কারণ ছাড়াই হঠাৎ করে গোড়ালিতে ব্যথা হয় অনেকের। আর সেই ব্যথা এতটাই থাকে যে ঠিক করে পা পর্যন্ত ফেলা যায় না। পা মচকে গিয়ে গোড়ালিতে ব্যথা হতে পারে, আবার কোলেস্টেরল বাড়লেও কিন্তু প্রথমে ব্যথা হয় পায়েই। গোড়ালি ফুলতে থাকে, কিছু ক্ষেত্রে টিপও বসে যায়। শরীরে দু’রকমের কোলেস্টেরল থাকে। হঠাৎ করে কত্তে যদি খারাপ কোলেস্টেরল বা এলডিএল এর মাত্রা বেড়ে যায় তাহলে রক্তে তা জমতে শুরু করে। রক্তে কোলেস্টেরল জমতে থাকলে রক্তপ্রবাহ বাধা পায়। সেখান থেকেও গোড়ালিতে ব্যথা হতে পারে। এছাড়াও ওজন যদি প্রয়োজনের তুলনায় বেড়ে যায় অর্থাৎ যাঁরা ওবেসিটিতে ভুগছেন তাঁদের ক্ষেত্রেও গোড়ালিতে ব্যথা (Heel Pain) হতে পারে। কারণ শরীরের ভর নিয়ন্ত্রিত হয় এই দুই পায়ের সাহায্যে। সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত ওজন বাড়লে ব্যথা হতেই পারে। আর গোড়ালির হাড় বাড়লেও হতে পারে এই সমস্যা। ঠিক তেমনই ভুল শেপের জুতো বা হাই-হিল থেকেও আসতে পরে গোড়ালির ব্যথা।
আজকাল শরীরের বেশিরভাগ সমস্যার জন্যই কিন্তু দায়ী আমাদের জীবনযাত্রা। অতিরিক্ত তেল-মশলাদার খাবার খাওয়া, স্ট্রেস দিনের মধ্যে ৬ ঘন্টার কম ঘুম বাড়িয়ে দেয় শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা। কোলেস্টেরল একরকম মোম জাতীয় পদার্থ, যা তৈরি হয় আমাদের লিভারেই। ভিটামিন ডি এবং শরীরের ভারসাম্যরক্ষাকারী নানা হরমোন তৈরির মাধ্যমেই তৈরি হয় এই কোলেস্টেরল। কোলেস্টেরল জলে অদ্রবণীয়, লিপটোপ্রোটিন নামক একরকম কণার মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়ে।
এই কোলেস্টেরল যখন পরবর্তীতে চর্বি এবং লাইপোপ্রোটিনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে লো-ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন (LDL) গঠন করে তখনই তা শরীরের জন্য ক্ষতিকারক। কারণ এই LDL ধমনীতে রক্তপ্রবাহ আটকে দেয়। যা হৃদরোগের অন্যতম কারণ। অতিরিক্ত তেল-মশলার খাবার খেলে এই সমস্যা আরও অনেক বেশি বাড়ে। আর তাই আপনার যা করণীয়
*বছরে অন্তত দু’বার কোলেস্টেরলের পরীক্ষা করা বাঞ্ছনীয়। যদি তা থাকে বাড়তির দিকে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন। প্রয়োজনে ওষুধ খান।
*মশলাদার খাবার, ফাস্ট ফুড, চিনি-এসব একেবারেই কম খান। শর্করা যত কম খাবেন ততই ভাল। এতে শরীরে ক্যালোরি ইনটেকের পরিমাণ কমবে। রোজ নিয়ম করে শরীরচর্চা করুন।
*যে অংশে ব্যথা সেখানে নিয়মিত ভাবে ম্যাসাজ করুন। ব্যথার স্প্রে বা কোনও অয়েল ম্যাসাজ করতে পারেন। এছাড়াও টো পয়েন্টে এক আঙুলের সাহায্যে ম্যাসাজ করুন।
*তেলের মধ্যে রসুন আর কালোজিরে গরম করেও লাগাতে পারেন। একেবারে প্রাচীন কাল থেকে ঠাকুমা-দিদিমাদের ভরসা এই টোটকা। ব্যবহার করলে আরাম পেতে পারেন আপনিও।
*ঠান্ডা ও গরম জলে গোড়ালি কমপ্রেস করুন। এতে কিছুটা হলেও আরাম পাবেন। খুব প্রয়োজন না হলে ব্যথার ওষুধ খাবেন না। ব্যথা যদি এক সপ্তাহের বেশি থাকে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যান।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।