আগেকার মত এখন আর যক্ষা উদ্বেগজনক বা ভয়ংকর নয়। এখন যক্ষার চিকিৎসাও আগের থেকে অনেক বেশি উন্নত হয়েছে। সঠিক সময়ে চিকিৎসা করালে কিন্তু যক্ষাও সেরে যায়। তবে আগে যক্ষাতে আক্রান্তের সংখ্যা যে ভাবে শোনা যেত এখন সেই সংখ্যাটা কিন্তু অনেকটা কমেছে। টিবি মূলত ফুসফুসে প্রভাব ফেলে। সেই সঙ্গে শ্বাস-প্রশ্বাসে অসুবিধে হয়। এছাড়াও কাশি, বুকে ব্যথা, এমনকী কাশির সঙ্গে রক্ত পর্যন্ত বেরোতে পারে। মাইকোব্যাকটেরিয়াম জীবাণুর কারণেই কিন্তু যক্ষার সমস্যা হয়। আর এই জীবাণু মস্তিষ্ক, কিডনি, মেরুদণ্ড, ত্বকেও সমান প্রভাব ফেলে।
টিবি থেকে সরাসরি বা অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণের কারণে কিন্তু প্রভাব পড়ে আমাদের ত্বকেও। যেমন পায়ে লাল চাকা দাগ হয়ে যায়, সেই সঙ্গে ফুসকুড়ির সমস্যা সহ ত্বকে একাধিক সংক্রমণ দেখা যায়। এই সমস্যাকে বলা হয় ত্বকের টিবি। তবে সারাবিশ্বে এই সমস্যায় মাত্র ১ শতাংশ ভোগেন। আর ত্বকের এই প্রদাহজনিত সমস্যার কারণেই প্যাপিউল, নোডুলস, আলসারের মত ক্ষত তৈরি হয়। ত্বকের এই ক্ষতে কোনও রকম ব্যথা থাকে না। সেই সঙ্গে ক্ষতগুলো বাদামী-লাল রঙের হয়। পরবর্তীতে সেই ক্ষত কিন্তু আকারে বড়ও হয়। আর ত্বকের এই টিবির সময়মতো চিকিৎসা না করানো হলে কিন্তু পরবর্তীতে সেই ক্ষত বেদনাদায়ক হতে পারে। আর এই ব্যথা-বেদনা নাক, ঠোঁট, কান, ঘাড়, গাল ইত্যাদি যে কোনও অংশে হতে পারে। সময়মতো চিকিৎসা না হলে কিন্তু তা বাড়াবাড়ি পর্যায়ে যেতে পারে।
সম্প্রতি সমীক্ষায় আরও একটি তথ্য সামনে এসেছে। তা হল সোরিয়াসিস। সোরিয়াসিসে আক্রান্ত কোনও ব্যক্তির যদি যক্ষা পরীক্ষা হয় তাতে যক্ষা ধরা পড়ে না। এছাড়াও টিবি আমাদের শরীরে ভিটামিন-ডি এর ঘাটতির দিকে নিয়ে যায়। ফলে ত্বক লাল হয়ে যায়, শুষ্ক হয়ে যায়, চুলকানির সমস্যা থাকে, ব্রণ হয় সেই সঙ্গে অকাল বার্ধক্যও আসে। দীর্ঘদিন এই ভাবে চলতে থাকলে ত্বক কালো হয়ে যায়।
তবে ত্বকের টিবি হলে যেমন সহজে বোঝা যায় তেমনই কিন্তু চিকিৎসাও সম্ভব। চিকিৎসার ক্ষেত্রে আইসোনিয়াজিড, রিফাম্পিসিন, পাইরাজিনামাইড এবং ইথামবুটল-এই সব অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও কিছু ক্ষেত্রে অপারেশনের প্রয়োজন পড়ে। তবে ত্বকে টিবি হলে সেই সংক্রমণ কিন্তু দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে অন্যদের মধ্যেও। আর তাই খালি পায়ে হাঁটা, খোলা জায়গায় ঘুরে বেড়ানো এসব চলবে না। এছাড়াও আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহূত সামগ্রী যাতে অন্য কেউ ব্যবহার না করে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। ত্বকের যাবতীয় সুরক্ষা বিধি মেনে চলতে হবে। ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জ যথাস্থানে ফেলুন। পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে, দিনের বেলায় অবশ্যই সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। সেই সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনও ওষুধ পরিবর্তন করবেন না বা ব্যবহারও করবেন না।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
আরও পড়ুন: Blood Clot Risk: এই সব অভ্যাসের জন্যই কিন্তু সমস্যা হতে পারে রক্ততঞ্চনে! যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা