‘সাবধান বিপজ্জনক বাড়ি…’
অতঃপর ‘পালান’…
না উত্তর কলকাতার ঘিঞ্জি গলি নয়। কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের আগামী ছবির পোস্টার। অর্ধচন্দ্রাকৃতি বাড়ির জং পড়া শিকের জানলা আর ইট বের হওয়া এক বাড়ির সামনে হলুদ রঙের ‘বিপজ্জনক বোর্ড’। সামনে লাল হরফে লেখা ‘পালান’। ওইটাই ছবির নাম। আর এই ছবির মাধ্যমেই খানিক যেন ‘গঙ্গাজলে গঙ্গাপুজো ‘ পরিচালকের।
শতবর্ষে পরিচালক মৃণাল সেন। ৮২-তে তাঁরই পরিচালিত ‘ছবি ‘খারিজ’-এর অনুপ্রেরণায় এই ছবির ঘোষণা সারলেন কৌশিক। ৮২-তে মৃণাল সেন তাঁর ওই ছবিতে যাঁদের নিয়ে কাজ করেছিলেন ২২-এ কৌশিকও করলেন তাইই। কী বলা যায় সমাপতন? ছবিতে থাকবেন অঞ্জন দত্ত, মমতা শঙ্কর, শ্রীলা মজুমদার, পাওলি দাম ও যিশু সেনগুপ্ত। পাওলি ও যিশু অবশ্য ৮২-তে ছিলেন না, থাকার কথাও নয়। ছবিতে তাঁরা স্বামী-স্ত্রী। গল্পের একটা বড় অংশ আবর্তিত তাঁদের ঘিরেই। প্রযোজনার দায়িত্বে রয়েছে প্রমোদ ফিল্মস।
কান চলচ্চিত্র উৎসবে স্পেশ্যাল জুরি অ্যাওয়ার্ড পেয়েছিল খারিজ। একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের পরিচাকের রান্নাঘরে রহস্যময় মৃত্যু ও নানা ঘটনা নিয়ে সেই সব খারিজ বেশ আলোড়ন ফেলেছিল। কৌশিকও এ দিন ফিরে গেলেন খারিজ মুক্তির সেই দিনে। তাঁর কথায়, ” আমি তখন অন্য ধারার বাংলা ছবির সঙ্গে খুব একটা পরিচিত ছিলাম না। আমার কাছে নাটক মানে ছিল নহবত, হাতি মেরে সাথী দেখে কেঁদেছিলাম। সে সময়েই খারিজ দেখা। এই ছবি দেখে মনে হয়েছিল এ আমি কী দেখলাম। কী যে অনুভূতি হয়েছিল আমি বোঝাতে পারব না।” ছবির নাম পালান কেন সে প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “পালান কথাটা বহু মানুষের জীবনে বহু সতর্কতার কাজ করে, ছবিতে সে রকমই কিছু বলা হয়েছে। তাই ছবির নামও পালান।”
অঞ্জন দত্তের সঙ্গে মৃণাল সেনের পরিচিতি আজকের নয়, বহু পুরনো। কলকাতার পাঁচতারা হোটেলে তিনিও ডুব দিলেন স্মৃতিতে। ফিরে গেলেন এমন এক সময় যে সময় তিনি ভাবছেন অ্যালপ্যাচিনো হবেন, করছেন থিয়েটার, আর মৃণাল সেনের ছবি দেখেও জটিল লেগেছিল বলে আর দেখার ইচ্ছে হয়নি।
তাঁর কথায়, “আমি প্রথম যে খবরের কাগজের হয়ে কাজ করতাম সেই খবরের কাগজের হয়ে ওঁর এক সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম। সেখান থেকেই কথা হয় প্রথম। এর পর আমি চাকরি ছেড়ে দিই। হঠাৎ একদিন খবর পাই উনি আমার খোঁজ করছেন। খোঁজ পাওয়া গেল আমার। আমায় ডাকলেন। জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি সিনেমায় অভিনয় করবে? আমি বললাম, হ্যাঁ। বাড়িতে নিয়ে গেলেন। চুল টুল কেটে দিলেন। বললেন তেল মাখো। পাঞ্জাবি পরিয়ে দিলেন। এভাবেই শুরু হয়েছিল। দুজনের মারাত্মক মতবিরোধ,একটা গাছ পাকা, গাঁজাখোর ছেলে যে সে সময় ভেবে যাচ্ছে সে অ্যালপেচিনো হবে আর একজন পরিচালক যে সমানে বুঝিয়ে যাচ্ছে সবার আগে তোমাকে সিনেমা বুঝতে হবে… এভাবেই শুরু হল সবটা।”
মৃণাল সেন নেই। তাঁর কাজ রয়ে গিয়েছে। রয়ে গিয়েছেন তাঁর সঙ্গে কাজ করা মানুষেরা। সেই স্মৃতি, জীবন বোধ আর আন্তর্জাতিকতা নিয়ে কৌশিক বলবেন নতুন গল্প। যে গল্পে চরিত্ররা অঞ্জন, শ্রীলা, মমতা…ও অন্যান্যরা।
আরও পড়ুন- Shibani Dandekar: আর ‘মিসেস আখতার’ নন, বিয়ের দিন কয়েকের মধ্যেই সিদ্ধান্ত শিবানীর!
আরও পড়ুন– Ananya Panday: প্রেমিকের কথা শেষমেশ স্বীকার করেই নিলেন অনন্যা, কে সেই পুরুষ?