ফের প্রচণ্ড গরম পড়তে শুরু করেছে। একেবারে হিমশিম অবস্থা বঙ্গবাসীর। উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম ভারতে তো লু বইছে। এই গরমে ডিহাইড্রেশন, হিটস্ট্রোক থেকে ব্রেন স্ট্রোকের ঘটনা বাড়ছে। দিল্লির AIIMS, সফদরজং সহ অনেক হাসপাতালে ব্রেইন হেমারেজ (মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ)-এ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। চিকিৎসকরা বলছেন, প্রচণ্ড গরম এবং হঠাৎ তাপমাত্রার পরিবর্তনের কারণে মানুষ ব্রেন হেমারেজের শিকার হতে পারে।
ব্রেন হেমারেজের জন্য হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে তরুণরাও রয়েছে। এই রোগীদের মধ্যে কয়েকজনের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে। প্রচণ্ড গরমে কড়া রোদ থেকে হঠাৎ করে এসি-তে ঢুকলে এবং দীর্ঘক্ষণ এসি-তে বসে থাকলে ব্রেন হেমারেজের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাপমাত্রার হঠাৎ হ্রাস-বৃদ্ধি মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালনকে প্রভাবিত করে, যার ফলে রক্তক্ষরণ হয়। পরিস্থিতি গুরুতর হলে ব্রেন হেমারেজ রোগীকে ভেন্টিলেটারেও রাখতে হয়।
কেন এই সমস্যা হচ্ছে?
সফদরজং হাসপাতালের সিনিয়র চিকিৎসক ডা. দীপক সুমন বলেন, এই সময়ে প্রচণ্ড গরম। বাইরে প্রচণ্ড গরম, কিন্তু মানুষ অফিসে-বাড়িতে এসি-তে থাকে। শরীর হঠাৎ প্রায় ৫০ ডিগ্রি তাপমাত্রা থেকে ২০-২৫ ডিগ্রি তাপমাত্রায় চলে যায়। এমন পরিস্থিতিতে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বিঘ্নিত হয়। মস্তিষ্ক তাপমাত্রার এই ধরনের আকস্মিক পরিবর্তনের সঙ্গে সামঞ্জস্য করতে পারে না। মস্তিষ্ক পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেন পায় না। অক্সিজেনের অভাবে মস্তিষ্কের স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং মস্তিষ্কে উপস্থিত স্নায়ু ফেটে যায়। এর ফলে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। সময়মতো রোগীর চিকিৎসা না হলে মৃত্যুও হতে পারে।
উপসর্গগুলি কী?
ব্রেন হেমারেজের উপসর্গগুলি হল- হঠাৎ তীব্র মাথাব্যথা, দৃষ্টিশক্তি আবছা হয়ে পড়া, মুখে অসাড়তা, কথা বলতে সমস্যা, হাঁটতে সমস্যা।
কীভাবে রক্ষা পাবেন?
যাঁদের উচ্চ রক্তচাপ বা হার্টের সমস্যা রয়েছে এবং অতিরিক্ত ধূমপান বা অ্যালকোহল পান করেন, তাঁদের মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের ঝুঁকি বেশি থাকে। ফলে গরমে তাঁদের স্বাস্থ্যের প্রতি বিশেষ যত্ন নেওয়া দরকার। প্রচণ্ড রোদ থেকে এসি-তে যাওয়ার আগে শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক করে নেওয়া উচিত। এমন জায়গায় কিছুক্ষণ দাঁড়ান, যেখানে রোদ নেই এবং এসি নেই। শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক করার পরেই এসিতে যান।