আমাদের শরীরের প্রতিটি কোষে অক্সিজেন পৌঁছে দেওয়ার কাজ করে ফুসফুস। ফুসফুস শ্বাসযন্ত্রের প্রধান অংশ। ফুসফুসের দুপাশে বাতাসভরা থলি থাকে, যা অ্যালভিওলাই নামে পরিচিত। আমাদের সুস্থ থাকার জন্য এবং বেঁচে থাকতে ফুসফুস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে বায়ুদূষণ আগের থেকে অনেকটাই বেড়েছে। এছাড়াও ধূমপায়ীর সংখ্যা বেড়েছে। এর সঙ্গে ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ, ধুলো-মাটি, প্রায়শই ঠাণ্ডালাগার মত সমস্যার কারণে ফুসফুসে আগের থেকে বেশি পরিমাণ টক্সিন জমা হয়। এছাড়াও কেভিডের কারণে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে ফুসফুসে। যারা গত দুই ঢেউয়ে আক্রান্ত হয়েছেন তাঁদের মধ্যে যত বেশি প্রভাব পড়েছে তার তুলনায় এই দুই ঢেউয়ে কম প্রভাব পড়লেও কিছুক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আমাদের ফুসফুস। যে কারণে কোভিড থেকে সেরে ওঠার পর চেস্ট চেকআপের পরামর্শ দিচ্ছেন সব চিকিৎসকেরাই। ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যা আগের তুলনায় অনেকখানি বেড়েছে। এছাড়াও বেড়েছে ফুসফুসের নানা জটিলতাও। যে কারণে সচেতনতার উদ্দেশ্যেই প্রতি বছর ১ অগস্ট বিশ্ব ফুসফুস ক্যানসার দিবস হিসেবে পালন করা হয়। আর তাই যে সব পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা-
স্টিম নিন- ফুসফুসের জন্য সবচেয়ে উপকারী হল স্টিম। এতে শ্বাসনালীর ভেতরে জমে থাকা টক্সিন দূর হয়ে যায়। শ্বাসনালী পরিষ্কার হলে একাধিক সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়াও রোজ ভাপ নিলে বুকে কফ জমার সম্ভাবনাও অনেকখানি কমে যায়। কাশি হলে না চেপে রাখাই ভাল, পরামর্শ চিকিৎসকদের।
কাশির পদ্ধতি- কখনও শুয়ে কাশবেন না। সব সময় চেয়ারে বসুন। পা সমতলে রাখুন। এবার পেটের উপর হাত ভাঁজ করে রেখে নাক দিয়ে ধীরে ধীরে শ্বাস নিন। সামনের দিকে ঝুঁকে ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়ুন। পেটের বিপরীতে হাত রাখুন। কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিন, আবার শ্বাস নিন। টানা ১০ মিনিট এই প্রক্রিয়া চালিয়ে যান।
ফুসফুস সুস্থ রাখতে নিয়মিত ভাবে ব্যায়াম করবেন। এতে ফুসফুসের পেশি শক্তিশালী হয়। যে কারণে ফুসফুসে পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেন পৌঁছয়। সেই সঙ্গে রক্ত সঞ্চালন আগের তুলনায় অনেক ভাল হয়। এবং প্রতি কোষে সঠিক পরিমাণে অক্সিজেন পৌঁছয়। এর ফলে কার্বন ডাই অক্সাইড শরীর থেকে প্রাকৃতিক উপায়েই বাইরে বেরিয়ে যায়, জমতে পারে না।
অতিরিক্ত ধূমপান একেবারেই নয়। এর ফলে ফুসফুস পচে যেতে পারে। আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা ফুসফুসকে সুস্থ রাখতে ধূমপান পুরোপুরি ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। কারণ যখন ধোঁওয়ার মধ্যে শ্বাস নেওয়া হয় তখন ফুসফুসে প্রচুর কণা জমা হয়। এর ফলে বিষাক্ত রাসায়নিক রক্তে মিশে গিয়ে সারা শরীরে পৌঁছে যায়। যে কারণে ক্যানসারের ঝুঁকি বেড়ে যায় অনেকটাই।
এছাড়াও জোর দিতেল হবে রোজকারের খাবারে। রসুন, আদা, কাঁচা হলুদ রোজ রাখুন ডায়েটে। এর ফলে সংক্রমণের সম্ভাবনা কমে। কফ, কাশি, সর্দি থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়। রোজ আদা দিয়ে চা খান, সকালে কাঁচা হলুদ খান, এতে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। সেই সঙ্গে খেয়াল রাখবেন যেন ঠাণ্ডা না লেগে যায়।