লীনা গঙ্গোপাধ্যায়
খুবই মর্মান্তিক একটা খবর। সকাল থেকে গুম মেরে আছি। ভাবতেই পারছি না এমনটা ঘটেছে। মন ভাল নেই আমাদের কারওরই। প্রাণোচ্ছল এক অভিনেতা। কাজ করতে চাইতেন। কাজে ডুবে থাকতে চাইতেন। সেই মানুষটাই আজ আমাদের মধ্যে আর নেই। সবটা শূন্য করে চলে গেলেন অনেক দূরে।
অনেক দিন থেকেই সিনেমার পর্দা থেকে সরে এসেছিলেন। কিন্তু তাতে কিছু নয়। বাংলার সিনেমার জগৎকে তিনি যা দিয়ে গিয়েছেন, আগামীতে সকলেই মনে রাখবেন। এককথায় সমৃদ্ধ করে গিয়েছেন টলিউড ইন্ডাস্ট্রিকে। আমার সিরিয়ালগুলো দিয়েই আবার নতুনভাবে কাজে ফিরেছিলেন। আমরা একসঙ্গে ৯টি ধারাবাহিকে কাজ করেছি।
পর পর কাজ করেছি। অভিষেক বলতেন, ‘তোমার সিরিয়াল, ম্যাজিক মোমেন্টস থেকে আমাকে বের করে দিও না। আমার চরিত্রটাকে মেরে ফেল না।’ দেখুন, আজ তিনি নিজেই আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। খুব হাসিখুশি একজন অভিনেতা ছিলেন অভিষেক। সকলকে মাতিয়ে রাখতেন সেটে। ভাল অভিনেতা তো ছিলেনই। ওঁর অভিনয় নিয়ে আমার আলাদা করে কিছুই বলার নেই। সব সময় ১০০ শতাংশ দিয়ে অভিনয় করতেন। জান লড়িয়ে দিতেন। কিন্তু আজ তিনি নেই। এত দূরে চলে যাবেন জীবনেও কল্পনা করতে পারিনি। এই শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়।
সাম্প্রতিককালে আমার দুটি ধারাবাহিকে অভিনয় করছিলেন। ‘খড়কুটো’তে গুনগুনের বাবা ডাক্তারবাবুর চরিত্রটায় নতুন করে প্রাণ দিয়েছিলেন। ওঁকে ভেবেই চরিত্রটা সাজিয়েছিলাম আমি। ‘মোহর’-এও হিরোর বাবার চরিত্রটিকে জনপ্রিয় করে তুলেছিলেন। সেটা বেশ মজার চরিত্র ছিল। এই শূন্য কীভাবে পূরণ হবে, জানি না। চরিত্রগুলোরই বা কী হবে, এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে তাও বলতে পারছি না। এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি।
‘খড়কুটো’র সেটে মঙ্গলবার শুটিং করে গিয়েছিলেন অভিষেক। সেদিনই ওঁর শরীরটা ভাল ছিল না। পায়ের সমস্যায় ভুগছিলেন অনেকদিন থেকে। সেদিন ঠিক মতো শুটিং করতে পারছিলেন না। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছিলাম আমরা। কিন্তু রাজি ছিলেন না। পরেরদিনও শুটিং ফ্লোরে গিয়েছিলেন। কাজ করেছেন সারাদিন। আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। ফিরলেন না, ফিরবেন না কোনওদিন। কেবল থাকবেন আমাদের স্মৃতিতে…
আরও পড়ুন: Abhishek Chatterjee Demise: ‘হয়তো ওঁর মনের মধ্যে অনেক ক্ষোভ ছিল,’ কাঁদতে-কাঁদতে কেন বললেন ঋতুপর্ণা?