Aparajita Adhya: ঈশ্বরের কৃপায় সব পেলাম, তবু জীবনে একটাই অপ্রাপ্তি রয়ে গেল…: অপরাজিতা আঢ্য

Aparajita Adhya: আজকাল নাকি বেশি কথা বলেন না অপরাজিতা ‘লক্ষ্মী কাকীমা’ আঢ্য। কেন? অভিজ্ঞতা নাকি নেপথ্যে রয়েছে অন্য কোনও কারণ? এত সাফল্য, এত ভালবাসা... তা-ও কোন কারণে মন খারাপ হয় অভিনেত্রীর? সব পেয়েও কী পেলেন না ‘লক্ষ্মী কাকীমা’? এ সবের মধ্যেই সঙ্গী কাজ। কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে বহু বছর পর ‘কথামৃত’ ছবিতে অভিনয় করছেন তিনি—সব নিয়েই TV9 বাংলার সঙ্গে আনকাট অভিনেত্রী। 

Aparajita Adhya: ঈশ্বরের কৃপায় সব পেলাম, তবু জীবনে একটাই অপ্রাপ্তি রয়ে গেল...: অপরাজিতা আঢ্য
গ্র্যাফিক্স- অভিজিৎ বিশ্বাস।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 26, 2022 | 9:31 AM

বিহঙ্গী বিশ্বাস 

ছবির ট্যাগলাইন ‘কিছুটা মানিয়ে নেওয়া, কিছুটা বানিয়ে নেওয়া’— কতটা বিশ্বাসী এই ট্যাগলাইনে? 

সত্যিই তো তাই। মানিয়ে নেওয়া আর বানিয়ে নেওয়াই তো জীবন। মানিয়ে তো নিতেই হবে। সকালে উঠে ব্রাশ করতে ইচ্ছে না করলেও করতে হবে, শুটিংয়ে যেতে ইচ্ছে না করলেও তো যেতে হয়। এটাই মানিয়ে নেওয়া। আর বাদবাকি সবটাই বানিয়ে নেওয়া।

দীর্ঘ কেরিয়ারে কতটা মানিয়ে নিলেন আর কতটা বানিয়ে নিলেন?

প্রথমাংশে পুরোটাই মানিয়ে নিয়েছি, নিতে হয়েছে। আর এর পর সবটাই বানিয়ে নিয়েছি।

সেটা কীরকম? 

যখন এই ইন্ডাস্ট্রিতে আসি, কিছুই বুঝতাম না জানেন। সবটাই মানিয়ে নিয়েছি। এখানকার আদবকায়দা, হাবভাব সবই কেমন যেন অচেনা ছিল। একটা ছোট্ট উদাহরণ দিই—মনে হত আমরা তো স্কুলেও একদিন যাই না, তাই একদিন শুটিংয়ে না গেলেই বা কী হবে? আসতাম সেই হাওড়া থেকে। শুটিংয়ে হয়তো যাব না ভেবেছি। অমনি দেখি গাড়ি নিয়ে সবাই ছুটে চলে গিয়েছে। আমায় খপাৎ করে তুলে এনে শুটিংয়ে বসিয়ে দিল।

‘কথামৃত’ ছবিতে আপনি সুলেখা যার স্বামী কথা বলতে পারেন না। এত বছর পর কৌশিক-অপা জুটি, কতটা উপভোগ্য? 

কৌশিকদার সঙ্গে কাজ করা সব সময়েই পরম পাওয়া। সেটা অভিনেতা হিসেবে হোক অথবা পরিচালক হিসেবেই হোক। আমরা অভিনেতা-অভিনেত্রীরা মুখিয়ে থাকি যে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় কখন আমাদের কাজ দেবেন।

আপনার তো ভালবাসার বিয়ে। বাড়িতে কে বেশি শোনেন আর কে বেশি কথা বলেন? 

বিয়ের পর প্রথম প্রথম বরকে দেখে মনে হত এই লোকটা কি রেগে আছে? এ তো একদম কথাই বলে না। (হাসি) অন্য দিকে, আমি তো অসম্ভব কথা বলতে ভালবাসি। আমার বর কিন্তু কথা বলতে পারেন, বলেন খুব কম। ঠেলে-ঠেলে কথা বলাতে হয়। তবে যত দিন যাচ্ছে আমার মধ্যেও এক পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছি।

সেটা কীরকম? 

আমি আগে প্রচণ্ড কথা বলতাম। কিন্তু যত দিন যাচ্ছে দেখতে পাচ্ছি আমি কিন্তু তুলনামূলকভাবে কম কথাই বলি।

হ্যাঁ প্লিজ়… 

আসলে বলা হয় যে, জীবনে যখন কেউ খুব স্থির হয়ে যাবে, তখন তাঁর কথা সবার আগে কমে আসবে। যাঁরা সাধক হন, তাঁরা কিন্তু খুব কম কথা বলেন। ঠিক একই রকম… কোনও মানুষের মধ্যে যখন ওই স্থিরতা আসবে , সেই বোধ আসবে… ভাষা অনেক কমে আসবে নিজে থেকেই। তাই আগে যতটা বকবক করতাম, এখন তার সিকিভাগও করি না।

সেই বকবকে অপরাজিতাকে মিস করেন? 

(খানিক ভেবে) না, মিস করি না। আসলে কী বলুন তো, অতীতকে তো বদলানো যায় না। আমরা সবাই একটা ছোটবেলায় বাঁচি। জীবনে কিছু পেতে গেলে কিছু হারাতে হয়। যখন বড় হয়ে যাই, তখন শৈশবকে হারিয়ে ফেলি। যখন কম কথা বলি, তখন বেশি কথা বলাটাকে হারিয়ে ফেলি। সবেরই প্রয়োজন আছে। তাই মিস করার কিছু নেই।

আর অপ্রাপ্তি? 

সব হল, কিন্তু বাবা দেখে যেতে পারলেন না কিছুই… । এই কষ্ট জীবনে যাবে না।