আড়চোখে টিনেজার ছেলেমেয়েদের দুষ্টুমি দেখে বেশ রাগ হয়: রুদ্রনীল ঘোষ

Feb 14, 2024 | 9:00 AM

Rudranil Ghosh: এ আগেও ছিল, আজও আছে। শুধু বদলেছে তার ধরন। পাল্টে গিয়েছে প্রেমের উপস্থাপনা, পুজোকে ঘিরে উন্মাদনার মাত্রা। সমাজ-যুগ সবটাই খুব দ্রুত পাল্টালেও সরস্বতী পুজো প্রতিটা প্রজন্মের কাছেই তার মতো করে নস্ট্যালজিয়া। অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষের কাছেও তাই এই দিনটা ভীষণ প্রাসঙ্গিক।

আড়চোখে টিনেজার ছেলেমেয়েদের দুষ্টুমি দেখে বেশ রাগ হয়: রুদ্রনীল ঘোষ

Follow Us

জয়িতা চন্দ্র

সরস্বতী পুজো মানে নিছক একটা পুজোর দিন নয়—বরং তার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকে বেড়ে ওঠার আনন্দ, প্রথম দায়িত্ব পাওয়ার আনন্দ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া। আর? আর ভিড়ের মাঝেও মনের মতো কাউকে চোখে পড়লে, কিছুক্ষণের জন্য এক অদ্ভূত ভাললাগা। এ আগেও ছিল, আজও আছে। শুধু বদলেছে তার ধরন। পাল্টে গিয়েছে প্রেমের উপস্থাপনা, পুজোকে ঘিরে উন্মাদনার মাত্রা। সমাজ-যুগ সবটাই খুব দ্রুত পাল্টালেও সরস্বতী পুজো প্রতিটা প্রজন্মের কাছেই তার মতো করে নস্ট্যালজিয়া। অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষের কাছেও তাই এই দিনটা ভীষণ প্রাসঙ্গিক। মাঝ বয়সে এসেও আজও ছোটদের প্রেম তাঁকে টানে। ছোট-ছোট ছেলেমেয়েরা যখন বাসন্তী রঙ গায়ে মেখে শহরের চেনা ছবিটা পাল্টে দেয়, তখন প্রতিটা মুহূর্ত রুদ্রনীল তারিয়ে-তারিয়ে উপভোগ করেন। TV9 বাংলাকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে রুদ্রনীল বললেন, “যে কোনও সোশ্যাল গ্যাদারিং (সামাজিক জমায়েত), আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। সে যে কোনও ছুতোয়, যে কোনও অজুহাতেই হোক না কেন।”

প্রেমের প্রথম ছিটকানিটা খুলে দিত সরস্বতী পুজো

আসলে যেটা হয়, ভ্যালেনটাইন্স ডে-টা তো সেন্ট ভ্যালেনটাইনের মৃত্যুর ঘটনাকে অতিক্রিম কমে অনেকটা সরে এসেছে, বর্তমানে তা ‘প্রেমিক-প্রেমিকা’ দিবসে পরিণত হয়েছে। কে সেন্ট ভ্যালেনটাইন? কেন? হাজার বোঝানোর পরেও দেখেছি, মানুষ সেটা শুনতে ইচ্ছুক নয়। তাঁরা এ দিন couple consolidation-এ বিশ্বাসী। এবার যেটা হয়, যে উন্মাদনাটা আজ থেকে বছর ১০-১৫ আগে ছিল, যে স্বাধীনতাটা ১০-১৫ বছর আগে এই সরস্বতী পুজোর দিনকে কেন্দ্র করে ছিল, তা আজ মিলছে না।

কারণ এই সময় তারাই তো দায়িত্ব পেতো। ঠাকুর পছন্দ করা, ঠাকুর নিয়ে আসা, ফল কাটা, সাজানো, আলপনা দেওয়া, এই যে একটা মুরুব্বিয়ানা, ‘তোমাদের পুজো তোমরা করো’, এই যে বড়দের পথ ছেড়ে দেওয়া, এখান থেকেই তো শুরু। দায়িত্ব সামলাতে গিয়ে নিজের চোখে হিরো বা হিরোইন হয়ে উঠতে শুরু করত তারা। এই সুযোগটা তো সারা বছর আর আসত না। দুর্গাপুজোয় তো জেঠু-কাকুর নজরদারি চলে। বড়দের পুজো ওটা, বড়দের দাপট। তবে সরস্বতী পুজোর পরিবেশটায় একটা অ্যাডভেঞ্চার ছিল। ছেলেরা মেয়েদের স্কুলে ঢুকতে পারে, আর মেয়েরা ছেলেদের। কোনও দারোয়ান ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বার করে দেবে না। সেই সময় হাতেগোনা কয়েকটা ফুড জয়েন্ট ছিল, সেখানে গিয়ে খাওয়া, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া, গল্প… ব্যস।

