেন। কিন্তু রাজামৌলী সকলের চেয়ে আলাদা মানুষ। উন্নতই রাজামৌলীর পারদর্শিতার রহস্য। আমার সঙ্গে যখন তাঁর প্রথম দেখা হয়, আমাকে একটি ১০০০ ফিট উচ্চতার ঝর্ণার ছবি দেখিয়েছিলেন। সেই সময় আমি ছবির স্কেল বুঝতে পারি। বুঝতে পারি, কী তিনি ধারণ করেছেন মস্তিষ্কে। কোনও সিন বোঝানোর আগে তিনি তা বর্ণনা করেন, তারপর নিজে কী ভাবছেন সেটাও বলে দেন। আমাদের মতামত থাকলে মন দিয়ে শোনেন, তারপর তা বাস্তবায়িত করার প্রয়াস শুরু হয়। দেখা যায়, বিষয়টা অনেক বড় হয়েছে।

আপনারা কি জানেন, রাজামৌলীর একটি ডাক নাম আছে। সেই ডাক নাম হল জাখান্না। প্রভাস, জুনিয়র এনটিআরও এই নামেই তাঁকে সম্বোধন করেন। রাজামৌলী জানিয়েছিলেন, জাখান্না নামের এক শিল্পী ছিলেন। ভাস্কর্যই ছিল তাঁর নেশা। নিজেকে আসলে মনে-মনে সেই শিল্পীই মনে করেন রাজামৌলী।

আর্ট ডিরেক্টর সাবু সিরিলয়ের বয়ানে