TV9 Bangla Exclusive: চঞ্চল চৌধুরীর কাজ সম্পর্কে আমার কোনও ধারণাই নেই: মৃণালপুত্র কুণাল সেন

Mrinal Sen Biopic-Padatik: মৃণাল সেনকে নিয়ে বায়োপিক তৈরি করছেন সৃজিত মুখোপাধ্যায়। ছবিতে মৃণাল সেনের চরিত্রে অভিনয় করছেন চঞ্চল চৌধুরী। তা নিয়ে শিকাগো থেকে TV9 বাংলাকে একান্ত সাক্ষাৎকার মৃণালপুত্র কুণাল সেনের।

TV9 Bangla Exclusive: চঞ্চল চৌধুরীর কাজ সম্পর্কে আমার কোনও ধারণাই নেই: মৃণালপুত্র কুণাল সেন
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 04, 2023 | 7:16 PM

স্নেহা সেনগুপ্ত

সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের নতুন ছবি ‘পদাতিক’। মৃণাল সেনের বায়োপিক তৈরি করছেন তিনি। সেই ছবিতে মৃণাল সেনের চরিত্রে অভিনয় করছেন চঞ্চল চৌধুরী। মৃণাল-জায়া গীতা সেনের চরিত্রে মনামী ঘোষ। চঞ্চল চৌধুরীকে বাবা মৃণাল সেন হিসেবে কতখানি মানাচ্ছে, মা গীতা সেনের জায়গায় মনামী কতখানি যথাযথ, সৃজিতের কাজ সম্পর্কে তিনি কতখানি কনফিডেন্ট—শিকাগো থেকে TV9 বাংলাকে জানালেন মৃণালপুত্র কুণাল সেন।

প্রশ্ন: আপনি শুনেছেন নিশ্চয়ই চঞ্চল চৌধুরী আপনার বাবা মৃণাল সেনের চরিত্রে অভিনয় করছেন এই বায়োপিকে?

কুণাল: হ্যাঁ, শুনেছি। তিনিই আমার বাবার চরিত্রে অভিনয় করছেন।

প্রশ্ন: কাস্টিংটা আপনার কীরকম লেগেছে?

কুণাল: চঞ্চল চৌধুরীর কাজ সম্পর্কে আমার কোনও ধারণাই নেই। এই প্রথম আমি নাম শুনেছি।

প্রশ্ন: চঞ্চল অভিনীত ‘হাওয়া’ কিংবা ‘কারাগার’ আপনার দেখা হয়নি?

কুণাল: না, আমার দেখার সৌভাগ্য় হয়নি এখনও পর্যন্ত।

প্রশ্ন: চঞ্চল চৌধুরীর কাস্টিং সম্পর্কে কী সৃজিত মুখোপাধ্যায় আপনার সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন?

কুণাল: না, আমার সঙ্গে আলোচনা করেননি সৃজিত। এটা তো পরিচালকের নিজের সিদ্ধান্ত। ছবির বিষয়ে নানা কথা বলেছি ওর সঙ্গে। মেটিরিয়াল দিয়েছি অনেক। কিন্তু এক্টর চয়েস তো পরিচালকের একান্ত নিজস্ব ব্যাপার।

প্রশ্ন: চঞ্চল চৌধুরীকে ফটোতে আপনি দেখেছেন তো?

কুণাল: হ্য়াঁ, আমি ফটো দেখেছি।

প্রশ্ন: মৃণাল সেনের চেহারার সঙ্গে মিল খুঁজে পেয়েছেন কী?

কুণাল: আমার কাছে মনে হয় না চেহারার মিলটা খুব একটা বড় বিষয়। কোনও-কোনও নির্মাতা সেই মিল রাখার চেষ্টা করেন। চেহারা মেলানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু আমার কাছে বিষয়টা অতটা বড় নয়। যে কোনও বায়োপিকই ফিকশনালাইজ়ড।

প্রশ্ন: গীতা সেন, অর্থাৎ আপনার মায়ের চরিত্রে মনামী ঘোষকে বেছে নেওয়া হয়েছে, জানেন তো?

কুণাল: সেটা এখনও পর্যন্ত আমি শুনিনি।

প্রশ্ন: মনামীকে তো আপনি দেখেছেন আগে…?

কুণাল: না, আমার মনে পড়ছে না। আসলে বাংলা ছবি আমার দেখা হয় না খুব একটা। সুতরাং, আমার ধারণা কম।

প্রশ্ন: বায়োপিকের চিত্রনাট্য নিয়ে পরিচালকের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে তো?

কুণাল: চিত্রনাট্য নিয়ে সেভাবে কথা হয়নি। কিন্তু ওকে যতখানি সম্ভব খবরাখবর দিয়েছি। নানারকম প্রশ্ন করেছে ও, আমি উত্তর দিয়েছি। প্রায়ই সকালে কোনও না-কোনও একটা প্রশ্ন পাঠায়, আমি উত্তর দিয়ে দিই। বাবা-মাকে আমি যেভাবে দেখেছি, তা নিয়ে আমার নিজের একটা লেখা আছে। সেটা ছাপা হয়নি এখনও, সেটার ম্যানুস্ক্রিপ্ট ওর সঙ্গে শেয়ার করেছি।

প্রশ্ন: ‘পদাতিক’ নিয়ে সৃজিত আপনার সঙ্গে ঠিক কতদিন ধরে আলোচনা করছেন?

