Darshana-Sourav Marriage: মৃত মায়ের ছবি দর্শনার বিয়ের আসরে, বাবা কীভাবে নিজেকে সামলাবেন এবার?
Darshana Sad For Father: মেয়ের বিয়ে হওয়া মানেই বাবা-মায়ের বুক খালি হয়ে যাওয়া। ২০১৬ সালে মায়ের মৃত্যুর পর বাবাকেই আঁকড়ে ধরেছিলেন অভিনেত্রী দর্শনা বণিক। কন্যার মুখের দিকে চেয়ে পথ কিছুটা চলছিলেন সেই বাবাও। সেই মেয়ে আজ তাঁকে ছেড়ে শ্বশুরবাড়ি চলে যাবেন। কীভাবে সামলাবেন সেই পিতা? কেন যে এই সময়টা আসে বাবাদের জীবনে, ভেবে চলেছেন সেই মানুষটা...
মা-মরা মেয়ে অভিনেত্রী দর্শনা বণিক। জীবনের অনেকটা সময় তিনি মায়ের ছায়া ছাড়াই কাটিয়েছেন। ২০১৬ সালে হঠাৎ না-ফেরার দেশে চলে যান দর্শনার মা পূর্বা বণিক। গল ব্লাডারে ক্যানসার ধরা পড়ে। বেশি সময় দেননি পরিবারকে। কয়েকদিন অসুস্থ থাকার পরই অঘটন ঘটে যায় বণিক পরিবারে। মা-হারা হতে হয় দর্শনা এবং তাঁর দাদা দেবপ্রিয়কে। সেই সময় তাঁকে মায়ের অভাব বুঝতে না দিয়ে আগলে রেখেছিলেন এই মানুষটাই। ১৫ ডিসেম্বর, শুক্রবার যাঁকে ছেড়ে দর্শনা বিয়ের আসনে বসতে গিয়ে খুবই মন খারাপ করেছেন। এবং দুশ্চিন্তা করেছেন, বিয়ের পর মানুষটা কীভাবে তাঁকে ছাড়া থাকবেন। তিনিও বা কীভাবে তাঁকে ছাড়া থাকবেন। সেই মানুষটা কে জানেন?
সেই মানুষটা দর্শনার বাবা তারকনাথ বণিক। ৬০ পেরিয়েছে তাঁর বয়স। এক সরকারি ব্যাঙ্কের কর্মী ছিলেন তারকবাবু। এখন অবসরপ্রাপ্ত। স্ত্রীর মৃত্যুর পর মেয়েকে আগলেই তৈরি হয়েছিল তাঁর জীবন। মেয়েও তাই। বিয়েকে কেন্দ্র করে পরিচিত সমাজে কন্যা সন্তান মা-বাবার কাছে একটু বেশিই আবেগের। TV9 বাংলার তরফে তারকবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “ডোনামা বলে ডাকি আমি ওকে। ও আমার জীবন জুড়ে রয়েছে। কন্যাদান করার সময় আমার বুকটা ফেটে যাচ্ছিল। খুব কষ্ট হচ্ছিল। ওর মা চলে যাওয়ার পর ওকে আরও আগলে ধরে ছিলাম আমি। ওকে নিয়েই কেটেছিল আমার দিন রাত।”
কথা বলতে-বলতে গলা ধরে আসছিল তারকবাবুর, “কিছুক্ষণের মধ্যে মেয়ে শ্বশুরবাড়ি চলে যাবে (শনিবার, ১৬ ডিসেম্বর প্রতিবেদকের সঙ্গে তারকবাবুর এই কথোপকথন হওয়া পর্যন্ত)।” দর্শনার দাদা হওয়ার পর আর কোনও সন্তান চাননি তারকবাবু-পূর্বাদেবী। মেয়ে চেয়েছিলেন তাঁর স্ত্রীই। তাই ১৫ ডিসেম্বর, শুক্রবার ইএম বাইপাস সংলগ্ন বিবাহ বাসরে দর্শনার বিয়ের জায়গায় বড় একটি ছবি টাঙানো হয়েছিল। তারকবাবু বললেন, “ছবি রেখেছিলাম কারণ, যাতে মনে হয় ও দেখতে সব। আমার স্ত্রী খুব চাইতেন দর্শনার বিয়েটা দেখতে। কিন্তু দেখে যেতে পারেনি। এই বিষয়টাই আমাকে করে-কুরে খাচ্ছে।”
মায়ের মৃত্যুর পর নানা সময়ে তাঁকে ঘিরে পোস্ট করেছেন দর্শনা। মা মারা যাওয়ার পর বউদি শ্রীতমা চক্রবর্তী বণিক অনেকটা কাছে চলে এসেছিলেন অভিনেত্রীর। যে কথা সব সময় বাবাকে বলতে পারতেন না তিনি, বউদিকেই বলতেন। তাঁকেও মায়ের আসনেই বসিয়েছিলেন দর্শনা। আন্তর্জাতিক মাতৃদিবসের এক পোস্টে দর্শনা বউদিকেও ‘মা’ সম্বোধন করে লিখেছিলেন, “আমার দুই মাকেই মাতৃদিবসের অনেক শুভেচ্ছা। মা তুমি আমার সঙ্গে সবসময় আছো এবং থাকবেও। একটাই পার্থক্য, তোমাকে আমি কখনও ছুঁতে পারি না। সব কিছুর জন্য অনেক ধন্যবাদ জানাতে চাই তোমাকে। জীবনের ওপারে তোমার সঙ্গে ফের দেখা হবে মা…”
বলাই বাহুল্য, বিয়ের প্রত্যেক অনুষ্ঠানেই মায়ের অনুপস্থিতি অনুভব করেছিলেন দর্শনা। সেই যন্ত্রণার কথা তিনি ব্যক্তও করেছেন নানা সংবাদ মাধ্যমে। এক সাক্ষাৎকারে বলেওছেন, বাবাকে তিনি ‘ড্যাডি কুল’ মনে করেন। হাজার কষ্ট বুকে পাথর চাপা দিয়ে রেখেছেন এই মানুষটা। বাবাই তাঁকে এবং তাঁর দাদাকে শক্ত হতে শিখিয়েছেন জীবনে। তাই বিয়েতেও মায়ের অনুপস্থিতিকে শক্ত মনে মেনে নিতে পেরেছেন দর্শনা। বাবার কারণেই বিয়ের পর বাপের বাড়ি এবং শ্বশুরবাড়িতে মিলিয়ে মিশিয়ে থাকবেন তিনি। এবং তাঁর বিয়ের পরই সোলো ট্রিপে যাবেন বাবা। তারকাবাবুও বললেন, “কিছুদিনের জন্য মিশরে ঘুরে আসব। মনটা ভাল লাগবে।”