Tarun Majumdar Death: ‘তুমি আবার ফিরে এসো..’, তরুণ মজুমদারের মৃত্যুতে কাঁদতে-কাঁদতে বললেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত
Rituparna Sengupta: আর কী বলেন তরুণ মজুমদারের তিনটি ব্লকবাস্টার ছবির নায়িকা ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত?
দিন কয়েক আগের কথা। তরুণ মজুমদার তখন এসএসকেএমের সিসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছিলেন। অনেকের মতো ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তরও প্রাণ কেঁদেছিল সে সময়। অনেকের মতো তিনি ভেবেছিলেন মৃত্যুকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ফিরে আসবেন তরুণ মজুমদার। TV9 বাংলাকে সে সময় ঋতুপর্ণা বলেছিলেন, “ওঁর সঙ্গে আমার ফের শুটিং ফ্লোরে দেখা হবে। আমাদের একসঙ্গে অনেক কাজ করা বাকি আছে।” আজ, সোমবার (০৪.০৭.২০২২), এসএসকেএমেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তরুণ মজুমদার। কিছুদিন আগে কথা, বলতে না পারলেও, হাসপাতালের বেডে শুয়ে তিনি একটি চিরকুটে লিখে দিয়েছিলেন ছবি তৈরি করতে চান। সেই চিরকর্মঠ, চির’তরুণ’ পরিচালক পরলোকে গমন করলেন। তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করে চোখের জল ফেললেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত।
তরুণ মজুমদারের প্রতি ঋতুপর্ণার শ্রদ্ধার্ঘ ও স্মৃতিচারণা:
“তরুণ মজুমদার নেই। এই কথাটা ভাবতেও খুব কষ্ট হচ্ছে। কারণ, তিনি ছিলেন প্রতিষ্ঠান। অনেক বড়মাপের কাজ তিনি দিয়ে গিয়েছেন আমাদের ইন্ডাস্ট্রিকে । ওঁর কীর্তিতে, ওঁর সৃষ্টিতে, ওঁর মননে আমরা সমৃদ্ধ। সারা ভারতবর্ষকে ছবির এক অন্য নিদর্শন দিয়ে গিয়েছেন তিনি। বুঝিয়েছিলেন সিনেমাকে কীভাবে নতুনভাবে আবিষ্কার করতে হয়। সম্পর্কে কীভাবে নতুন নিরিখে দেখাতে হয়, পারিবারিক গভীরতা কতটা হয়, প্রেমকে কীভাবে স্পর্শ করতে হয়, তিনি বুঝিয়েছিলেন সিনেমার মাধ্যমে। আমার মনে হয় ওঁর মতো দৃষ্টিভঙ্গী খুব কম মানুষেরই রয়েছে। এক অসম্ভব দৃঢ়চেতা মানুষ ছিলেন তরুণ মজুমদার। আমি অনেক কাছ থেকে ওঁক দেখতে পেয়েছি। সেই জন্য নিজেকে ধন্য মনে করি আমি। তরুণ মজুমদারের পরিচালনায় তিনটে ছবিতে কাজ করেছিলাম – ‘আলো’, ‘চাঁদের বাড়ি’ ও ‘ভালবাসার বাড়ি’। প্রত্যেকটি ছবি মানুষের মনের মধ্যে গভীরভাবে ছাপ ফেলে গিয়েছে।
‘আলো’ ছবিটি নজির রেখে গিয়েছে বাংলার সিনেমা জগতে। ছাপ রেখে গিয়েছে। নতুন দিক স্থাপন করেছে সিনেমার জগতে। আজও অনেকে আমাকে জিজ্ঞেস করেন, ‘আর একটা ‘আলো’ হয় না?’
অনেক, অনেক, অ-নে-এ-এ-এ-ক শিল্পীদের নিয়ে তিনি তৈরি করেছিলেন ‘চাঁদের বাড়ি’। সেই ছবিতে আমিও ছিলাম অন্যতম কাস্ট। পারিবারিক বন্ধন ও পারিবারিক প্রেম দেখিয়েছিলেন। চিনিয়েছিলেন কীভাবে তার মূল্যায়ন করতে হয়। ছবিতে সঙ্গীতের ব্যবহার করতেন অসাধারণভাবে। রবিঠাকুরের গানকে যেন অন্য মাত্র দিয়েছিলেন তিনি।
তারপর ওঁর সঙ্গে কাজ করেছিলাম ‘ভালবাসার বাড়ি’ ছবিতে। ভালবাসায় ভরা একটা সংসার দেখিয়েছিলেন সেই ছবিতে। বলেছিলেন ভিতরের গল্প। কী অসাধারণ!
এছাড়াও, আমার পছন্দের ছবির তালিকায় রয়েছে তরুণ মজুমদারের আরও অনেক ছবি। যেমন, ‘দাদার কীর্তি’, ‘ভালবাসা ভালবাসা’, ‘গণদেবতা’, ‘পলাতক’…। একসঙ্গে কত ধরনের সাবজেক্ট নিয়ে ছবি তৈরি করতেন তিনি। কতরকম বিষয় সকলকে দেখিয়েছিলেন।
আজ আমি অন্তর থেকে দুঃখিত, মর্মাহত। অনেক দূরে আছি… বিদেশে… তাই ছুটে যেতে পারলাম না। কিন্তু আমার মন ছুটে গিয়েছে তাঁর কাছে। তাঁকে প্রমাণ করে তাঁর আশীর্বাদ নিতে চাই এবং বলতে চাই ‘তুমি আবার ফিরে এসো.. আবার অনেক কিছু সৃষ্টি করো… তুমি আমাদের গর্ব… তুমি মাস্টার… তোমাকে প্রণাম…’।