তড়িঘড়ি লক্ষ্মী পুজোর আয়োজন, ছাদে কী এমন দেখেন উত্তম কুমার?
সুন্দরী গৃহলক্ষ্মী গৌরী দেবীর মুখের আদলেই দেবীর মুখ নির্মাণের নির্দেশ দেন উত্তম কুমার। শুরু হয় জাঁকজমকের লক্ষ্মী বন্দনা। দেবীকে নিবেদন করার জন্য দোকান থেকে কিনে আনা মিষ্টান্ন না-পসন্দ ছিল উত্তমের। নিজের বাড়িতে ময়রা ডেকে ভিয়েন বসাতেন মহানায়ক। সেই ভিয়েনে তৈরি হতো গরম গরম পান্তুয়া-সহ আরও নানা উপাদেয় মিষ্টি।

স্টুডিয়োপাড়ায় মহানায়কউত্তম কুমারের লক্ষ্মীপুজো নিয়ে উৎসাহ উত্তেজনা চিরকালের। অভিনেতা-অভিনেত্রী থেকে কলাকুশলী, অতিথির তালিকা থেকে বাদ যেতেন না কেউই। এক কথায় চাঁদের হাট বসত ভবানীপুরের এই প্রাসাদে। কিন্তু সে সময় মূলত কোজাগরী লক্ষ্মী পূজা করতেন পূর্ববঙ্গের হিন্দু পরিবারগুলিই। তাহলে পশ্চিমবঙ্গীয় চাটুজ্যে পরিবারে হঠাৎ কেন কোজাগরী লক্ষ্মী পূজার আয়োজন করা হল? এর পিছনে রয়েছে স্বয়ং উত্তম কুমারের জীবনের এক দৈব কাহিনি।
তখন উত্তম কুমার বিনোদন জগতে পা রেখেছেন। বেশ নাম-ডাকও হতে শুরু করেছে। এমনই সময় এক শরৎ-বিকালে ভবানীপুরের বাড়ির ছাদে ঘুরছিলেন মহানায়ক। অন্যমনস্ক উত্তম এমন সময় হঠাৎ দেখেন একটি বাচ্চা মেয়ে পা ঝুলিয়ে ছাদের কিনারে বসে রয়েছে। কিন্তু বাচ্ছা মেয়ে কোত্থেকে এল! বাড়িতে সে সময় বালিকা বলতে একমাত্র তাঁর ভাইঝি রত্না। তবে কি সেই এমন ঝুঁকি নিয়ে পা ঝুলিয়ে বসে রয়েছে! সর্বনাশ কাণ্ড! এরপরই রত্নার ঘোঁজ করেন জ্যেঠামশাই উত্তমকুমার। জানতে পারেন, না সে তো ঘরে ঘুমাচ্ছে। তাহলে? খটকা মনে থেকেই যায়।
এরপর আরেক কাণ্ড। কোজাগরীর দু’দিন আগে থেকেই কোথা থেকে যেন একটা লক্ষ্মী পেঁচা এসে হাজির হয় ভবানীপুরের ওই বাড়িতে। এরপর আর মহানায়কের বিষয়টি বুঝতে সময় লাগেনি যে ছাদের সেই বালিকা আসলে কে। তিনি নিশ্চিত হয়ে যান স্বয়ং দেবী লক্ষ্মীই এসেছিলেন তাঁর সামনে। মহানায়কের কাছে বার্তা আরও সুস্পষ্ট করতে বাহনকে পাঠিয়ে সরাসরি বার্তা দিচ্ছেন দেবী। ব্যস। এরপরই শুরু লক্ষ্মী আরাধনা।
সুন্দরী গৃহলক্ষ্মী গৌরী দেবীর মুখের আদলেই দেবীর মুখ নির্মাণের নির্দেশ দেন উত্তম কুমার। শুরু হয় জাঁকজমকের লক্ষ্মী বন্দনা। দেবীকে নিবেদন করার জন্য দোকান থেকে কিনে আনা মিষ্টান্ন না-পসন্দ ছিল উত্তমের। নিজের বাড়িতে ময়রা ডেকে ভিয়েন বসাতেন মহানায়ক। সেই ভিয়েনে তৈরি হতো গরম গরম পান্তুয়া-সহ আরও নানা উপাদেয় মিষ্টি। ভোগ-নৈবেদ্য সাজিয়ে দেবীর আরাধনা করতেন ব্রাহ্মণ-সন্তান স্বয়ং মহানায়ক।
