RG Kar Case: ‘ব্যক্তিগত আক্রমণ পরে করবেন’, মিছিলের ঠিক আগেই ক্ষোভ উগরে দিলেন ইমন

Iman Chakraborty: ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে সঙ্গীত শিল্পীদের পদযাত্রা। যোগ দিয়েছেন বহু শিল্পী, ইমন চক্রবর্তী থেকে শুরু করে মনোময় ভট্টাচার্য, রূপম ইসলাম থেকে শুরু করে লোপামুদ্রা মিত্র। সকলেই উপস্থিত হয়েছেন তিলোত্তমার বিচার চেয়ে প্রতিবাদের পদযাত্রায় সুর চড়াতে।

RG Kar Case: 'ব্যক্তিগত আক্রমণ পরে করবেন', মিছিলের ঠিক আগেই ক্ষোভ উগরে দিলেন ইমন
Follow Us:
| Updated on: Aug 19, 2024 | 7:53 PM

তমসো মা জ্যোতির্গময়। আরজি কর কাণ্ডের বিচার চেয়ে ১৯ অগস্ট প্রতিবাদ মিছিলে বাংলার সঙ্গীত শিল্পীরা। নব নালন্দা গোলপার্ক এই পদযাত্রায় থাকছেন অনেকেই। আর সেই খবর সকলের কাছে পৌঁছতে সকলের মতই উদ্যোগ নিয়েছিলেন ইমন চক্রবর্তী। সোশ্যাল মিডিয়ায় তা জানিয়েছিলেন। তবে তারপর থেকেই একাধিকবার কটাক্ষের মুখে পড়তে হয় তাঁকে কিংবা তাঁদের এই উদ্যোগকে। আর তা নজরে আসতেই তিনি স্পষ্ট ভাষায় লেখেন– ‘গান গাইতে গাইতে আমরা হাঁটবো …. তোমরা এস। আর যাঁরা চাইছেন না এটা হোক তাঁদের আমি অনুরোধ করবো ব্যক্তিগত আক্রমণ পরে করবেন, এখন সময় না এটা করার । সঙ্গীত জগত কখনও একত্র হয়ে কিচ্ছু করেনি। এখনও যদি আক্রমণ চলতে থাকে , তাহলে আর পারবো না। তবে আমার বিশ্বাস আপনারা , এবং আমাদের বন্ধুরা সবাই আসবেন। আসবেনই।’

তবে এখানেই থেমে থাকেননি ইমন চক্রবর্তী। কিছুক্ষণ পরেই বিস্তারিত পোস্ট করে জানিয়ে দিলেন তাঁদের দাবি কী? সোশ্যাল মিডিয়ায় দীর্ঘ পোস্টে ঠিক কী কী লেখা থাকল?

ইমনের পোস্ট–

পদযাত্রার কয়েকটি প্রস্তাব নিয়ে সহনাগরিকদের মধ্যে অসন্তোষ লক্ষ্য করা গেছে, তাই এই লেখা।

১) মোমবাতি বা ইলেকট্রিক ক্যান্ডেল ছাড়াও আসতে পারেন, অসুবিধা নেই। আমরা প্রস্তাবটি দিয়েছিলাম, কারণ কিছু সংখ্যক মোমবাতি আমরা সরবরাহ করতে পারলেও সবার জন্য দেওয়া সম্ভব হবে না। তাই, নিজেরা আনলে সুবিধা হতো। যদি না আনতে পারেন, দরকার নেই।

২) মিডিয়া বাইট-এর ব্যাপারটি একেবারেই গ্রুপের সদস্যদের জন্য ছিল। কোনও গোষ্ঠীরই অফিসিয়াল স্পোকস পার্সন অজস্র হয় না। তাতে মূল বয়ান হারিয়ে যায়। সেই কথা ভেবেই ওই কথা বলা। তবে তা আমরা প্রত্যাহার করছি। আপনার কাছে যদি সাংবাদিক বন্ধুরা আসেন, আপনি নিজের মতামত রাখতে পারেন। তবে কোন মতামতের দায় উদ্যোক্তারা নেবেন আর কোন দায় নেবেন না, তা বক্তব্য ও তা প্রকাশের ধরণ অনুযায়ী বিচার করা হবে।