সরস্বতী পুজো উপলক্ষ্যে মেলামেশার জন্য যে ‘ভ্যালেন্টাইনিত’ হওয়া

ওই যে একটা জিনিস, যেটা পেতে গেলে দেওয়াল ভেঙে এগনোর যে মজা বা অ্যাডভেঞ্চার ছিল, সেটা এখন খুব সহজ হয়েছে। ফলত, ছেলেমেয়েদের মধ্যে যতই সাম্যের কথা আসছে, মেলামেশার ক্ষেত্রে বাধাগুলো একে-একে ভেঙে যাচ্ছে। মা-মাসিরা, এখন খুব সাধারণ জীবনেও আর্টিস্টদের মতো পরিচ্ছন্ন থাকতে পার্লারে চলে যাচ্ছেন। ফলে ওই অ্যাডভেঞ্চারটা কিন্তু হারিয়ে যাচ্ছে। সুযোগ তো রোমাঞ্চকে কমিয়ে দেয়। যেমন, কোনও জায়গায় আমরা যখন আগে ঘুরতে যেতাম, সেখানকার হয়তো একটা কী দু’টো সাদা কালো ছবি দেখতাম, আবার না-ও দেখতে পারি। ফলে সেই জায়গায় গিয়ে দারুণ রোমাঞ্চিত হতাম, কারণ বাকিটা তো আমার অদেখা। এখন তো সেই জায়গার ভ্লগ (Vlog) দেখে ফেলছি, ভিডিয়োয় হোটেল দেখে নিচ্ছি, সুযোগ-সুবিধে জেনে নিচ্ছি। আগে থেকেই পর্দা ফাঁস হয়ে যাচ্ছে, আমি বলছি না এতে খারাপ হচ্ছে। বরং সুবিধেই হচ্ছে, কিন্তু ওই যে সারপ্রাইজটা হারিয়ে যাচ্ছে। ঠিক তেমনই সরস্বতী পুজো উপলক্ষ্যে মেলামেশার করার জন্য যে ‘ভ্যালেন্টাইনিত’ হওয়া, সেটা তো আজকের সমাজে রোজ ঘটছে এই জেনারেশনের ক্ষেত্রে। যারা অ্যাডোলেসেন্স পর্যায় পেরিয়ে এই পুজোর দায়িত্ব নিচ্ছে, মেলামেশা করছে, তাদের কাছে সবটাই তো ভীষণ চেনা, ভীষণ জানা। এখন চারপাশের রেস্তোরাঁ, মিটিং পয়েন্টগুলো তো সরস্বতী পুজোর মতো নিত্যদিনের জয়েন্টে পরিণত হয়েছে। আমার মনে হয়, সরস্বতী পুজো মানে এখন, এই যে শাড়ি, পাঞ্জাবি, বাসন্তী রংটাই মূল। চোখের সামনে একটা দিন নিজেদের কাছেই ‘অন্য’ হয়ে ওঠা মাত্র।

এরা এত ক্যাবলা নয়

আমার কাছে সরস্বতী পুজো হল, যেখানে ওই অ্যাডভেঞ্চারের গন্ধটা ছিল। সেই অজুহাতটা ছিল। তখন তো সেভাবে কোয়েড স্কুল ছিল না, বালিকা-বালকরা আলাদাই পড়ত। হাতেগোনা কয়েকটা কোয়েডে যারা পড়ত, তাদের আমরা চরম ‘লাকি’ মনে করতাম। পাশাপাশি গালাগালিও দিতাম। প্রশ্ন তুলতাম, ‘তুমি এত সুখী কেন? তোমার জীবনে ঠাকুর এত সুখ দিল কেন?’ সেই যে ফ্লেভারটা মনে পড়ে বারবার। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে ওই বাসন্তী রঙের শাড়ি পরে মেয়েদের দেখি, পুজোয় তারা হপিং করছে, খাচ্ছে, গল্প করছে, আড্ডা মারছে, তখনই মনে হয়, আমাদের জেনারেশনের মতো এরা এত ক্যাবলা নয়। এরা অনেক স্মার্ট। অনেক লজিক্য়াল। সমাজের অনেক কঠিন সমস্যা, জটিলতা, বিষয়বস্তু নিয়ে এরা অনায়াসে কথা বলে থাকে।  ছোট থেকেই তাদের পরিবার সেই বোধটা তৈরি করে দেয়। আমি চাই ওরা সব আনন্দই করুক।

