অগ্নিদগ্ধ মহুয়া হাসপাতালের বিছানায় মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন, শেষবার দেখতে এলেন তাপস! তারপর…
বেহলার ফ্ল্যাটে অগিদগ্ধ অভিনেত্রী মহুয়া রায়চৌধুরী। হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন তিনি। সালটা ছিল ১৯৮৫। জুলাই মাস। সংবাদপত্রের প্রথম পাতার শিরোনামই ছিল মহুয়াকে নিয়ে। মহুয়ার এই খবর পেয়ে আকাশ ভেঙে পড়েছিল টলিপাড়ায়।

‘বেহলার ফ্ল্যাটে অগিদগ্ধ অভিনেত্রী মহুয়া রায়চৌধুরী। হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন তিনি।’ সালটা ছিল ১৯৮৫। জুলাই মাস। সংবাদপত্রের প্রথম পাতার শিরোনামই ছিল মহুয়াকে নিয়ে। মহুয়ার এই খবর পেয়ে আকাশ ভেঙে পড়েছিল টলিপাড়ায়। অনুরাগীরা তো হতবাক। এমন ‘সোনার প্রতিমা’ নায়িকার সঙ্গে এ কী ঘটল! চোখে জল মহুয়ার বন্ধুবান্ধবের। এতকিছুর মাঝেও মহুয়াকে নিয়ে টলিপাড়ায় কানাঘুষো শুরু হয়েছিল। মহুয়ার অগ্নিদগ্ধ হওয়ার ঘটনা কি দুর্ঘটনা? নাকি আত্মহত্য়া? নাকি খুন করা হয়েছে তাঁকে? এমনকী, সেই সময় রটে গিয়েছিল, পারিবারিক অশান্তির জেরেই মহুয়া আত্মহত্য়া করেছিলেন। মহুয়ার মৃত্য় নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা কাটেনি। শুধুই রটেছে স্ক্য়ান্ডেল আর স্ক্য়ান্ডেল। কখনও কোনও অভিনেতার সঙ্গে নাম জড়িয়ে স্ক্যান্ডেল, তো কখনও পরিচালকের সঙ্গে। মহুয়া যেন ছিলেন গুঞ্জনপাড়ার হটকেক। কিন্তু কেউ, কখনও জানতে চাননি তাঁর মনের কথা। কেউ কখনও বুঝতে চাননি তাঁর স্ট্রাগলকে। সেই ছোট্টবেলার সোনালি কীভাবে সংসারের চালানোর দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে মহুয়া হয়ে উঠলেন, তা অন্তরালেই রয়ে গিয়েছে।
অগ্নিদগ্ধ হওয়ার পর হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে মৃত্যর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছিলেন মহুয়া। প্রথম ৭২ ঘণ্টা ছিল ক্রিটিকাল। ডাক্তাররা জানিয়ে দিয়েছিলেন খুবই কঠিন মহুয়ার এই লড়াই। তবে চিরকাল লড়াকু মেয়েটি, মৃত্যুর সঙ্গে জিততে পারেননি। চলেই যেত হল তাঁকে। সব মায়া, সব স্ক্যান্ডেলকে দূরে রেখে।
মহুয়ার জীবন নিয়ে লেখা নানা বই থেকে জানা যায়, তাঁর ছিল প্রচুর জেদ। একবার যেটা ঠিক করে নিতেন, সেটাই করতেন। জানা যায়, হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে মৃত্যুর সঙ্গে লড়তে লড়তেও, সেই জেদ দেখেছেন তাঁর কাছের মানুষরা। মহুয়ার ছিল একটা শেষ ইচ্ছা। পরিবারকে সেটা জানিয়েও ছিলেন। তাঁর কাছের মানুষজনও মহুয়ার সেই ইচ্ছা পূরণ করেছিলেন। কিন্তু সেই শেষইচ্ছার কারণেই শেষবারটি প্রিয় নায়িকাকে দেখা হয়নি তাপস পালের।
এই খবরটিও পড়ুন
সেই সময়ের এক বিনোদনমূলক ম্য়াগাজিনে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, মহুয়া চেয়েছিলেন তাঁর অগ্নিদগ্ধ চেহারা যেন কেউ না দেখেন। তাই পরিবারের লোক ছাড়া হাসপাতালের ঘরে কারও ঢোকা নিষেধ ছিল। সেই সময় মহুয়া ও তাপস পালের একের পর এক ছবি সুপারহিট। ফিল্মবোদ্ধারা মনে করতেন মহুয়া-তাপস জুটি টলিউডে রেকর্ড সৃষ্টি করবে। কিন্তু মহুয়ার এমন পরিণতিতে তাল কাটল। তাপস পালও মহুয়াকে দেখতে গিয়েছিলেন। বিছানায় শুয়ে মহুয়া সেটা জানতেও পেরেছিলেন। কিন্তু প্রিয় নায়িকাকে শেষদেখা হয়নি নায়কের। জানা যায়, ক্যালকাটা হাসপাতালের সামনে অনেকক্ষণ অপেক্ষাও করছিলেন তাপস। তারপর এল সেই দিন। ২২ জুলাই। সালটা ১৯৮৫। সবাইকে কাঁদিয়ে চলে গেলেন টলিউডের ‘সোনার প্রতিমা’ মহুয়া।





