প্রয়োজনের চেয়ে বেশি যে কোনও কিছুই স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে সমূহ বিপদ আনতে পারে। অতিরিক্ত খাওয়া দাওয়া, অতিরিক্ত ব্যায়াম, এমনকি অতিরিক্ত ঘুমও স্বাস্থ্য অবনতির জন্য বিশেষভাবে দায়ী থাকে। বিয়ারের ক্ষেত্রেও এই একই কথা প্রযোজ্য। তবে পরিমিত মাত্রায় বিয়ারের সেবন, স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে অত্যন্ত উপকারি হতে পারে।
অ্যালকোহলের মাত্রা থাকলেও, বিয়ারের স্বাস্থ্যগুণ বেশ ভাল পরিমাণে বর্তমান। পরিমিত মাত্রায় বিয়ারের সেবন নিরাপদ হওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্যকরও বটে। বিয়ার খেলে হার্টের স্বাস্থ্যের পাশাপাশি অন্যান্য নানান ধরনের জটিল রোগের মোকাবিলা করা সম্ভব হয়।
১) বিয়ার অন্যান্য অ্যালকোহলযুক্ত পানীয়ের চেয়ে বেশি পুষ্টিকর। আমরা সকলেই জানি যে, ওয়াইন হল একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ পানীয়। কিন্তু বিয়ারেও অনেক বেশি মাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। বিয়ারের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ওয়াইনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের থেকে আলাদা। কারণ বার্লি এবং হপসের ফ্ল্যাভোনয়েড আঙুরের থেকে আলাদা। বিয়ার আয়রন, ক্যালসিয়াম, ফসফেট এবং ফাইবারের উৎস। এমনকি ওয়াইনের তুলনায় বিয়ারে প্রোটিন এবং ভিটামিন-বি এর মাত্রাও বেশি থাকে।
২) বিয়ার হার্টের ক্ষেত্রে উপকারি হতে পারে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, পরিমিত মাত্রায় বিয়ারের সেবন হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক কিংবা হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কিছুটা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও গবেষণায় দেখা গেছে যে, যে কোনও অ্যালকোহলযুক্ত পানীয়ের পরিমিত সেবন কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
৩) পরিমিত মাত্রায় বিয়ারের সেবন কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি কমাতে সহায়ক। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে যে, পুরুষ-মহিলা নির্বিশেষে যে সকল ব্যক্তি পরিমিত মাত্রায় বিয়ার পান করেছেন বলে জানিয়েছেন, তাদের কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি প্রায় ৪১ শতাংশ কমে গিয়েছে।
৪) বিয়ারে থাকা দ্রবণীয় ফাইবার, এলডিএল বা খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। তাছাড়া দ্রবণীয় ফাইবারের সেবন বৃদ্ধি, স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে অত্যন্ত উপকারি। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা এবং কোলেস্টেরল মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
৫) উচ্চ সিলিকন যুক্ত বিয়ার, হাড় শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। অর্থোসিলিসিক অ্যাসিডের দ্রবণীয় আকারে ডায়েটরি সিলিকন, হাড় ও টিস্যুর বৃদ্ধি এবং বিকাশের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। তাছাড়া এটি অস্টিওপোরোসিস হওয়ার ঝুঁকি কমাতে সহায়ক।
৬) বিয়ারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য উপকারিতা হল, এটি ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। বিয়ারে জ্যান্থোহিউমল নামক শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। এটি ক্যানসার কোষ সৃষ্টিকারী এনজাইমকে বাধা দেয়।