ঘরোয়া আড্ডায় সকলের মাঝে বসে রয়েছেন, কিংবা দাঁড়িয়ে রয়েছেন বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষারতদের সঙ্গে। হঠাৎ ছেঁকে ধরল মশার (Mosquitoes) দল। সুস্থির হয়ে বসা বা দাঁড়ানো দূরে থাক, আপনি তখন ছুটতে পারলে বাঁচেন! রক্তপিপাসু মশার দল তখন শুঙ্গে শান দিচ্ছে আর তেড়ে আসছে। ব্যাপারখানা এমন যেন বাকি সকলের রক্তে চিরতা পাতার রস মেশানো রয়েছে আর আপনার রক্তে নুন-লেবু সহযোগে চিনি! আর এমন ঘটনা একবার নয়। ঘটে বার বার। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এমন ঘটনার পিছনে রয়েছে আপনার রক্তের (Blood) বিশেষ বৈশিষ্ট্য। সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে আরও কিছু বিষয়। তার ফলে অন্যদের তুলনায় মশারা আপনার দিকে বেশি আকর্ষিত হয়। কেন মশারা (Mosquitoes Bits) বেছে বেছে বিশেষ কিছু ব্যক্তিকে কামড়ায়? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হয়েছে একাধিক স্টাডি (Studies)। সেইসব স্টাডির ফলাফল জানলে চমকে উঠবেন।
গায়ের গন্ধ: আমাদের ত্বক থেকে ঘাম বেরয়। আর ঘামের মধ্যে বিশেষ কিছু উপাদান উপস্থিত থাকে যার ফলে গায়ে বিশেষ গন্ধের সৃষ্টি হয়। কী কী উপাদান? গবেষকদের মতে ল্যাকটিক অ্যাসিড এবং অ্যামোনিয়া হল দেহের গন্ধ তৈরির প্রধান উপাদান। এছাড়া বিজ্ঞানীদের মতে গায়ের গন্ধের বিভিন্নতার পিছনে দায়ী থাকতে পারে জিন এবং ত্বকে উপস্থিত বিশেষ ধরনের ব্যাকটেরিয়া। আলাদা আলাদা লোকের শরীরে ভিন্ন ধরনের অণুজীব উপস্থিত থাকে। কিছু অণুজীবের উপস্থিতি মশাদের কয়েকজন মানুষের প্রতি আকর্ষণ তৈরি করে। আবার কিছু অণুজীব বিপরীত কাজ করে। এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, অবিকল যমজের হাত থেকে বেরনো গন্ধ মশাদের বেশি আকর্ষিত করে।
রং: সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে মশারা কালো রঙের প্রতি বেশি আকর্ষিত হয়। অতএব কোনও ব্যক্তি কালো রঙের পোশাক পরলে তার প্রতি মশারা বেশি আকর্ষিত হবে তা বলাই বাহুল্য।
কার্বন ডাই অক্সাইড: পরিবেশে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিবর্তন বুঝতে পারে মশারা। ফলে কোনও ব্যক্তির দেহ থেকে কার্বন ডাইঅক্সাইড বেরলে মশারা সতর্ক হয়ে যায় যে কাছাকাছি নিশ্চয় একজন রক্তদাতা রয়েছে!
তাপ: মানব শরীর থেকে তাপ নির্গত হয়। উষ্ণতা মশাদের আকৃষ্ট করে।
অ্যালকোহল: গবেষণা অনুসারে যে সকল ব্যক্তি বেশি মাত্রায় বিয়ার পান করেন, অন্যদের তুলনায় তাদের মশা বেশি কামড়ায়।
প্রেগন্যান্সি: সন্তানসম্ভবা মহিলাদের মশা বেশি কামড়ায়। কারণ অন্তসত্ত্বাদের শরীরের তাপমাত্রা বেশি থাকে। এছাড়া তাদের দেহ থেকে কার্বন ডাই অক্সাইডও বেশি বেরয়।
শরীরের কোন অংশে মশা বেশি কামড়ায়?
খোলা ত্বক দেখলেই মশা সেখানে কামড়াতে পারে। মোট কথা শরীরের যে কোনও অনাবৃত অংশে বসে রক্ত চুষতে পারে মশা। তবে শরীরের অন্যান্য অংশের তুলনায় হাত ও পায়ের তাপমাত্রা বেশি থাকে। তাই সেখানেই বেশি মাত্রায় মশা বসতে দেখা যায়।