৩) #জাস্টিসফরআরজিকর হ্যাশট্যাগটি আমরা সব পোস্টার ও প্ল্যাকার্ডে ব্যবহার করছি। আপনারা চাইলে সেটি ব্যবহার করতে পারেন। প্ল্যাকার্ডে নিজের পছন্দ মত গানের লাইন লিখে আনতে পারেন। তবে কোনও লাইন দেখে যদি উদ্যোক্তারা আপত্তি করেন, আশা করি সহায়তা করবেন।

৪) আমরা ভেবেছিলাম একটি মৌন পদযাত্রা করবো। শোক ও প্রতিবাদের প্রকাশ হিসেবে এই ফর্ম ঐতিহাসিকভাবেই বারবার ব্যবহৃত ও বহুলস্বীকৃত। তবে, সবার যখন আপত্তি, তখন থাক। আমরা দল বেঁধে গান গাইতে পারি, We want justice বা অন্য স্লোগানও দিতে পারি। তবে ওই, উদ্যোক্তারা আপত্তি করলে আশা করি সহায়তা করবেন।

৫) ড্রেস কোড-এর বিষয়টি থাকছে না। যে যা খুশি পরে আসতে পারেন।

৬) “তুমি রবে নীরবে হৃদয়ে মম” গানটি প্রত্যাহার করা হচ্ছে না। আমাদের মনে হয়, এই গানটি অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক ও যুক্তিযুক্ত। তিলোত্তমার স্মৃতি, ভাইরাল হয়ে যাওয়া “করুণ আঁখি” আমাদের স্মৃতিকে আহত করে প্রতিদিন। তাঁকে যেন আমরা ভুলে না যাই, এই নৃশংসতার সুবিচার না মেলা পর্যন্ত এই স্মৃতি যেন “নিশীথিনী-সম” আমাদের জাগ্রত রাখে, সেই ভাবনা থেকেই এই গান বাছা হয়েছে। এবং আমাদের মনে হয়, আমরা অযৌক্তিক নই। আপনার আপত্তি থাকলে, ওই গানের সময় নীরব থাকবেন। নীরবতার চেয়ে সঙ্গত বোধহয় আর নেই।

শেষ করেন ইমন এই বলে, ‘পরিশেষে একটাই কথা বলার। আমরা কেউ গেরুয়া, কেউ লাল, কেউ সবুজ, কেউ সাদা-নীল, কেউ আবার কোনওটাই নই। কিন্তু সঙ্গীত আমাদের হারমোনি-র শিক্ষা দেয়। সেই হারমোনি, অন্তত এই পদযাত্রায়, আমরা ক্ষুণ্ন করতে চাই না কোনও মূল্যেই। সব কিছুর পরেও আমাদের সদিচ্ছা নিয়ে যদি মনে সন্দেহ থাকে, প্লিজ, আসবেন না। কিন্তু এই বিপন্ন সময়ে আমাদের ক্রুশবিদ্ধ করতে গিয়ে মূল দাবী থেকে সরে আসবেন না, এই অনুরোধটুকু করি।’

প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে সঙ্গীত শিল্পীদের পদযাত্রা। যোগ দিয়েছেন বহু শিল্পী, ইমন চক্রবর্তী থেকে শুরু করে মনোময় ভট্টাচার্য, রূপম ইসলাম থেকে শুরু করে লোপামুদ্রা মিত্র, সকলেই উপস্থিত হয়েছেন তিলোত্তমার বিচার চেয়ে প্রতিবাদের পদযাত্রায়।