হেপাটাইটিস হল এক ধরণের ভাইরাস, যার মূল প্রভাব পড়ে আমাদের লিভারের উপরেই। লিভার আমাদের শরীরের খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। তাই লিভারের কোনও রকম ক্ষতি হলে দ্রুত স্বাস্থ্যের অবনতি হতে শুরু করে। কারণ লিভার কাজ না করলে কোনও খাবার হজম হবে না, কাজ করবে না শরীরের গুরুত্বপূর্ণ উৎসেচকগুলোও। শরীরের যাবতীয় পুষ্টি শোষিত হয় এই লিভারের মাধ্যমেই। সঙ্গে রক্তে ফিল্টার করার কাজ এবং শরীরের ডিটক্সিফিকেশনেও সাহায্য করে লিভার। অতিরিক্ত পরিমাণ অ্যালকোহল খেলে, ধূমপান করলে এবং অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রা থেকে প্রভাব পড়ে শরীরের উপর। এছাড়াও যাঁরা নিয়মিত ভাবে শুক্রাণু বর্ধক ওষুধ খান, অন্য কোনও রকম ওষুধ খান সেখান থেকেও কিন্তু হতে পারে লিভারের প্রদাহ। যে অবস্থাকে চিকিৎসা পরিভাষায় বলা হয় হেপাটাইটিস। হেপাটাইটিসের বিভিন্ন ধরণ হয়।
HIV-এর মতো হেপাটাইটিসও রক্তের মাধ্যমে ছড়ায়। বাড়ে ঝুঁকিও। তাই কোনও ইঞ্জেকশন বা সিরিঞ্জ যদি হেপাটাইটিস রোগীর শরীরে ব্যবহার করা হয় তা আগে ভাল করে জীবাণুমুক্ত করে নেওয়া প্রয়োজন। কারণ নইলে সেই সিরিঞ্জের মাধ্যমে অন্য রোগীর শরীরেও ছড়াতে পারে হেপাটাইটিস। তাই এমন পরিস্থিতি হলে খুব ভাল করে খেয়াল রাখুন যাতে সিরিঞ্জ ঠিক মতো জীবাণুমুক্ত করা হয়। সেই সঙ্গে একই সিরিঞ্জ একবারের বেশি কোনও মতেই ব্যবহার করবেন না। সেই সঙ্গে মেনে চলুন বেশ কিছু নিয়ম-
সুরক্ষা ছাড়া সহবাস নয়- প্রচুর মানুষের কাছেই এটা অজানা যে অসুরক্ষিত যৌনতা থেকেও হতে পারে হেপাটাইটিসের সমস্যা। দূষিত খাবার কিংবা অন্যের ব্যবহার করা সুঁচ থেকে সহজেই ছড়িয়ে পড়তে পারে হেপাটাইটিস। যৌন রোগ কিন্তু লিভারেও হতে পারে। তাই যৌনমিলনের সময় সুরক্ষা অবশ্যই ব্যবহার করুন।
নিজের শেভিং কিট আলাদা রাখুন- অন্যের ব্যবহার করা ব্লেড, রেজার একেবারেই ব্যবহার করবেন না। অন্যের ব্যবহার করা সুঁচ, সিরিঞ্জ থেকেও ছড়াতে পারে হেপাটাইটিসের জীবাণু। একই সঙ্গে বেড়ে যায় এইচআইভি-এর ঝুঁকিও।
ট্যাটু করার সময় সতর্ক থাকুন– ট্যাটু করতে অনেকেই ভালবাসেন। যেহেতু তা ছুঁচের মাধ্যমে করা হয় তাতে রোগ সংক্রমণের সম্ভাবনা অনেক বেশি থেকে যায়। তাই ট্যাটু করার আগে ঠিকমত সব যন্ত্রপাতি জীবাণুমুক্ত করে নেওয়া প্রয়োজন। একই সুঁচ কোনও ভাবেই ব্যবহার করবেন না। কারণ এতে HIV ও হেপাটাইটিস- দুটো রোগেরই সংক্রমণ বাড়ে।
টিকাকরণ- হেপাটাইটিস রোধ করার সবথেকে বড় অস্ত্র হল টিকাকরণ। যদিও সব হেপাটাইটিস রোধের টিকা পাওয়া যায় না। টিকা একমাত্র হেপাটাইটিস বি এর ক্ষেত্রেই রয়েছে। যে কোনও বয়সে নেওয়া যায় এই টিকা। এছাড়াও টেস্ট করাতে ভুলবেন না। কোনও রকম সন্দেহ হলে রক্তপরীক্ষা অবশ্যই করান।