বুদ্ধদেব গুহর প্রথম বই প্রকাশ করেছি: সুধাংশুশেখর দে
কলেজ স্ট্রিটে (College Street) অনেক বার আমাদের বাড়িতে এসেছেন। আমার সঙ্গে আমাদের দেশের বাড়িতে গিয়েছেন বেড়াতে। দীঘায় আমাদের হোটেলে থেকেছেন। বহুদিনের পারিবারিক সম্পর্ক।
বুদ্ধদেব গুহ (Buddhadeb Guha) চলে গেলেন। তাঁর প্রথম বই (Book) আমি প্রকাশ করেছিলাম। ১৯৭৪ থেকে বুদ্ধদেব গুহর বই প্রকাশ করে আসছি। ‘জঙ্গলমহল’ বইটা দিয়ে শুরু। তাঁর ‘কোজাগর’, বিতর্কিত বই ‘চানঘরে গান’ থেকে আরম্ভ করে ‘জঙ্গলমহল সংবাদ’। সবচেয়ে জনপ্রিয় হয়েছিল ‘চানঘরে গান’। তাঁর অসংখ্য বই প্রকাশ করেছি আমি।
আজ চলে গেলেন আমার দাদা, সাহিত্যিক বুদ্ধদেব গুহ। দুঃসংবাদ শুনে মন ভারাক্রান্ত। খুব কম বয়স থেকে তাঁর কাছে গিয়েছি। প্রথম গিয়েছিলাম ১৮ বছর বয়সে। খুব আমুদে মানুষ ছিলেন। ভাল ছবি আঁকতেন। অনেক বইয়ের প্রচ্ছদ নিজেই এঁকেছেন।
কলেজ স্ট্রিটে অনেক বার আমাদের বাড়িতে এসেছেন। আমার সঙ্গে আমাদের দেশের বাড়িতে গিয়েছেন বেড়াতে। দীঘায় আমাদের হোটেলে থেকেছেন। বহুদিনের পারিবারিক সম্পর্ক। আমার বাবা-দাদা সহ পুরো পরিবারের সঙ্গেই বুদ্ধদেব গুহর সম্পর্ক অনেক দিনের। একদিকে ছিলেন চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট। আরেক দিকে সাহিত্যিক।
বহু বইমেলায় দাদাকে নিয়ে গিয়েছি। একসঙ্গে থেকেছি। কলকাতা বইমেলায় আমাদের স্টলের সমানে এসে বসে থাকতেন। অজস্র পাঠক লাইন দিয়ে তাঁর বইয়ে সই নিত। সেইসব দিন হারিয়ে গেল ভেবে খারাপ লাগছে। কয়েক বছর আগে জ্ঞানমঞ্চে তাঁকে নিয়ে একটা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলাম। তিনি সেদিন গান গেয়েছিলেন। তাঁর কণ্ঠে গান শোনা মানে এক অভিজ্ঞতা!
অনেক সময় ঘরোয়া আড্ডায় গান গেয়ে শুনিয়েছেন। যেমন ছবি আঁকায় পারদর্শী, ছোটদের লেখা, বড়দের লেখা, রোম্যান্টিক লেখা– সব কিছুতেই তাঁর দু’হাত সমান চলত। অরণ্য নিয়ে অনেক লিখেছেন। গভীর জঙ্গল, জন্তু জানোয়ার, শিকারের কথা তাঁর লেখায় উঠে আসত। দাদামে খুব মিস করব। আরও পড়ুন: বুদ্ধদেব গুহর ছবিগুলো স্পর্শকাতর চিত্রকলা: যোগেন চৌধুরী