এখন সমাজ অনেক বেশি খোলামেলা, অনেক বেশি ‘ইয়ারি’

আজকের দিনে সমাজের অভ্যাসের মতো জামাকাপড় পরে যে প্রেম করার আনন্দ, সেখানে কোথাও একটা কিন্তু এই বাসন্তী রঙের শাড়ি-পাঞ্জাবি পরে সরস্বতী পুজো সেলিব্রেশনের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। কোথাও সংস্কারী প্রেমিক-প্রেমিকা হয়ে ওঠে তারা। আবারও বলছি, এই প্রেম যে তাদের সরস্বতী পুজোকে কেন্দ্র করে তৈরি হল, এমন নয়। এখন সমাজ অনেক বেশি খোলামেলা, অনেক বেশি ‘ইয়ারি’, অনেক বেশি বাতাস রয়েছে, সেটা দেখে হিংসে তো হয় বটেই। মনে হয় আমিও ফিরে যেতে পারতাম।

বোকা বনেছি আমি 

সরস্বতী পুজো নিয়ে স্মৃতি কার নেই। আমায় যেমন বোকা বানানো হয়েছিল, সেটা বেশ মনে পড়ে। আর মনে পড়লে আজ হাসিও পায়। হাওড়ায় কেদারনাথ ইনস্টিটিউশনে পড়তাম, তার কাছাকাছি আরেকটা বড় স্কুল ছিল, নাম ছিল তারাসুন্দরী বালিকা বিদ্যালয়। মজার বিষয় হয়, আমাদের বিশ্বাস ছিল যে, ওখানে যারাই পড়ে, ‘তারা’ই ‘সুন্দরী’। সেই জন্যই স্কুলের নাম তারাসুন্দরী। এমনই এক অ্যাডভেঞ্চারের টানে ঘটে কী, সবাই মিলে প্ল্যান করা, আমরা তারাসুন্দরীতে ঠাকুর দেখতে যাব। সেই সময় তো মোবাইল নেই, একসঙ্গে থাকার মধ্যেই যোগাযোগ হতো, দল ছাড়া হলে, যোগাযোগ বন্ধ। স্থির হল, ঠিক ১২টার সময় তারাসুন্দরীতে যাব, দাপটের সঙ্গে ঢুকব, ঠাকুর দেখব, এবং তারাও যে সুন্দরী, তা আরও একবার যাচাই করে আসব। সেই মোতাবেক, পাজামা-পাঞ্জাবি পরে যাওয়া হয়। আমি আর আমার এক বন্ধু প্রায় এক ঘণ্টা অপেক্ষা করি স্কুলের বাইরে। বাকি বন্ধুদের দেখা নেই। ভেবেছিলাম, বাকিরা ভিতরে ঢুকে গিয়েছে। তাই আমরাও সাহস করে ঢুকে গেলাম। সেই ঘটল অঘটন। ঢুকে দেখি সর্বমোট তিন পুরুষ, আমি আমার বন্ধু ও যিনি পুরোহিত, তিনি। বাকি চারপাশে সুন্দরীদের ঢল। এবার মজার কথা হল, ৪-৫টা ছেলের মধ্যে একটি মেয়ে পড়ে গেলে যতটা আওয়াজ শুনতে হয়, তার থেকে ১০ গুণ বেশি আওয়াজ শুনতে হয়, যদি ৪-৫টা মেয়ের মাঝে একটি ছেলে পড়ে যায়। ফলে ভয়ানক পরিস্থিতি তৈরি হয়। ছেড়ে দে মা কেঁদে বাচি অবস্থা, তারপর যখন বেরিয়ে আসছি, তখন দেখি রাস্তা উল্টোপিঠে দাঁড়িয়ে আমার বাকি বন্ধুরা হাসছে।

আজকের দিনে দাঁড়িয়ে যখন আমি এই গল্পটা বলছি, বর্তমান জেনারেশনের যিনি পড়ছেন বা শুনছেন, তার মনে হবে, এ আর এমন কী? কিন্তু ওই সময় দাঁড়িয়ে যখন সমাজ এক কড়া নিয়মের ঘেরাটোপে বদ্ধ, সেখানে দাঁড়িয়ে এভারেস্টে ওঠার মতোই এটা ছিল চ্যালেঞ্জের।

