দমবন্ধকর দীর্ঘ লকডাউন, অতিমারীর আতঙ্ক, মূল্যবৃদ্ধি, বাড়িতে অসুস্থ পরিজন— জেরবার করে দিচ্ছে প্রত্যেকটি মানুষকে। সবচাইতে বেশি ভুগছেন মহিলারা। আবার যাঁরা কর্মরতা ভারতীয় মা, রোজগার করে পরিবারের গ্রাসাচ্ছাদনের ব্যবস্থা করেন, তাঁদের এই অতিমারী প্রতিদিন, শারীরিক ও মানসিকভাবে পিষছে বুলডোজারের মতোই। কীভাবে?
মার্কেট এক্সেল ডাটা ম্যাট্রিক্স প্রাইভেট লিমিটেড নামে এক সংস্থা সারা দেশজুড়ে এক সমীক্ষা চালিয়েছিল। সেই সমীক্ষায় উঠে এসেছে আতঙ্ক জাগানো তথ্য। দেখা যাচ্ছে, কর্মরতা মায়েদের ঘুমোনোর সময় সময় কমে গিয়েছে উল্লেখযোগ্য ভাবে! সারাদেশের ১৭টি রাজ্যে ১৭০০ জন কর্মরতা মহিলার মধ্যে অনলাইনে চালানো হয়েছিল এই সমীক্ষা। সেখান থেকেই জানা যায়, জানা যায়, দেশের কর্মরতা মহিলারা এখন ঘুমোন মাত্র ৫.৫০ ঘণ্টা! অথচ কোভিড শুরু হওয়ার আগে তাঁরা ঘুমোতে পেতেন অন্তত ৬.৫০ ঘণ্টা। অর্থাৎ প্রায় আগের তুলনায় ১৭ শতাংশ ঘুম কম হচ্ছে তাঁদের। কিন্তু কেন এমন হচ্ছে?
আরও পড়ুন: করোনাকালে ঘুমোলেই বাড়বে ইমিউনিটি! নয়া তথ্য
আসলে, এই ১.৫০ ঘণ্টা তাঁদের দেখভাল করতে হচ্ছে বাড়ির বয়স্ক মানুষ, বাচ্চা এবং বাকি সদস্যদের। এখানেই শেষ নয়। অতিমারি শুরুর আগে অন্ততপক্ষে গড়ে ১.১০ ঘণ্টা শরীরচর্চা করতে সময়ে পেতেন তাঁরা। এখন সেই সময় এসে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৪০ মিনিটে! আর অফিসের কাজের প্রসঙ্গ আসতেই প্রায় সকলে জানিয়েছেন, আগে যেখানে অফিসের কাজের জন্য ৬.৫০ ঘণ্টা সময় দিতে হতো, সেখানে এখন দিতে হচ্ছে প্রায় ৮.৫৫ ঘণ্টা! অবাক করার মতো ব্যাপার হল, আগে যেখানে পরিচারিকার অনুপিস্থিতিতে ঘরের কাজ করতে সময় লাগত ৩.৪০ ঘণ্টা, এখন সেই একই কাজ করতে সময় লাগছে ৪.৪৫ ঘণ্টা।
এমনকী স্কুল বন্ধ থাকায় কর্মরতা মায়েরা সন্তানের শিক্ষার ব্যাপারেও বেশি সময় ব্যয় করছেন। আগে যেখানে ১.২০ ঘণ্টা সময় দিলেই চলত, সেখানে তাঁদের দিতে হচ্ছে ২.১০ ঘণ্টা।
আরও পড়ুন: চুমু খাওয়ার সময় চোখ বন্ধ হয়ে যায় কেন? উত্তরের খোঁজে দুই বিজ্ঞানী
সাইকিয়াট্রিস্ট এবং সমাজবিদরা বলছেন, কর্মরতা মায়েদের প্রবল মানসিক ও শারীরিক নিপীড়নের মধ্যে কাটাতে হচ্ছে। তাঁরা যাতে সামান্য আরাম পায় তার ব্যবস্থা করতে হবে পরিবারের বাকি সদস্যদের। চেষ্টা করুন কর্মরতা মায়ের কাজের বোঝা হালকা করতে। তার কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পুরুষরা বাড়ির কাজ করুন। এর ফলে সম্পর্ক ভালো হবে। সংসারও চলবে নির্দিষ্ট ছন্দে।