মন খারাপ করে দেওয়া খবর। প্রয়াত হলেন অভিনেতা প্রদীপ মুখোপাধ্যায়। বেশ কিছু দিন ধরেই ফুসফুসের সংক্রমণে ভুগছিলেন তিনি। বিগত কিছু দিন ধরে অবস্থা বেশ খারাপ হয়ে যায়। তাঁকে ভর্তি করা হয় দমদম অঞ্চলের এক বেসরকারি হাসপাতালে। সারা দেহে সেপ্টিসিমিয়া হয়ে যাওয়ার কারণে ভেন্টিলেশনে স্থানান্তরিত করা হয় তাঁকে। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। এ দিন সকাল ৮টা ১৫ নাগাদ হাসপাতালেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই বর্ষীয়ান অভিনেতা। বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।
টিভিনাইন বাংলার তরফে তাঁর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা জানান, নিমতলা মহাশ্মশানে শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে প্রদীপবাবুর। পরিচালক নির্মল চক্রবর্তীর ছবি ‘দত্তা’র শুটিং করেছেন কিছুদিন আগেই। পরিবারের আক্ষেপ, মাত্র চার দিন শুটিং করেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়, “অনেক বার বারণ করেছিলাম শুটিং না করতে। কিন্তু বারবার বলেছে আমি না গেলে অনেক বড় টাকা ক্ষতি হয়ে যাবে।” তবে শরীর সঙ্গ দিল না। চলে গেলেন ‘জন অরণ্য’ ছবির সোমনাথ।
নাট্যকার ও অভিনেতা প্রদীপ মুখোপাধ্যায় অভিনয় করেছেন বেশ কিছু কালজয়ী ছবিতে। এদের মধ্যে জনঅরণ্য ছাড়াও রয়েছে বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের দূরত্ব, রয়েছে ঋতুপর্ণ ঘোষের উৎসবের মতো ছবিও। শিমলা অঞ্চলে বড় হয়ে ওঠা তাঁর। পড়াশোনা করেছিলেন উত্তর কলকাতার হেয়ার স্কুল থেকে। এরপর সিটি কলেজ থেকে স্নাতক হন তিনি। আইন নিয়েও পড়াশোনা করেছেন প্রদীপ মুখোপাধ্যায়। ১৯৭৬ সালে জনঅরণ্য ছবির জন্য সম্মানীয় ফিল্ম ফেয়ার অ্যাওয়ার্ডেরও অধিকারী হয়েছিলেন প্রদীপ বাবু। ১৯৭৭ সালে বিয়ে করেন। তাঁর দুই সন্তান রয়েছে। প্রিয়জনের এই চলে যাওয়ায় পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
শোকজ্ঞাপন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। শোকবার্তায় লেখা হয়েছে, “বিশিষ্ট অভিনেতা প্রদীপ মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। সত্যজিৎ রায়ের ‘জনঅরণ্য’, ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘উৎসব’, বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের ‘দূরত্ব ‘ প্রভৃতি চলচ্চিত্র ছাড়াও বহু নাটকে তিনি অভিনয় করেছেন। তাঁর প্রয়াণে অভিনয় জগতের অপূরণীয় ক্ষতি হল। আমি প্রদীপ মুখোপাধ্যায়ের পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।”