অতিরিক্ত শারীরিক কার্যকলাপ এবং অতিরিক্ত পরিমাণ অ্যালকোহল শীতের দিনে শরীরকে গরম রাখতে সাহায্য করে। কিন্তু এটি ক্ষতি করে আপনার হার্টের। হৃদযন্ত্রের পেশীতে অ্যালকোহলের সরাসরি বিষাক্ত প্রভাবের কারণে, হৃদযন্ত্র রক্ত পাম্প করতে অক্ষম হয়, যার ফলে হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে যায়।
বিশেষজ্ঞরা মানুষকে হৃদযন্ত্রের যত্ন নিতে, সুষম খাদ্য গ্রহণ করতে, চাপমুক্ত থাকতে, ধূমপান, অ্যালকোহল এড়িয়ে চলতে এবং নিয়মিত তাদের রক্তে শর্করার মাত্রা, রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার পরামর্শ দেন। অ্যালকোহলিক কার্ডিওমায়োপ্যাথি এসিএম (Alcoholic cardiomyopathy ACM) দীর্ঘকাল ধরে অ্যালকোহল সেবনের কারণে ঘটে। চিকিৎসা না করা হলে এই এসিএম গুরুতর হয়ে উঠতে পারে এবং প্রাণঘাতীতে পরিণতি হতে পারে। যার ফলে অনিয়মিত হৃদস্পন্দন এবং কনজেস্টিভ হার্ট ফেইলিয়র হতে পারে।
অ্যালকোহলের অপব্যবহার হৃদয় সহ আপনার শরীরের একাধিক অঙ্গের উপর বিষাক্ত প্রভাব ফেলে। অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হৃদযন্ত্রের পেশীকে ক্ষতিগ্রস্থ করে এবং দুর্বল করে দেয়। এই কারণে, আপনার হৃদয়ের পক্ষে রক্ত পাম্প করা কঠিন হয়ে পড়ে। যখন এটি পর্যাপ্ত রক্ত পাম্প করতে পারে না, তখন অতিরিক্ত রক্ত ধরে রাখার জন্য হৃদযন্ত্র প্রসারিত হতে শুরু করে। এটি হৃদয়ের পাতলা এবং বর্ধিত হওয়ার একটি কারণ। অবশেষে, হৃদযন্ত্রের ক্ষতি এবং চাপের কারণে রক্তনালীগুলি সঠিকভাবে কাজ করা বন্ধ করে দেয়।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা গেছে, এমন বেশ কিছু রোগী রয়েছেন, যাঁরা শীতকালে খুব বেশি অ্যালকোহল গ্রহণ করেন, এতে তাঁরা নিজেদের ঝুঁকিতে ফেলেন। প্রচুর পরিমাণে অ্যালকোহল গ্রহণ উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ায়। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এটি রক্তনালীগুলির ক্ষতি করে যার ফলে অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস সৃষ্টিকারী ধমনীতে চর্বি তৈরি হয়।
ডায়াবেটিস উচ্চ রক্তচাপ এবং উচ্চ কোলেস্টেরলের সম্ভাবনা বাড়ায়। উচ্চ রক্তচাপ হৃদযন্ত্রের পেশীগুলিকে ঘন করে এবং তারপরে হার্ট অ্যাটাকে ঘটনা ঘটে। ধূমপানের কারণে আপনার রক্তনালীগুলি ঘন এবং সংকুচিত হয় যার ফলে হার্ট অ্যাটাক হয়। মানসিক চাপ হৃদযন্ত্রের পেশীতে দুর্বল রক্ত প্রবাহের মতো হৃদযন্ত্রের সমস্যাগুলিকে ট্রিগার করতে পারে যা পরবর্তী জীবনে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে।
স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা মেনে চললে হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা রোধ করা যায়। অ্যালকোহল পান করার বদলে শীতকালে ব্যায়াম করা ভাল এবং স্বাস্থ্যকর। যাঁরা হৃদরোগে আক্রান্ত তাঁদের বেশি ব্যায়াম করা এড়িয়ে চলা উচিত, ধূমপান, অ্যালকোহল এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার কমানো উচিত। এর পাশাপাশি নিয়মিত কার্ডিয়াক চেক-আপের জন্য, হার্ট অ্যাটাককে দূরে রাখার জন্য আপনার ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত।
আরও পড়ুন: শীতে সুস্থ থাকতে এই একটি ফলই যথেষ্ট! বলছেন আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা
আরও পড়ুন: শীতের দিনগুলোতে নিয়মিত মাছ খান! দূরে থাকবে একাধিক রোগ
আরও পড়ুন: শুধু রক্তাল্পতা নয়, আয়রনের অভাবে একাধিক রোগের উৎপত্তি হতে পারে জানেন?