Chanchal Chowdhury: ‘বাবা মিশে গেল আলো বাতাসে, পদ্মার জলে…’, বিনিদ্র রাত কাটছে পিতৃহারা চঞ্চলের
Chanchal Chowdhury: শত চেষ্টা করেও বাবাকে বাড়ি ফিরিয়ে আনতে পারেননি অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। দু'দিন আগেই মৃত্যুর সঙ্গে লড়াইয়ে পরাজিত হয়েছেন তাঁর বাবা অশীতিপর রাধা গোবিন্দ চৌধুরী।
শত চেষ্টা করেও বাবাকে বাড়ি ফিরিয়ে আনতে পারেননি অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। দু’দিন আগেই মৃত্যুর সঙ্গে লড়াইয়ে পরাজিত হয়েছেন তাঁর বাবা অশীতিপর রাধা গোবিন্দ চৌধুরী। সেরিব্র্যালে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। ছিলেন ভেন্টিলেশনে। শত চেষ্টা করেও বাবাকে ফিরিয়ে আনতে পারেননি চঞ্চল। বাবা তাঁর বিলীন হয়ে গিয়েছেন পদ্মাপারে। কিন্তু স্মৃতি তো বিলীন হয় না। বাবাকে নিয়ে আবেগমোথিত অভিনীত। লিখেছেন, “২৭ ডিসেম্বর রাতে,বাবা আমাদের সকলের মায়া মমতা ত্যাগ করে,ইহলোক ত্যাগ করে চলে গেল পরলোকে। গতকাল নিজগ্রাম কামারহাটের পদ্মাপাড়েই তাঁর শেষকৃত্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাবা মিশে গেলো এই গ্রামেরই আলো বাতাসে,পদ্মার জলে।সন্ধ্যায় ধর্মীয় আচার শেষে যখন নদীর পাড় থেকে বাড়ি ফিরলাম,তখন ভুলেই গেছিলাম যে,বাবাকেই তো নদীর পাড়ে রেখে এসেছি।” সারা রাত দু’চোখের পাতা এক করতে পারেননি চঞ্চল। বাবার উপস্থিতি যেন ঘর জুড়ে। অভিনেতা লিখছেন, “সারা বাড়ি ময়,ঘর ময় যেন বাবা গুটি গুটি পায়ে হেঁটে বেড়াচ্ছে। এই বুঝি কখন আমায় ডাক দিয়ে বলবে,”চঞ্চল…বাবা ঘুমাইছো??”বাবার কোন কথা আর কোন দিন কানে বাজবে না,বাবাকে দেখতে পাবো না,এগুলো কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছি না।” যে শাল বাবা গায়ে দিত, যে জায়গায় বসে বাবা রোদ পোহাত, সেই জায়গাতে বসেই চোখ ভিজে আসছে অভিনেতার। রোদের উষ্ণতা নয়, তিনি খুঁজছেন বাবার শরীরের কোমল উষ্ণতা… যা আর কোনওদিনই পাবেন না তিনি। বাবা আর ফিরবেন না তাঁর।
বাবাকে নিয়ে এর আগেও এক পোস্ট করেছিলেন চঞ্চল। সেই পোস্টে তিনি লিখেছিলেন, ““বাবা স্কুলের প্রধান শিক্ষক। স্কুলের মাঠ, গাছপালা, স্কুল, ঘর, বই পত্র, সব কিছুকেই পৈতৃক সিম্পত্তি ভাবতাম। একজন সৎ এবং স্বনামধন্য শিক্ষক হিসেবে আমার বাবাকে এলাকার সবাই একনামে চিনত,এখনও চেনে।” চঞ্চল বড় হলেন। তৈরি হল আলাদা পরিচিতি। যদিও তিনি জানিয়েছেন, যে কোনও জায়গায় গেলে দুলাল মাস্টারের সন্তান হিসেবেই পরিচিতি বেশি পেতেন তিনি। একদিন বাবাকে জিজ্ঞাসা করেন, “ছোটবেলা থেকে তোমার পরিচয়ে পরিচিত হয়ে এসেছি,এখন যখন তোমাকে কেউ চঞ্চল চৌধুরীর বাবা বলে চেনে,তোমার কেমন লাগে?”
অভিনেতার বাবা উত্তর দেননি সেদিন। শুধু চোখ ভিজে গিয়েছিল আবেগে। ছেলের জন্য গর্ব যেন সেদিন ঝরে পড়ছিল তাঁর বাবার চোখ দিয়ে। আবেগে বিহ্বল হয়ে পড়েছিলেন তিনি। আর চঞ্চলও বুঝেছিলেন তাঁর কাজে সবচেয়ে বেশি গর্ব অনুভব করেন যে মানুষটা তিনি আর কেউ নন, তাঁর বাবা। চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে গিয়েছিল তাঁরও। সেই বাবাই আর নেই। চোখ ভিজেছে অভিনেতার।