Diabetes: রাস্তার আলো বাড়াতে পারে সুগারের ঝুঁকি! নতুন গবেষণায় চাঞ্চল্য

Effects of Street Light: দুশ্চিন্তার ব্যাপার হল, কোনও কারণে নিয়মিত সামান্য ঘুমের ব্যাঘাতও কিন্তু একজন ব্যক্তির সার্কেডিয়ান চক্রের সঙ্গে স্বাস্থ্যেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে!

Diabetes: রাস্তার আলো বাড়াতে পারে সুগারের ঝুঁকি! নতুন গবেষণায় চাঞ্চল্য
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 20, 2022 | 7:00 AM

রোজ রাতে জানালা দিয়ে রাস্তার আলো (Street Light) ঢোকে ঘরে? সেই আলো পড়ে গায়ে? সাবধান! নতুন এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, রাতে ঘুমানোর সময় গায়ে ‘স্ট্রিট লাইট’ পড়লে বেড়ে যায় ডায়াবেটিসের ঝুঁকি (Diabetes Risk) ! এক বছর ধরে চলা ওই গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যে কোনও ধরনের আলো ভালো ঘুমের (Deep Sleep) পরিপন্থী। বিজ্ঞানীদের মতে, বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ প্রচলিত চিকিৎসা ধারায় ঘুমের পরিপন্থী আলোর প্রভাব নিয়ে সেভাবে আলোচনা হয়নি। এমনকী বিভিন্ন চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রবন্ধেও বিষয়টি নিয়ে সেভাবে লেখালেখিও হয়নি। অথচ সাম্প্রতিক নানা স্টাডিতে কিন্তু দেখা যাচ্ছে, রাত্রিকালীন আলোর সঙ্গে সার্কেডিয়ান চক্র বিঘ্নিত হওয়ার যোগ রয়েছে।

প্রশ্ন হল, সার্কেডিয়ান চক্র কী? সহজভাবে বোঝানোর জন্য বলা যায়, সর্কেডিয়ান চক্র হল শরীরের জৈবিক ঘড়ি। এই ঘড়ি একটি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলে। শরীরের বিভিন্ন কাজের সঙ্গে বিপাকক্রিয়াও নিয়ন্ত্রণেও ঘড়িটির ভূমিকা রয়েছে। ২৪ ঘণ্টা সময়কালে জীবের নানা শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়াকলাপগুলিকে নিয়ন্ত্রণ সার্কেডিয়ান চক্র। এই কারণেই সকালে আমাদের নির্দিষ্ট সময়ে ঘুম ভাঙে ও রাত নামলে চোখে ঘুম নেমে আসে। এমন বহু কাজই রয়েছে যা সার্কেডিয়ান চক্র নিয়ন্ত্রণ করে। দুশ্চিন্তার ব্যাপার হল, কোনও কারণে নিয়মিত সামান্য ঘুমের ব্যাঘাতও কিন্তু একজন ব্যক্তির সার্কেডিয়ান চক্রের সঙ্গে স্বাস্থ্যেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে!

ইউরোপিয়ান অ্যাসোসিয়েশন দ্বারা প্রকাশিত জার্নাল ডায়াবেটিলোজিয়ায় প্রকাশিত এক প্রবন্ধ অনুসারে, সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে চীনা প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে রাত্রিকালীন ঘুমের সময় আউটডোর লাইটের সঙ্গে গ্লুকোজ হোমিওস্টেসিস (সহজভাবে বোঝানোর জন্য বলা যায় গ্লুকাগন ও ইনসুলিন হর্মোনের ভারসাম্য রক্ষা করে শরীরে গ্লুকোজের মাত্রা সঠিক রাখা) এবং ডায়াবেটিসের যোগ রয়েছে।

জানা গিয়েছে, ওই সমীক্ষায় প্রায় ৯৮ হাজারের বেশি ব্যক্তি অংশ নিয়েছিলেন। বেশিরভাগ অংশগ্রহণকারীর বয়স ছিল ১৮ বছর বয়সের উপরে।

চীনের সাংহাই জিয়াটাং ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিন-এর গবেষকরা ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকির সঙ্গে রাত্রিকালীন কৃত্রিম বাইরের আলোর যোগসূত্র আবিষ্কার করেছেন। তবে তাঁরা এও জানিয়েছেন, জীবনযাত্রার পরিবর্তন করলে টাইপ ২ ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা সম্ভব।

ওই গবেষকদের করা সমীক্ষায়, রাত্রিকালীন বাইরের চড়া আলোর প্রভাবে শরীরের গ্লুকোজ হেমোস্টেসিস প্রক্রিয়া বিঘ্নিত হওয়ার প্রমাণ মিলেছে।

স্টাডি অনুসারে, দীর্ঘকাল ধরে রাত্রিকালীন আলোর সংস্পর্শে থাকার বিষয়টি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার রিস্ক ফ্যাক্টর হিসেবে নতুন সংযোজন। একইসঙ্গে বেশ কিছু নতুন সমীক্ষাতেও দেখা যাচ্ছে, রাত্রিকালীন বাইরের আলোর সঙ্গে সার্কেডিয়ান সাইকেল বিঘ্নিত হওয়ার যোগ রয়েছে।

এমনকী আগের এক স্টাডিতে এও দেখা গিয়েছিল, যাঁরা স্বল্প ঔজ্জ্বল্যের আলো জ্বালিয়ে রাতে ঘুমান, তাঁদের শরীরে অনেক বেশি মাত্রায় ইনসুলিন তৈরি হয় ও হার্ট রেটও বৃদ্ধি পায়। চিন্তার ব্যাপার হল, ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স থাকলেও শরীরে একইরকমভাবে বেশিমাত্রায় ইনসুলিন উৎপন্ন হওয়া ও হার্ট রেট বৃদ্ধির মতো উপসর্গ প্রকাশ পায়! বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, দীর্ঘকাল ধরে এভাবে রাত্রিকালীন বাইরের আলো শরীরে পড়লে তা স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

আলাদা কিছু স্টাডিতে এও দেখা গিয়েছে যে, অত্যন্ত মৃদু আলোর প্রভাবে শরীরে নিদ্রা সহায়ক হর্মোন মেলাটোনিন-এর উৎপাদন কমে যেতে পারে। মেলাটোনিন যে শুধু ঘুম এবং বিপাকক্রিয়ায় সাহায্য করে তাই নয়, সেইসঙ্গে শরীরে বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ হ্রাস করে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট-এর মতোও কাজ করে। এছাড়া মেলোটনিন-এর ভেসোডিলেটরি ক্ষমতাও (শরীরের যে অংশে অক্সিজেন ও পুষ্টি উপাদান কম পৌঁছাচ্ছে সেখানে বেশি মাত্রায় অক্সিজেন পরিবহণ করার দক্ষতা) রয়েছে। ফলে শরীরে মেলোটনিন কম তৈরি হলে তার প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়ে ভেসোডিলেটরি ক্ষমতাতেও। স্টাডি অনুসারে, রাত্রিকালীন আলো অটোইমিউন নার্ভাস সিস্টেমকেও সক্রিয় করে তুলতে পারে যা রাত্রিকালীন ঘুমের সময় একেবারেই কাম্য বিষয় নয়।