বগটুই কাণ্ডে চুপ থেকেছিলেন বুদ্ধিজীবীদের একাংশ। হাঁসখালি কাণ্ডে যখন সারা রাজ্য তোলপাড় তখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি মন্তব্য যেন আগুনে ঘৃতাহুতি। এবার তা নিয়েই প্রকাশ্যে প্রতিবাদ পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর ওই মন্তব্য তাঁর মতে ‘অসংবেদনশীল’।
কী বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী?
হাঁসখালি-কাণ্ডে কিশোরীর ওপর নির্যাতনের ঘটনাকে ধর্ষণ বলা যায় কি না, তা নিয়ে সোমবার প্রশ্ন তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক সরকারি অনুষ্ঠান থেকে হাঁসখালি প্রসঙ্গে মুখ খুলেছিলেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী মুখ খুলতেই তীব্র বিতর্ক দেখা দিয়েছিল। তিনি বলেছিলেন, “সংবাদমাধ্যমগুলি এই ঘটনা নিয়ে বাড়াবাড়ি করছে। তারা দেখাচ্ছে ওই কিশোরী ধর্ষণের কারণে মারা গিয়েছেন। আপনার একে ধর্ষণ বলবেন? ওই মেয়েটি কী গর্ভবতী ছিল না কী এটা লাভ অ্যাফেয়ার্সের ঘটনা? তারা কি এটা তদন্ত করে দেখেছে? আমি পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছি, তারা অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে। আমাকে বলা হয়েছিল নির্যাতিতা কিশোরী ও অভিযুক্তের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল।” মুখ্যমন্ত্রীর এ হেন মন্তব্যের পরেই শুরু হয় তীব্র নিন্দা।
ঘটনায় সৃজিত মুখোপাধ্যায় তাঁর সামাজিক মাধ্যমে লেখেন, “অত্যন্ত অবমাননাকর ও অসংবেদনশীল মন্তব্য মুখ্যমন্ত্রীর তরফে। আমি বাকরুদ্ধ, অভিব্যক্তি হারিয়েছি।” সরাসরি প্রতিবাদ করায় সৃজিত যেমন নেটিজেনদের আতসকাচে প্রশংসিত হন ঠিক তেমনি নিন্দার মুখেও পড়তে হয় চুপ করে থাকা সমাজের এক বিরাট বুদ্ধিজীবী মহলকে। প্রযোজক রানা সরকার যেমন প্রকাশ্যেই লেখেন, “মুখ্যমন্ত্রীকে নিন্দে করার সাহস আমার নেই…আমি ক্ষমা চাইছি।”
প্রসঙ্গত এদিন মামলার তদন্তভার দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই-কে। মঙ্গলবার সকালেই ওই মামলার শুনানি হয়। রায়দান স্থগিত রাখা হয়েছিল। পরে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ। অবিলম্বে ওই মামলা সংক্রান্ত নথি সিবিআই আধিকারিকদের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্য পুলিশকে। পাশাপাশি পরিবারকে নিরাপত্তা দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। নদিয়ার হাঁসখালিতে ১৪ বছরের এক কিশোরীকে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। যে দিন ওই ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ, সেই রাতেই মৃত্যু হয় কিশোরীর।