যতদিন যাচ্ছে বেড়েই চলেছে আর্থারাইটিস (Arthritis) বা বাতের প্রকোপ। সাধারণত একটা বয়সের পর এই রোগে আক্রান্ত হন মানুষজন। আমাদের দেশের প্রায় ২০ কোটি মানুষ এই আর্থারাইটিসে আক্রান্ত। হাঁটু, কোমর সহ শরীরের বিভিন্ন অংশে তীব্র ব্যথায় জর্জরিত রোগীরা। শুধু আমাদের দেশেই নয়, গোটা বিশ্ব জেরবার আর্থারাইটিসে। এই বাতের কারণে পঙ্গু হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি পর্যন্ত থাকে। সেই সঙ্গেই একাধিক ক্রনিক সমস্যাকে (Chronic Disease)ও ডেকে আনে আর্থারাইটিস। চিকিৎসা চালিয়ে গেলে এই রোগ কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে থাকে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওজন কমানোর সঙ্গে নাকি আর্থারাইটিসের সংযোগ রয়েছে। এই ব্যথা মূলত শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টে হয় ফলে ওজন কমলে জয়েন্টের (Joint) উপর চাপ কমে তাই কিছুটা হলেও অসহ্যনীয় ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
ওজন নিয়ন্ত্রণের ফলে শরীরে ফ্যাটের পরিমাণ হ্রাস পায়। যার ফলে আর্থারাইটিসের বারবারন্ত কমে। গবেষণা বলছে, মাত্র ১০ শতাংশ ওজন কমালেই আর্থারাইটিসের সমস্যা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে থাকে। আর্থারাইটিস শরীরে বাসা বাঁধলে হার্টের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসের মতো ক্রনিক সমস্যার আশঙ্কা বেড়ে যায়। ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকলে এই ধরণের সমস্যার ঝুঁকি অনেকটা কমে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আর্থারাইটিস রোগীদের ওজন কমালে কী-কী সুবিধা হতে পারে আসুন দেখে নেওয়া যাক…
ব্যথা-যন্ত্রণা কমায়: আর্থারাইটিসে মূল সমস্যাই হল কোমর, হাঁটু সহ শরীরের বিভিন্নি অংশে তীব্র ব্যথা। ওজন কমালে পা, হাঁটু ইত্যাদির উপর চাপ কম পড়ে। ফলে ব্যথা-যন্ত্রণা অনেকটা কমে।
জয়েন্টের উপর চাপ কমে: ওজন কমালে শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টের উপর চাপ অনেকটা কমে। ফলে জয়েন্টের ব্যথা কম হয়।
রোগের ঝুঁকি কমায়: অত্যধিক ওজন শরীরে বিভিন্ন সমস্যা ডেকে আনে। আপনি যদি ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন তবে এই ধরণের সমস্যার ঝুঁকি অনেকটাই কমে।
ক্রনিক রোগের হাত থেকে রক্ষা করে: সমীক্ষা বলছে, আর্থারাইটিসের প্রকোপে হৃদরোগ, ডায়াবেটিসের মতো ক্রনিক রোগের আশঙ্কা বেড়ে যায়। ওজন কমালে এই ধরণের সমস্যার হাত থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
ফ্যাট মুক্ত শরীর: ওজন কমালে শরীরে ফ্যাটের পরিমাণ কমে। বাড়তি ফ্যাট শরীরে একাধিক সমস্যাকে উস্কে দেয়। তাই শরীরকে সুস্থ রাখতে ফ্যাট নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত জরুরি। শরীরেব ফ্যাটের পরিমাণ কমলে আর্থারাইটিসও নিয়ন্ত্রণে থাকে বলেই বিশেষজ্ঞদের মত।
জয়েন্টের অস্ত্রোপচার: মাত্রাতিরিক্ত আর্থারাইটিসের প্রভাবে অনেক সময় হাঁটু ক্ষয়ে যায়। তখন হাঁটুর রিপ্লেসমেন্ট সার্জারি ছাড়া অন্য কোনও উপায় থাকে না। এই সার্জারির আগে ও পড়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকলে এই অস্ত্রোপচারের পরে তাড়াতাড়ি সুস্থ হওয়া অনেকটাই সহজ হয়।