Anamika Saha Exclusive: পর্দার ভিলেনকে দেখে বাস্তবের অনামিকাকে ভয় পেয়েছে কেউ? যা বললেন ‘বিন্দুমাসি’
Tollywood: একটা সময় যখন আমি ‘ঘাতক’ করেছিলাম, বিশ্বাস করবে না মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, নদীয়া... এসব জায়গায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গেলে কেউ অনামিকা সাহা, অনামিকাদি, অনামিকা কাকিমা বলেনি।
জয়িতা চন্দ্র
পজিটিভ চরিত্র দিয়ে হাতেখড়ি। একটা সময় পরিবার, সমাজের চাপে পড়ে অভিনয় থেকে সরে যাওয়া। তারপর কীভাবে ভিলেন হয়ে টলিউডে ফিরলেন অভিনেত্রী অনামিকা সাহা, TV9 বাংলাকে শোনালেন সেই কাহিনি।
নেগেটিভ চরিত্রই কি আপনার পরিচিতি বলে মনে করেন?
চেনা অনামিকা সাহা পজ়িটিভ রোলও অনেক করেছে। কিন্তু বেশি জনপ্রিয় হয়েছে নেগেটিভটাই। দর্শক সেই লুকেই আমায় দেখতে পছন্দ করেছে। বর্তমানে যে ‘এক্কাদোক্কা’ ধারাবাহিকটা করি, সেখানে তো পুরোটাই পজ়িটিভ।
ধারাবাহিকের কাছ থেকে মনের মতো চরিত্রের প্রস্তাব পাচ্ছেন?
না, না। ধারাবাহিকে আমি তেমন কোনও মনের মতো চরিত্রই পাইনি। এই প্রথম আমি পজিটিভ চরিত্র করলাম ধারাবাহিকে। তবে আমি তো ছবিও করেছি ১০০টার ওপর, যা পজিটিভ। আবার ৩০০টা নেগেটিভ। যেমন দেখুন ‘লালকুঠি’তে আমি করেছিলাম ঠাকুমার চরিত্র, যা একেবারে অন্যরকম। তারপর তো সেটা ছেড়ে দিয়েই ‘এক্কাদোক্কা’য় ঢুকলাম। এই চরিত্রটা আমার ভাল লেগেছিল। লীনা গঙ্গোপাধ্যায় খুব ভাল লেখে। ওঁর সংলাপগুলো বলতে বেশ লাগে। সেই জন্যই এই প্রস্তাবটা গ্রহণ করা। যদিও ‘লালকুঠি’র থেকে চ্যানেল আমায় কিছুতেই ছাড়বে না। বলে রেখেছে পরে ডাক আসতেও পারে।
একবার আমার মেয়েও আমায় জিজ্ঞেস করেছিল, তুমি কীভাবে এত চোখ পাকিয়ে অভিনয় করো? আমি বলেছিলাম, এর উত্তর আমার অজানা। ভগবান আমায় আশীর্বাদ করেছেন বলেই আমার বিশ্বাস।
পর্দায় এই দাপুটে অভিনেত্রীকে দেখে বাস্তবের অনামিকাকে ভয় পেয়েছে কেউ কখন?
ওরে বাবা, হ্যাঁ। বহু উদাহরণ রয়েছে আমার ঝুলিতে। একটা সময় যখন আমি ‘ঘাতক’ করেছিলাম, বিশ্বাস করবে না মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, নদীয়া… এসব জায়গায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গেলে কেউ অনামিকা সাহা, অনামিকাদি, অনামিকা কাকিমা বলেনি। সকলেই একডাকে বলে ওঠে ‘বিন্দুমাসি’ এসে গেছে। কী অসাধারণ হিট হয়েছিল ছবিটা (‘ঘাতক’)।
টলিউডের সেরা মহিলা ভিলেনের তকমা এখনও আপনার ?
হ্যাঁ, হ্যাঁ। টালিগঞ্জে একমাত্র মহিলা ভিলেন আমি। একেবারে। কখওনই কোনও মেয়ে এমনভাবে ভিলেনের চরিত্র করেনি। আমি ‘ঘাতক’-এ মূল ভিলেন ছিলাম। আমি লরি চালিয়েছি জিতকে চাপা দেব বলে। সেই চরিত্র করার পর ছবি যখন হিট হল, সে আর কী বলব আপনাকে। রজতাভ (অভিনেতা রজতাভ দত্ত)-ও করেছে প্রচুর ভিলেনের রোল। তবে তাকে নিয়ে কি এমন মাতামাতি হয়? গ্রামেগঞ্জে গেলে এগুলো শুনতে পেতাম, মায়েরা শিশুদের খাওয়ানোর সময় বলে, ‘এই খেয়ে নে, নয়তো বিন্দুমাসিকে ডেকে আনব’। একটা শিশুকে কোলে নিয়ে তার মা দাঁড়িয়ে আছে, কী সুন্দর দেখতে শিশুটিকে। আমার খুব ভাল লাগে বাচ্চা। আমি দু’হাত বাড়িয়ে বলি, ‘এসো, আমার কাছে এসো, হঠাৎ দেখি আমায় দেখে কঁকিয়ে উঠল’। (বাচ্চাটা) ওর মাকে জড়িয়ে ধরে… সে কী অবস্থা। কিছুক্ষণ পর শিশুটিকে রেখে এসে ওর মা আমায় বলে, ‘দিদি কিছু মনে করবেন না, ও ভয় পেয়ে গিয়েছে, বলছে বিন্দুমাসি আমায় মারবে।’ এখনও পর্যন্ত গ্রামে গেলে মানুষজন বলে, ‘আমরা তো বাচ্চাকে বিন্দুমাসির ছবি দেখাই। বলি, যদি বদমায়েশি করিস তবে বিন্দুমাসিকে ডেকে আনব।’
পরবর্তী অংশ আগামিকাল, বুধবার…