শীতকাল বেশির ভাগ মানুষের কাছেই আনন্দের। খোশমেজাজে থাকা যায়। সময় পেলে ঘুম। লেপ-কম্বলের আদর ছেড়ে কেউই বেরোতে চান না। তেমনই বাজারে নানা শাক-সব্জি। খাবারের দিক থেকেও অনেক অনেক বৈচিত্র। যা বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় অনেক ভালো। পিকনিক, ছুটি কাটানোর আমেজ। শীতকালের অপেক্ষায় অনেকেই হা-পিত্যেশ করে বসে থাকেন। কিন্তু কোনও কিছুই সকলের ‘বন্ধু’ নয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, শীতকাল যেমন ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের জন্য চরম শত্রু।
যাঁদের ক্যান্সারের চিকিৎসা চলছে, এই ঠান্ডা আবহাওয়া তাঁদের কাছে খুবই সমস্যার। নানা দিক থেকেই অস্বস্তির কারণ। হিন্দুস্তান টাইমসে এক সাক্ষাৎকারে অঙ্কোলজিস্ট ডাঃ কপিল গোয়েল যেমন জানিয়েছেন, ক্যান্সার রোগীদের ক্ষেত্রে এমনিতে মেটাবলিজম, গ্লুকোজ, পেশীর নানা সমস্যা থাকে। শীতকালে তা আরও খারাপ পরিস্থিতি তৈরি করে। অনেকের মধ্যে হরমোনজনিত সমস্যাও হয়। এই আবহাওয়া সবসময়ই তাঁদের কাছে আতঙ্কের হয়ে দাঁড়ায়।
এর কারণও ব্যাখ্যা করেছেন। শীতকালে এমনিতেই নানা কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমায়। ফ্লু, ঠান্ডা লাগা এবং নিউমোনিয়ায় মতো রোগও হতে পারে। ক্যান্সার রোগীদের ক্ষেত্রে এটি আরও বেশি ক্ষতিকারক। ঠান্ডা আবহাওয়ার জন্য সারাক্ষণ বন্ধ ঘরে থাকা, ভাইরাস ইনফেকশনের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।
ক্যান্সারের চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ অংশ কেমোথেরাপি। অনেক ধরনের ক্যান্সারের জন্যই কেমোথেরাপি বাধ্যতামূলক। শীতকালে কেমোর জন্য স্নায়ুতন্ত্র, রক্ত সঞ্চালনের মতো সমস্যা বাড়ে। ডিহাইড্রেশন, ক্লান্তি, রক্তাল্পতা, এই ধরনের সমস্যাও খারাপ রূপ ধারন করে এই আবহাওয়ার কারণে।
ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের জন্য বিশেষ পরামর্শও দিয়েছেন। শীতকালে তুলনামূলক ভাবে শারীরীক কসরত বাড়াতে হবে। হালকা কিছু ইন্ডোর এক্সারসাইজ করা যেতে পারে, যাতে শরীর গরম হয়। এই সময় যথাযথ গরম পোশাক পরা উচিত। যতটা সম্ভব ঠান্ডা পরিবেশ এড়িয়ে থাকা প্রয়োজন। তেমনই খাদ্যাভ্যাসও ঠিক রাখতে হবে। জল পানের পরিমাণও বাড়াতে হবে। ইনফ্লুয়েঞ্জা, নিউমোকোসের টিকাও নিয়ে রাখা যেতে পারে।