‘মা’ শব্দটা মধ্যেই রয়েছে সন্তানের সঙ্গে জুড়ে থাকা। সন্তানের কাছে মা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই মায়েদের কাছেও। কিন্তু মা হয়ে যাওয়ার পর বেশির ভাগ সময়ই তাঁরা সন্তানকে দিয়ে দেন। পরবর্তী সময়ে সেই সন্তান যখন নিজের জগতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন, তখন মায়েরা হয়ে পড়েন একলা। অনেক মা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। সন্তানকে আঁকড়ে ধরতে গিয়ে, কখনও কখনও তাঁদের জীবনে বোঝ হয়ে যান, বা সন্তানের থেকে দূরে সরে যান। অনেক সময় কর্মরত মায়েরা সন্তানের কথা ভেবে চাকরি ছেড়ে দেন বা পারিপার্শ্বিক চাপে চাকরি ছাড়তে বাধ্য হন। এমন মায়েরা আরও বেশি হতাশায় ভোগেন। এক সময় তাঁদের চাকরি ছাড়া নিয়ে নিজেদের উপর রাগ তৈরি হয়।
আজ মাতৃদিবস। সেলিব্রিটি থেকে সাধারণ মানুষ- এই দিনটি সকলে উদযাপন করেন নিজেদের মতো করে। মালাইকা আরোরাও করেছেন। তিনি অনেক সময়ই জানান, তাঁর মা পাশে ছিলেন বলেই তিনি আরবাজ খানের সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের পর কীভাবে নিজেকে সামলেছেন। সেই সঙ্গে তাঁর ছেলে আরহানও ছিল পাশে সব সময়।
তবে নিজের জীবন দিয়ে মালাইকা উপলব্ধি করেছেন, মা হয়ে যাওয়া মানে জীবনে দাড়ি টানা নয়, বড়জোর কমা। কারণ নিজেকে ভাল না রাখলে অন্যকে ভাল রাখা যায় না।
তাই মাতৃ দিবসে তাঁর সকল মায়েদের জন্য পরামর্শ, জীবনে নিজেকে গুরুত্ব দিতে শিখুন। নিজের জন্য সময় বের করুন। সিঙ্গল মা হওয়ার পর মালাইকার মা তাঁকে পরামর্শ দিয়েছিলেন, জীবনে তুমি যাতে খুশি থাক, তাই কর। মালাইকাও তাই বলতে চান সকলকে। তিনি অনুরাগীদের উদ্দেশ্যে একটি ভিডিয়ো বার্তা দিয়েছেন নিজের সোশ্যাল মিডিয়াতে। যেখানে তিনি নিজের জীবনের গল্প শুনিয়েছেন। কর্মরতা মা হিসেবে তিনি এক সময় খুব অপরাধবোধে ভুগতেন। তার থেকে বেরিয়ে আসতে তিনি নিয়ম করে ছেলের সঙ্গে সময় কাটাতেন। এমনকি আরবাজকেও বলা ছিল, একজনকে অন্তত আরহানে সঙ্গে থাকতে হবে, যখন তাঁর প্রয়োজন বাবা-মাকে। তিনি রোজ ছেলেকে সকালে মালায়ালম গান শোনাতেন, যে গান তাঁর মা তাঁকে শোনাতেন। স্কুলে দিয়ে আসা নিয়ে আসা করতেন। সব সময় আরহান ভাল-মন্দের দিকে নজর থাকত তীক্ষ্ণ। কিন্তু তাই বলে নিজের উপর যত্ন নেওয়া কখনও কমাননি। নিজের কাজ, বন্ধু-বান্ধব, নিজের জন্য সময় বের করা, সবই করেছেন।
এখন ছেলে বড় হয়ে গিয়েছে। আরহান সবচেয়ে ভাল বন্ধু মালাইকার। এখন সকালে গান গাওয়া হয় না নিয়ম করে, তবে রবিবার একসঙ্গে নানা পদ রান্না করেন দু’জনে। ছেলে পড়াশোনা করতে বাইরে থাকে। তাঁর বাড়ি ফাঁকা। কিন্তু তিনি একাকীত্ব অনুভব করেন না। জানিয়েছেন মালাইকা। কারণ তিনি নিজেকে দেওয়া দ্বিতীয় প্রতিজ্ঞা কখনও ভোলেননি। তাঁর একটা নিজস্ব পরিচিতি রয়েছে। সেটা তিনি সব সময় মেনে চলেন। কাজ করেন, বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটান। নিজের নিয়মে নিজস্ব জীবন কাটান। আর এটাই তিনি প্রত্যেক মহিলাদের উদ্দেশ্যে বলতে চেয়েছেন, নিজের জীবনকে ভাল রাখার দায়িত্ব নিজেরই। সন্তান হয়ে গিয়েছে মানে, সব ছেড়ে শুধু সন্তানকে আঁকড়ে বাঁচা নয়, নিজস্ব পরিচিত তৈরি করে জীবনে এগিয়ে যাওয়া।