ডায়াবেটিস একপ্রকার দীর্ঘমেয়াদী রোগ। একবার ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে সেভাবে নিস্তার পাওয়ার বিশেষ কোনও উপায় নেই। তাই চিকিৎসকরা ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিয়মমাফিক জীবনযাপন করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কারণ নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের মাধ্যমেই একমাত্র এই ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। আর এই নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের প্রাথমিক ধাপই হল খাওয়া দাওয়া।
ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তিদের যদি খাওয়া দাওয়া নিয়ন্ত্রিত থাকে তাহলে তারা অনেক বেশি সুস্থ থাকতে পারেন। আর সেই কারণেই ডাক্তাররা এদের বিভিন্ন ধরনের খাদ্য গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে খাবারের পাশাপাশি পানীয়ের দিকেও বিশেষ নজর দিতে বলা হয়।
১) প্রাকৃতিক শক্তিবর্ধক পানীয়গুলির মধ্যে ছাতুর শরবত অন্যতম। এটি মূলত ছোলা থেকে তৈরি হয়। ছোলার ছাতুতে উচ্চ মাত্রায় প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেট থাকে। এটি ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করার মাত্রায় কোনও ব্যাঘাত ঘটায় না এবং তাৎক্ষণিকভাবে শক্তি যোগায়। এছাড়াও, দীর্ঘসময় সময় পর্যন্ত পেট ভরা রাখতেও সাহায্য করে ছাতু। ছাতুর শরবত তৈরি করতে, প্রথমে এক গ্লাস নর্মাল জলে ছাতু ভাল করে মিশিয়ে নিন। তারপর তাতে পরিমাণমতো বিটনুন, পেঁয়াজ কুচি এবং লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন।
২) ফালুদার অন্যতম উপকরণ হল সাবজা দানা। উচ্চ পিএইচ যুক্ত এই সাবজা দানা অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর, সহজলভ্য এবং বেশ জনপ্রিয়। তাছাড়া ফাইবার সমৃদ্ধ সাবজা ওজন কমানো এবং রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সহায়তা করে। সাবজা দানার শরবত তৈরি করতে, প্রথমে এক চা চামচ সাবজার দানা নিয়ে ভালো করে ধুয়ে জলে দিয়ে দিন। হালকা ঝাঁকিয়ে নিন। রিফ্রেশিং এফেক্ট দিতে চাইলে আপনি বরফের কিউব যোগ করতে পারেন। এই পানীয়টিতে মিষ্টি স্বাদ চাইলে, আপনি খাঁটি মধু বা গুড় ব্যবহার করতে পারেন।
৩) ভেজিটেবল জুস এটি অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর পানীয়। বেশিরভাগ ফলের রসেই অত্যধিক চিনি মেশানো হয়, তাই আপনি মিক্সড ভেজিটেবিল জুস ট্রাই করে দেখতে পারেন। কিছু সবুজ শাক সবজি ও এক মুঠো বেরি নিয়ে ভাল করে ব্লেন্ড করে নিন। এই মিশ্রণটি আপনাকে প্রচুর ভিটামিন এবং খনিজ সরবরাহ করবে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অত্যন্ত উপকারি।
৪) চিনি ছাড়া কফি গবেষণায় দেখা গেছে যে, কফি পান করলে টাইপ ২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমে। যারা প্রতিদিন দুই-তিন কাপ কফি খান, তাদের ঝুঁকি অনেকটাই কমে। তবে অবশ্যই চিনি ছাড়া কফি খাওয়া উচিত। চিনি এবং ক্রিম যোগ করলে ক্যালোরির মাত্রা বাড়তে পারে, যা আপনার রক্তে শর্করার মাত্রাকে প্রভাবিত করতে পারে। তাই ব্ল্যাক কফিই সবচেয়ে সেরা।