কেবিসিতে ৫ কোটি জেতার পরেও নিঃস্ব হয়ে যান সুশীল কুমার, স্ত্রীর সঙ্গেও শুরু হয় চরম অশান্তি

TV9 Bangla Digital | Edited By: বিহঙ্গী বিশ্বাস

Aug 25, 2021 | 3:17 PM

গত বছর সুশীল জীবনের সেই অধ্যায় নিয়ে ফেসবুকে এক বড় পোস্ট করেছিলেন... সেই পোস্টই আরও একবার ফিরে দেখা যাক তাঁরই বয়ানে...

কেবিসিতে ৫ কোটি জেতার পরেও নিঃস্ব হয়ে যান সুশীল কুমার, স্ত্রীর সঙ্গেও শুরু হয় চরম অশান্তি
অমিতাভের সঙ্গে

Follow Us

হইচই পড়ে গিয়েছিল বছর দশেক আগে। হইচই ফেলেছিলেন অমিতাভ বচ্চন সঞ্চালিত জনপ্রিয় রিয়ালিটি শো কউন বনেগা ক্রোড়পতির সিজন ফাইভের বিজেতা বিহারের সুশীল কুমার। জিতেছিলেন ৫ কোটি টাকা। কিন্তু টাকা জেতার পরেই জীবন যেন রাতারাতি বদলে যায় তাঁর। না, সাতমহলা গাড়ি, বাড়ি কিছুই হয়নি, ক্রমশ ডুবে গিয়েছিলেন এক অন্ধকার জীবনে। যে জীবনের তল খুঁজে পাওয়া যায় না। যে জীবনের প্রতি পাতায় লুকিয়ে রয়েছে এক নিকষ কালো অন্ধকার।

গত বছর সুশীল জীবনের সেই অধ্যায় নিয়ে ফেসবুকে এক বড় পোস্ট করেছিলেন… সেই পোস্টই আরও একবার ফিরে দেখা যাক তাঁরই বয়ানে…

লোকাল সেলিব্রিটি হয়েই সর্বনাশ!

“২০১৫-১৬ সালে আমার জীবনের অন্যতম কঠিন সময় ছিল। আমি জানতাম না কী করা উচিত। আমি লোকাল সেলিব্রিটি হয়ে গিয়েছিলাম রাতারাতি। প্রতি মাসে ১০/১৫টা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে হত। আমার পড়াশোনা নষ্ট হচ্ছিল ক্রমশ। সে সময় মিডিয়াকে ভীষণ গুরুত্ব দিয়ে গ্রহণ করেছিলাম আমি। সাংবাদিকরা আমার সাক্ষাৎকার নিতেন আর আমি তাঁদের বলে দিতাম এই মুহূর্তে কী ব্যবসার কথা ভাবছি আমি। যদিও সেই ব্যবসা কিছুদিনের মধ্যেই ভেস্তে গিয়েছিল আমার”

ওঁরা আমায় ঠকিয়েছিল…

“লুকিয়ে লুকিয়ে ডোনেশন দেওয়ার নেশা লেগেছিল আমার। এমনও হয়েছে মাসে ৫০ হাজার টাকাও দান করেছি আমি। কিন্তু পরে জানতে পেরেছি যেখানে বা যাঁদেরকে দান করছি তাঁরা অনেকেই ভুয়ো। আমায় ঠকাচ্ছে। তখন বুঝিনি, তাই স্ত্রীর সঙ্গেও হামেশাই ঝামেলা হতো আমার। স্ত্রী বলত আমি ভাল-খারাপে ফারাক বুঝিনা। বলত আমি ভবিষ্যৎ নিয়েইও একেবারেই চিন্তিত নই। আমাদের খুব ঝগড়া হতো রোজ।”

সিগারেট আর মদের নেশা চেপে বসল

” বেশ কিছু থিয়েটার কর্মীর সংস্পর্শে আসি সে সময়। মিডিয়ারও কিছু ব্যক্তির সঙ্গে আলাপ হয়। যখনই ওঁদের দেখতাম মনে হতো এই ব্যাপারগুলি তো আমি কিছুই জানি না। ওঁদের সঙ্গেই মিশে সিগারেট আর মদে আসক্ত হয়ে গেলাম। বিভিন্ন আলাদা গ্রুপের সঙ্গে মদ্যপান শুতু করলাম। শুরু করলাম মিডিয়াকে খুব হাল্কা ভাবে নিতে।”


আগুনের মতো ছড়িয়ে পড়ল খবর

“একদিন এক সাংবাদিক আমায় ফোন করলেন। সাক্ষাৎকার নিচ্ছিলেন। এমন কিছু প্রশ্ন তিনি করেছিলেন যে আমি বিরক্ত হই। আমি এমনি ওকে বলে দিই আমার সব পয়সা শেষ। দুটি মাত্র গরু রয়েছে। সেই দুধ বেছেই সংসার চালাচ্ছি। তারপরে কী হয়েছিল ঘটনাটি সবাই জানেন। সবাই আমায় অনুষ্ঠানে ডাকা বন্ধ করে দিলেন। মনে হতো এরপর কী করব আমি”।

মুম্বই এলাম পরিচালক হব বলে

“কী করব ভাবতে ভাবতে মুম্বই চলে আসি। ইচ্ছে ছিল সিনেমার পরিচালক হব। সারাদিন ঘরে বসে একটার পর একটা ছবি দেখতাম। এমনও হত দিনে এক প্যাকেট সিগারেট শেষ করে দিয়েছি। এই সময় আমার স্ত্রীও আমায় ছেড়ে চলে যায়। এক প্রযোজনা সংস্থার জন্য চিত্রনাট্য লিখে পেয়েছিলাম কুড়ি হাজার টাকা।”

সব ভাল যার শেষ ভাল

“যে সময়টা মুম্বইয়ে একা ছিলাম, সেই সময়েই হঠাৎ করে অনুধাবন করতে পারি, আমি সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার পরিবর্তে তা থেকে পালাতে চাইছি। আমি মুম্বই থেকে বাড়ি ফিরে আসি। শিক্ষকতার কোর্স শুরু করি। অনুধাবন করতে পারি তুমি খুশী তখনই হবে যখন তুমি তোমার মনের কথা শুনবে। শিক্ষকতার পরীক্ষাতেও উতরে যাই। জীবন ছন্দে ফেরে।
সুশীল জানিয়েছেন মদ্যপান ও ধূমপানের নেশাও তিনি ত্যাগ করেছেন। মদ ছেড়েছেন ২০১৬ সালে আর সিগারেট ২০১৯।

তাঁর কাছে এখন প্রতিটি দিনই উদযাপনের। অন্ধকার কাটিয়ে আবারও আলোর পথে সুশীল কুমার।

Next Article