প্রেমটা বিরাট ইচ্ছে করত, উঁকি মারত…

সরস্বতী পুজোর সময় একটা বাড়তি প্রচেষ্টা তৈরি হয় না, এমনটা নয়। আমি আবারও বলছি যেহেতু মোবাইল, ফেসবুক, ইনস্টার যুগে যে অবারিত মাধ্যমগুলো রয়েছে, সেটা সেই পুরনো সমীকরণকে পাল্টে দিয়েছে। কোথাও কাউকে ভাল লাগল, দেখা হল, অমনি খুব সহজেই বলা যায়, ‘Can I have your number?’ ছবিতে ভাললাগা কোনও মানুষের ট্যাগ থেকে তাঁর প্রোফাইলে গিয়ে তাঁকে খুঁজে নেওয়া। তারপর অ্যাডভেঞ্চারে মেসেজ-বক্সে গিয়ে তাঁকে টেক্ট করা, তার নম্বর নেওয়ার সুযোগ কি ছিল আমাদের সময়? ফলে দেখে ওইটুকু সময়ের জন্যই যা আনন্দ নিতাম। সেটাই আমাদের জন্য অনেক পাওয়া। যাই হোক, প্রেমটা বিরাট ইচ্ছে করত, উঁকি মারত, কিন্তু আমার সমস্যা ছিল, আমার মা-বাবা দু’জনেই শিক্ষক, ফলে কাছাকাছি সমস্ত স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারাই মোটামুটি তাঁদের পরিচিত ছিলেন। এবার তাঁদের যদি শুনতে হয়: মাস্টারমশাই আপনার ছেলেকে অমুক জায়গায় দেখা গিয়েছে, আর সেটা যদি তাঁরা এসে আমায় বলতেন, ভয় তো বটেই, তার থেকেও বেশি ছিল, ভীষণ লজ্জার। ভীষণ অপমানের। সেই ভয়ে আর সাহস দেখিয়ে উঠতে পারিনি। ফলে ইচ্ছেটাকে দিনের শেষে দীর্ঘশ্বাস ঝেড়ে ফেলে দিয়ে ঘুমিয়ে পড়তে হত।

এখন সরস্বতী পুজোর প্ল্যান কী থাকে? 

এখন সরস্বতী পুজোয় ইচ্ছে অনুযায়ী কোনও প্ল্যান থাকে না। তবে প্রতিবার বহু নিমন্ত্রণ পাই। যেগুলো রক্ষা করতে যেতেই হয়। কিছু জায়গায় ভালবেসে পৌঁছে যাই, কিছু জায়গায় আবার নিয়ম রক্ষার্থে যেতে হয়। আর সেখানে গিয়েই একটু সানগ্লাসের পাশ দিয়ে আড়চোখে টিনেজার ছেলেমেয়েদের দুষ্টুমি দেখে বেশ রাগ হয়। মনে হয়, ইস… আরও এবার যদি ফিরে যেতে পারতাম। কিছু স্মৃতি তো ফিরে পেতে ইচ্ছে করেই।

প্রেমের কোনও বয়স হয় না

হম, এখনও ফিরে পাওয়াই যায়, ফিরে যাওয়াই যায়, কারণ সত্যি প্রেমের কোনও বয়স হয় না। আমার মানসিকভাবে খারাপ লাগছে বা ভাল লাগছে সেখানে কোনও কিছু পেতে চাওয়া বা সেখান থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেওয়া, এখনকার যুগে ভীষণ সহজ। কোনও কৈফিয়ত দিতে হচ্ছে না। কিন্তু যে সময়, এটা ছিল না, এই সরস্বতী পুজোটাকে দেখলেই তো সেই ফ্ল্যাসব্যাকে ফিরে যাওয়া। আজকের দিনের মতো এতটা সহজ কিছুই তো ছিল না। তখন এই প্রেম পাওয়া রকেট সায়েন্সের থেকেও কঠিন ছিল। ফলে আজও সরস্বতী পুজো যতবার আমার জীবনে আসে, ওই বাসন্তী রঙটা এক ঝটকায় আমায় ছুড়ে ফেলে দেয় সেই ক্লাস নাইন-টেনে। আমরা যারা এখনও সরস্বতী পুজোর নস্ট্যালজিয়া নিয়ে কথা বলছি, তাঁরা বুকের মধ্যে দুই সিলিন্ডার বাস্প চেপে, যে অ্যাডভেঞ্চার আমরা সাকসেস করতে পারিনি, সেই না-পাওয়া থেকে বলছি, আজকের দিনে যে ছেলে মেয়েরা সরস্বতী পুজোতে আনন্দ করছে, তাদের কাছে বাসন্তী রঙ ছাড়া রোজই ভ্যালেনটাইন্স ডে। আমরা এসব আর পেলাম কই?

 

 

Next Article
ভরসা দিয়েও মুখ ফিরিয়েছে, কেউ চায়নি ওকে! অনামিকার বড় সিদ্ধান্ত
সরস্বতী পুজোর কাঁচা হলুদ ভালবাসা যখন ভ্যালেন্টাইন্স ডে-র সেলিব্রেশনে মোড়া