ডায়াবিটিস, কোলেস্টেরলের পাশাপাপাশি কিন্তু আজকাল লিভারের সমস্যাও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। লিভারের নানা সমস্যায় অনেকেই ভুগছেন। সেখানে সিরোসিস অফ লিভার যেমন আছে তেমনই কিন্তু আছে ফ্যাটি লিভারের সমস্যাও। পরিপাকতন্ত্রের ক্ষেত্রে যাবতীয় কাজ সামাল দেয় একা লিভার। আর তাই লিভারের যত্ন নেওয়া বিশেষ ভাবে প্রয়োজন। নইলে হতে পারে একাধিক সমস্যা। লিভার হল আমাদের সবচেয়ে বড় অভ্যন্তরীণ অঙ্গ, যা আমাদের ডান দিকের পাঁজরের নীচে এবং ডান ফুসফুসের নীচে থাকে। শরীরের রক্ত থেকে বিষাক্ত পদার্থ- এই পুরো ছাঁকনি প্রক্রিয়ার কাজটি করে লিভার। সেই সঙ্গে শরীরে সঞ্চালিত রক্তকে ফিল্টার করে পুষ্টি শোষণের কাজও করে লিভার।
এখনও পর্যন্ত শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত লিভারের ৫০০ টিরও বেশি ফাংশনের হদিশ পাওয়া গিয়েছে। গবেষকদের ধারণা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও বেশি কিছু কার্যকারিতা হয়ত প্রকাশ্যে আসবে। লিভারের মুখ্য কাজ হল আমরা যা কিছু খাবার খাই সেই সব খাবারকে প্রক্রিয়াজাত করা। তা খাবার হোক বা অ্যালকোহল বা বিষ। এমনকী আমরা যে সমস্ত টক্সিন গ্রহণ করি সেখান থেকেও কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত হয় আমাদের লিভার। এমনকী রক্তে যদি কোনও সংক্রমণ হয় সেখান থেকেও সংক্রমণ পৌঁছয় লিভারে।
তবে জানেন কি আমরা কিন্তু অজান্তেই নিজেদের লিভারের ক্ষতি করে থাকি! আমাদের খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাত্রাই কিন্তু এর জন্য মূলত দায়ী। এছাড়াও গ্যাস-অম্বলের সমস্যা বেশিরভাগ বাড়িতেই। আর সামান্য এই অম্বলের সমস্যা হলেই অনেকে মুঠো মুঠো ওষুধ খান। অনেকের আবার অভ্যাস আছে কথায় কথায় ব্যথার ওষুধ খাওয়া। আর এই সব ওষুধ থেকেই কিন্তু ক্ষতি হয় আমাদের লিভারের। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া দিনের পর দিন ধরে এই ওষুধ খেতে থাকলে কিন্তু লিভারের ক্ষতি হয়। চিকিৎসকরা বলছেন এই ব্যথার ওষুধের সঙ্গে যদি অ্যালকোহল খাওয়া হয় তা কিন্তু আরও মারাত্মক। লিভার যে এই ওষুধের প্রভাবে ড্রাগ-ইনডিউসড লিভার ইনজুরি (DILI) দেখা যায়। মূলত প্যারাসিটামল, অ্যাসিটামিনোফেন গ্রুপের ওষুধ খেলেই এই সমস্যা হয়।
সম্প্রতি হিন্দুস্থান টাইমসের একটি প্রতিবেদনে স্যার এইচএন রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন হাসপাতালের হেপাটোলজির ডিরেক্টর ডাঃ আকাশ শুক্লা প্রকাশ যেমন বলেছেন, একটি নির্দিষ্ট মাত্রার পর যখন লিভার বাইরে থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয় তখন তাকে সিরোসিস অফ লিভার বলা হয়। আর তখন শরীরে যে সব বিষাক্ত পদার্থ উৎপন্ন হয় এবং অন্ত্র যে সব দূষিত পদার্থ শোষণ করে সেগুলিকে শুদ্ধিকরণ করার ক্ষমতা থাকে না লিভারের। যে কারণে দূষিত পদার্থগুলি রক্তের মাধ্যমে সারা শরীরে সঞ্চালিত হয়ে যায়। আর এই দূষীত পদার্থ অনেক সময়ই গ্যাস আকারে ফুসফুসের মাধ্যমে নির্গত হয়। যে কারণে মুখে বা নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধের সাহায্যে বোঝা যায় যে লিভারের কোনও জটিল লমস্যা হয়েছে। তবে ব্যথানাশক ওষুধ দিনের পর দিন খেলে সেখান থেকে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আসে তা কিন্তু প্রমাণিত। আর তাই এ ব্যাপারে সচেতন থাকুন। চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
আরও পড়ুন: Coronavirus : লেগেই রয়েছে ঘুসঘুসে জ্বর! কোভিড নাকি অন্য কিছু?