বিশ্বজুড়েই কমতে শুরু করেছে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা। ইতিমধ্যে বেশ কিছু জায়গায় কোভিড বিধিও শিথিল হতে শুরু করেছে। ভারতেও কয়েক সপ্তাহধরে নিম্নগামী কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা। যে কারণে আবারও আগের ছন্দে ফেরার চেষ্টা চালাচ্ছে প্রতিটি দেশ। অফিস, স্কুল খুলতে শুরু করেছে। পর্যটকদের জন্য মিলতে শুরু করেছে অনুমতিপত্র। তবে এর মধ্যেই কোভিড ভাইরাসের নতুন একটি রূপ সামনে এসেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মতে নতুন এই ভ্যারিয়েন্ট XE-ওমিক্রবের তুলনায় অনেক বেশি সংক্রমণযোগ্য। এখনও পর্যন্ত কোভিডের যে কয়েকটি ভ্যারিয়েন্টের হদিশ মিলেছে তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংক্রামক কোভিডের এই নতুন ভ্যারিয়েন্ট। সেই সঙ্গে এই ভ্যারিয়েন্ট তুলনায় জটিল হতে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। ওমিক্রনের সংক্রমণ খুব অল্প সময়ের মধ্যেই কোভিডের তৃতীয় তরঙ্গে এসে পৌঁছেছিল। কিন্তু ওমিক্রনের সংক্রমণের হার বেশি থাকলেও হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা করাতে হয়েছে এরকম পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। সম্প্রতি এই COVID XE- ভ্যারিয়েন্টটিই রয়েছে গবেষকদের চর্চার কেন্দ্রে। এই নতুন ভ্যারিয়েন্ট বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞরা কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন-
*নতুন এই ভ্যারিয়েন্টকে রিকম্বিন্যান্ট (XE is a recombinant of Omicron BA.1 and BA.2) বলা হয়েছে। তবে এই রিকম্বিন্যান্টের বিষয়ে কিন্তু এর আগেও সতর্ক করেছে WHO। এর আগে ফ্লোরোনা এবং ডেল্টাক্রোন-সহ কোভিড ভাইরাসের বেশ কয়েকটি রিকম্বিন্যান্ট চিহ্নিত হয়েছে। আর এই XE-ভ্যারিয়েন্টটি হল ওমিক্রন BA1 এবং BA2 এর রিকম্বিন্যান্ট।
*ভাইরাল স্ট্রেনের মধ্যে রিকম্বিন্যান্ট নতুন কোনও ঘটনা নয়। তবে এই রিকম্বিন্যান্ট তখনই হয় যখন এক বা একাধিক ব্যক্তির মধ্যে সংক্রমণ ঘটে। সেই সঙ্গে জেনেটির উপাদানের মধ্যেও কিন্তু সংমিশ্রণ ঘটে। অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টের মতই কোভিডের এই নতুন ভ্যারিয়েন্টও সংক্রামক। তবে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ক্ষমতা বা মৃত্যুহার কতটা সে বিষয়ে এখনও স্পষ্ট করে কিছু জানা যায়নি। এখনও পর্যন্ত ইংল্যান্ডে এই XE-ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হয়েছে এমন ৬৩৭টি কেস শনাক্ত হয়েছে। আর নতুন এই ভ্যারিয়েন্ট কিন্তু ইংল্যান্ডে প্রথম শনাক্ত হয়েছিল গত বছর অক্টোবরে। এরপর নতুন আক্রান্তের খোঁজ মেলে এই বছরের ২৫ মার্চ। তবে এই ভ্যারিয়েন্টের সংক্রামক ক্ষমতা, তীব্রতা, বা ভ্যাকসিন এই ভ্যারিয়েন্ট রোধে কতটা কার্যকরী সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনও প্রমাণ হাতে আসেনি। তবে হু-এর তরফে এটুকু জানানো হয়েছে যে এই ভ্যারিয়েন্টও সংক্রমণযোগ্য।
*রিপোর্ট অনুযায়ী এই ই XE-ভ্যারিয়েন্টকে অনেক বিশেষজ্ঞই অন্যন্ত সংক্রামক বলে দাবি করেছেন। ওমিক্রনের তুলনায় তা প্রায় ১০ গুণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। এর আগে ওমিক্রনের সংক্রমণ ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি ছিল। যে কারণে বিশ্বজুড়েই তা সুনামির আকারে ছড়িয়ে পড়েছিল। তবে মনে করা হচ্ছে, নতুন এই ভ্যারিয়েন্টের সংক্রামক ক্ষমতা আরও বেশি। তবে এখনও পর্যন্ত পাওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী লন্ডনেই ৬৩৭ টি কেস শনাক্ত হয়েছে। তবে এই রিকম্বিন্যান্টে আক্রান্তের সংখ্যা তুলনায় কম। এর আগে ডেল্টা ও ওমিক্রনের রিকম্বিন্যান্টে আক্রান্তের সংখ্যা তেমন বেশি ছিল না। ফ্রান্সে ৪৯ জনের শরীরে তা ধরা পড়েছিল। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে কিছু আক্রান্তের হদিশ মিললেও বর্তমানে লন্ডনে এই নতুন ভ্যারিয়েন্টে কোনও আক্রান্তের হদিশ মেলেনি। এমনটাই জানানো হয়েছে রিপোর্টে।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
আরও পড়ুন: No-Mask Anxiety: শিথিল হচ্ছে COVID বিধিনিষেধ, মাস্ক-হীন পরিবেশে কতটা বাড়ছে উদ্বেগ?