‘পুষ্পা ২’ মুক্তি পাওয়ার আগে দেশে মুক্তি পেয়েছে পায়েল কাপাডিয়া পরিচালিত ‘অল উই ইমাজিন অ্যাজ লাইট’। সেই ছবির কলকাতা স্ক্রিনিংয়ের জন্য শহরে উপস্থিত ছিলেন পায়েল। এমনিতে শহরের সঙ্গে পায়েলের যোগ নিবিড়। তিনি বলছিলেন, “এখানে আমার বহু বন্ধু আছে। প্রায়ই আসি শহরে। আমার ঠাকুমা করাচি থেকে কলকাতায় এসেছিলেন যখন ঠাকুর্দা এখানে চাকরি পেয়েছিলেন। ঠাকুমা যেন স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছিলেন এখানে এসে। প্রথমবার শ্বশুর-শাশুড়ি ছাড়া থাকছিলেন। ঠাকুমা মেট্রো সিনেমা হলে ছবি দেখতেন। ময়দানে পিকনিক করতেন। এসব আমি অনেক শুনেছি, বড় হওয়ার সময়ে।”
সিনেমা নিয়ে পড়ার সময়ে ‘সুবর্ণরেখা’, ‘তিতাস’, ‘মেঘে ঢাকা তারা’-র মতো বিভিন্ন সিনেমা দেখেছেন পায়েল, সেটাও বলছিলেন। সত্যজিত্ রায়ের পরিচালনায় ট্রিলজি দেখেও মুগ্ধ পায়েল। ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’-র এডিটিং বা গল্প বলার ধরন তাঁর বিশেষ পছন্দের। ওই ছবিটা থেকে অনেক কিছু শিখেছেন, সে কথাও বললেন পরিচালক।
পায়েলের ছবিকে নারীদের শক্তি বৃদ্ধির সঙ্গে কোথাও মিশিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সে সম্পর্কে তাঁর ধারণা কী ? পায়েল খোলসা করলেন, “আমি একজন মহিলা। আমার উপর যা প্রভাব বিস্তার করে, তার প্রতিফলন আমার কাজেও দেখা যায়।” আমাদের সমাজে কি নারী-পুরুষের সমান অধিকারের অভাব আছে? পায়েলের উত্তর, “অবশ্যই অভাব আছে। যতক্ষণ না সেটা প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে, লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।”
এই ছবিতে বিভিন্ন মহিলা চরিত্রের বন্ধুত্বের উপর জোর দিয়েছেন পায়েল। লক্ষণীয় অস্কারে এই বছর ভারতের এন্ট্রি ‘লাপাতা লেডিজ’। পায়েলের ছবি ভারতের নির্বাচন নয়। কিরণ রাও শহরে এলেই তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, পায়েলের ছবির পরিবর্তে তাঁর ছবির অস্কারে নির্বাচন নিয়ে। এই প্রতিযোগিতাকে কীভাবে দেখছেন? পায়েলের উত্তর, ‘এমন প্রতিযোগিতার কোনও অর্থ নেই। দু’জন নারীকে লড়াইয়ের ময়দানে নিয়ে আসার কোনও অর্থ নেই। বিভিন্ন মহিলা পরিচালকদের ছবি যে নজর কাড়ছে, সেটাই প্রধান হওয়া দরকার।’
‘পুষ্পা টু’-র মতো ছবি নিয়ে যখন দেশ মেতে থাকে, তখন ইনডিপেনডেন্ট ফিল্মমেকারদের জীবন কতটা কঠিন? পায়েলের উত্তর, ‘খুব কঠিন। ছবি তৈরি করলেও ডিসট্রিবিউটার পাওয়া যায় না অনেক সময়ে, ছবির মুক্তির জন্য। তবে বড় বিনিয়োগের ছবিও ফ্লপ হয়। খুব কঠিন জার্নি। ছবি রিলিজ করাটাই প্রিভিলেজ।’