কুণাল: তা-ও প্রায় বছর খানেক, বছর দেড়েক হবে।

প্রশ্ন: বাবা মৃণাল সেনের সঙ্গে আপনার বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল। একে-অপরকে ‘বন্ধু’ সম্বোধন করতেন। সেক্ষেত্রে এই বায়োপিকে আপনার চরিত্রটা থাকবে নিশ্চয়ই?

কুণাল: আমাকে তো তাই-ই বলেছে সৃজিত। বলেছে আমার চরিত্রটাও নাকি থাকবে। কিন্তু চিত্রনাট্যে কী করেছে, আমি জানি না। তবে বলেছে, আমার মতো কোনও একটা চরিত্র ছবিতে থাকবে।

প্রশ্ন: বায়োপিকে কি মৃণাল সেনের নামটাই রাখা হচ্ছে, নাকি পাল্টানো হবে?

কুণাল: এগুলো তো আইনের ব্যাপার। আমি সৃজিতকে অনুমতি দিয়েছি। নামটা ব্যবহার করতে বলেছি। কিন্তু সেটা ও করবে কি না, জানি না। অনেক সময়ই মানুষ নাম ব্যবহার করতে ভয় পায়। ঝামেলা হয়। কারণ, সত্যিকারের নাম ব্যবহার করতে চাইলে যতজনের নাম ব্যবহার করতে হয়, তাঁদের প্রত্যেকের পরিবারের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হয়। সেটা ভীষণ ঝামেলার।

প্রশ্ন: এই বায়োপিকে সত্যজিৎ রায় এবং হৃত্বিক ঘটক কতখানি থাকছেন?

কুণাল: এটা কিন্তু আমি ঠিক জানি না। সৃজিত যখন সিরিজ় হিসেবে করবে ঠিক করেছিল, তখন ২টো ভাগ ছিল। এটা সত্যজিৎ রায়কে নিয়ে এবং অন্যটি আমার বাবাকে নিয়ে। এই ২টিকে মিলিয়ে-মিশিয়ে একই সময়কার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৈরি করবে বলেছিল। তারপর তো ঠিক করল কেবলই আমার বাবার উপর করবে। তাতে ও সত্যজিৎ-মৃণালকে রাখবে কি না, আমি জানি না।

প্রশ্ন: সৃজিত মুখোপাধ্য়ায়ের কাজ নিয়ে আপনি কতখানি কনফিডেন্ট?

কুণাল: আমি ওর একটা-দু’টো ছবি দেখেছি। একটা দেখেছিলাম ও সত্যজিৎ রায়ের গল্পকে নিয়ে তৈরি করেছিল।

প্রশ্ন: ‘রে’?

কুণাল: বোধহয় ওটারই অঙ্গ।

প্রশ্ন: আর একটা কোনটা?

কুণাল: সেটা অনেকদিন আগে দেখা। এখন আমার মনেও পড়ছে না।

প্রশ্ন: ওহ্, তা হলে আপনি রাজি হলেন কেন?

কুণাল: আমি যদি অনুমতি না দিতাম, তা হলে অন্য কোনও নাম দিয়ে করতেই পারত। যে কোনও পাবলিক ফিগার, ইজ় আ পাবলিক ফিগার। বড় জোর নামটা ব্যবহার করল না। তা ছাড়া, আমি আমার বাবাকে কখনওই আমার সম্পত্তি মনে করি না। তিনি পাবলিক ফিগার। নিজেকে পাবলিকলি এক্সপোজ় করেছেন। কিছু লোক সেটার সদ্ব্যবহার করবে, কিছু লোক করবে না। সেটাই রিস্ক। আমি সেটা নিয়ে মাথা ঘামাই না।

প্রশ্ন: এবার যদি ছবিতে আপনার নিরিখে আপত্তিকর কিছু থাকে, তখন কী করবেন?

কুণাল: তখন আপনার মতো কেউ আমাকে জিজ্ঞেস করলে বলব, আমার ভাল লাগেনি। আমার সত্যিই খারাপ লাগবে, যদি দেখি তথ্যগত কোনও কোনও ভুল থাকে ছবিতে। আমি আশা করি সৃজিত সেটা করবে না। কিন্তু করলে আমার খারাপ লাগবে।

প্রশ্ন: রিলিজ়ের আগে কি সৃজিত আপনাকে ছবিটা দেখাবেন বলেছেন?

কুণাল: সেটা নিয়ে কোনও কথা হয়নি। তখন দেখালেও অনেক দেরি হয়ে যাবে।

প্রশ্ন: যদি দেখান, আপনার পরিবর্তন করতে বলার মতো জায়গা থাকবে…

কুণাল: তা থাকবে। সেটা যদি ও মনে করে, আমি খুবই খুশি হব। কিন্তু আমি সেই সিদ্ধান্ত ওর উপর চাপিয়ে দিতে চাই না।