হার্ভার্ড-পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা বাদাম খায় না তাঁদের তুলনায় নিয়মিত আখরোট খাওয়া মানুষদের মৃত্যুর ঝুঁকি অনেকাংশে কম হয়। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে আবার আয়ু বৃদ্ধির সম্ভাবনাও দেখা যায়।
নিউট্রিয়েন্টস জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি সপ্তাহে পাঁচ বা তার বেশি আখরোট খাওয়া গেলে মৃত্যুর ঝুঁকি হ্রাস পায়। এছাড়া আয়ু বৃদ্ধির জন্যও প্রচুর পরিমাণে সাহায্য করতে পারে এই বাদাম।
হার্ভার্ড টিএইচ -এর সিনিয়র রিসার্চ সায়েন্টিস্ট ইয়ানপিং লি বলেন,”এই গবেষণা থেকে আমরা যা শিখেছি তা হল প্রতি সপ্তাহে কয়েক মুঠো আখরোট মানুষের আয়ু বৃদ্ধি করতে সাহায্য করতে পারে, বিশেষ করে যাঁদের ডায়েটের মান বিশেষ ভাল হয় না, তাঁদের ক্ষেত্রে।”
গবেষণার প্রধান গবেষক লি বলেন, “এটি একটি উপাদায়ী টিপ যা অনেক লোকের জন্য কার্যকর হতে পারে। যাঁরা তাঁদের স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে চায় তাঁদের জন্য এই টিপ বিশেষ ভাল ফল আনতে পারে।”
গবেষণায় দেখা গেছে যে প্রতি সপ্তাহে পাঁচ বা ততোধিক বাদাম খাওয়া গেলে মৃত্যুর ঝুঁকি ১৪ শতাংশ কম হয়। কার্ডিওভাসকুলার রোগ (সিভিডি) থেকে মৃত্যুর ঝুঁকি ২৫ শতাংশ কম হয় এবং প্রায় ১.৩ বছর আয়ু বাড়িয়ে দিতেও সক্ষম এই আখরোট। এই পরিসংখ্যান যাঁরা আখরোট খায়নি তা^দের সাপেক্ষে বলা হয়েছে।
প্রতি সপ্তাহে দুই থেকে চারবার আখরোট খাওয়া উচিত আর তার উপকারিতাও হতে পারে মারাত্মক। গবেষকরা সার্বিকভাবে মৃত্যুর ঝুঁকি ১৩% কম বলে জানিয়েছেন। কার্ডিওভাসকুলার রোগে মারা যাওয়ার ঝুঁকি প্রায় ১৪% কম। যাঁরা আখরোট খান না তাঁদের থেকে প্রায় এক বছর বেশি বাঁচার সম্ভাবনা আছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
এমনকি একটি উপ -খাদ্যতালিকাগত মানুষের মধ্যেও, আখরোটের ব্যবহার প্রতিদিন মাত্র অর্ধেক পরিমাণে বাড়িয়ে দিতেই অনেকটা লাভ পাওয়া গেছিল। দেখা গেছে এক্ষেত্রে প্রায় ১২ শতাংশ মৃত্যুর ঝুঁকি এবং ২৬% কম হৃদরোগের সম্ভাবনা থাকছে।
এই গবেষণার জন্য, গবেষকরা নার্সদের স্বাস্থ্য গবেষণা থেকে গড়ে ৬৩.৬ বছর বয়সী ৬৭,০১৪ জন মহিলাদের তথ্য সংগ্রহ করেছিলেন। একইভাবে গড়ে ৬৩.৩ বছর বয়সী প্রায় ২৬,৩২৬ জন পুরুষের তথ্যও সংগ্রহ করা হয়েছিল।
অংশগ্রহণকারীরা যখন গবেষণায় যোগ দেয় তখন তুলনামূলকভাবে সুস্থ ছিলেন এবং তাঁদের প্রায় ২০ বছর (১৯৯৮-২০১৮) অনুসরণ করা হয়েছিল।
প্রতি চার বছর অন্তর তাঁদের খাওয়া খাবারের মূল্যায়ন করা হয়। এক্ষেত্রে অংশগ্রহণকারীরা তাঁদের সামগ্রিক ডায়েটের রিপোর্ট দেয়, যার মধ্যে তাঁরা কতবার আখরোট, অন্যান্য গাছের বাদাম এবং চিনাবাদাম খেয়েছে সেগুলি জানায়। সেই সঙ্গে ব্যায়াম এবং ধূমপানের অবস্থাও বিষদে বর্ণনা করেন।
এই তথ্যের উপর ভিত্তি করে, গবেষকরা বিভিন্ন স্তরে আখরোট খাওয়ার বিভিন্ন গুণাবলী আর দীর্ঘায়ু সম্বন্ধে বিস্তারিত তথ্য পান।
আরও পড়ুন: লিভারের যত্ন নিতে এই পাঁচটি খাবার বেছে নিন আর লিভারকে সুস্থ রাখুন