খাবার খাওয়ার পর অনেকেরই পেট থেকে গুড় গুড় শব্দ হয়। ডাক্তারি পরিভাষায় একে বলা হয় পেটের গর্জন। অধিকাংশের ধারণা পেট খালি হয়ে গেলে এই শব্দ হয়। আবার খাবার খাওয়ার পরও এই শব্দ হওয়া স্বাভাবিক। কারণ খাবার যখন অন্ত্রের মাধ্যমে যায় তখন পেশীর সংকোচন এবং পরিপাকতন্ত্রে গ্যাস তৈরি হওয়ার কারণে এমন শব্দ হতে পারে। যদি প্রায়শই এই সমস্যা হয় তাহলে সাবধান। ফেলে না রেখে দ্রুত চিকিৎসকেসেখান র পরামর্শ নিন। নইলে পরবর্তীতে অন্ত্র এবং পরিপাকতন্ত্রে প্রচুরপ্রভাব পড়ে। ডায়াটেসিয়ানরা বলছে এই রকম পেট গুড়গুড় করলে প্রাথমিক ভাবে তা পেটের সমস্যা বলেই ধরে নেওয়া হয়। আর তাই পেটের সমস্যা এড়াতে প্রথম থেকেই বেশ কিছু সতর্কতা মেনে চলতে হবে। এছাড়াও এই সব ভুলের জন্যেও কিন্তু পেট গুড়গুড় করতে পারে।
কোনএ তরল খাবার যদি তাড়াহুড়ো করে খাওয়া হয় তাহলে সেখান থেকে হতে পারে সমস্যা। কোল্ড ড্রিংর বেশি খেলেও সেখান থেকে হতে পারে সমস্যা। কারণ অধিকাংশ পানীয়ের মধ্যে কার্বনেট এবং সুগারের পরিমাণ বেশি থাকে। এর কারণে পেটে বুদবুদ বেশি হয়। আর খাবারের সঙ্গে যাঁদের জল খাওয়া অভ্যাস এমনটা কিন্তু হতে পারে তাঁদের সঙ্গেও। খাবারের সঙ্গে জল না খেয়ে সারাদিনে অল্প অল্প করে জল খান।
আর এভাবে পেটে বুদবুদ হলে থেকে যায় অ্যাসিড রিফ্লাক্সের সমস্যাও। অঅ্যাসিড রিফ্লাক্সের সমস্যা হলে হজম একেবারেই হতে চায় না। খাবার পাকস্থলী থেকে খাদ্যনালীতে ফিরে আসতে শুরু করলে তখনই হয় এই সমস্যা। এর ফলে মুখে টকভাব, বদহজম, বমি, পেটেজ্বালা-এইসব সমস্যাই হয়। তবে কারণ খুঁজে আগে চিকিৎসা শুরু করা জরুরি।
গ্যাস্ট্রোপেরোসিস বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হলেও এমনটা হয়। গ্যাস হলে ছোট ছোট অন্ত্রে খাবার চলাচল অনেক বেশি ধীর হয়ে যায়। পেটে বা অন্ত্রে কোনও বাধা থাকলে সেখান থেকেও একাধিক সমস্যা আসে।
অন্ত্রের মধ্যে দিয়ে খাবার গেলে যদি ব্যথা হয় সেখান থেকেও পেট গুড়গুড় করতে পারে। অন্ত্রের মাধ্যমে যা শোষিত হয় না তা পরিপাক তন্ত্রে চলে আসে এবং সেখান থেকে মল হিসাবে বাইরে বেরিয়ে আসে।
যদি পেটে সব সময় এই গুড়গুড় আওয়াজ চলে থাকে তাহলে হেলাফেলা করে প্রথমেই চিকিৎসকের কাছে যান। সারাদিনে একবার বেশি জল না খ্য়ে অল্প অল্প করে বারেবারে খান। পেট পুরো খালি কখনই রাখবেন না। সব খাবার খুব ভাল করে চিবিয়ে খাবেন। কোনও কিছুই গিলে খাওয়া চলবে না। টক, অ্যালকোহল, ধূমপান এসব একেবারে এড়িয়ে চলতে হবে। যে সব খাবারে গ্যাস হয় সেই সব খাবার একেবারেই বাদ দিন রোজের তালিকা থেকে। রোজ কিছুক্ষণ শরীরচর্চা করতেই হবে।