Type 1 Diabetes in Kids: খুলছে স্কুল, করোনাকালে ডায়বেটিসে আক্রান্ত শিশুদের খাদ্যতালিকা কেমন হবে? কী বলছেন শহরের শিশু বিশেষজ্ঞরা
টাইপ ১ ডায়বেটিস হল এমন একটি অবস্থা, যেখানে শরীর নিজে থেকে ইনসুলিন হরমোন উৎপাদন করতে পারে না। অন্যদিকে, বেঁচে থাকার জন্য এই ইনসুলিনের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য।
প্রতি বছর ১৪ নভেম্বর বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস হিসেবে পালিত হয়। বিশ্বজুড়ে ডায়াবেটিস রোগ ব্যাপক হারে বেড়ে যাওয়ায় বিশ্ব ডায়াবেটিস ফেডারেশন (আইডিএফ) ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ১৯৯১ সালে ১৪ নভেম্বরকে ডায়াবেটিস দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। একই সঙ্গে, আজ ভারতে পালিত হয় শিশু দিবসও। আপনি কি জানেন আজ প্রতি ১ লক্ষ শিশুর মধ্যে ৩ জন শিশু টাইপ ১ ডায়বেটিস রোগের শিকার?
টাইপ ১ ডায়বেটিস হল এমন একটি অবস্থা, যেখানে শরীর নিজে থেকে ইনসুলিন হরমোন উৎপাদন করতে পারে না। অন্যদিকে, বেঁচে থাকার জন্য এই ইনসুলিনের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। তাই টাইপ ১ ডায়বেটিসে আক্রান্ত শিশুদের ইনজেকশনের মাধ্যমে ইনসুলিন নিতে হয়। দুর্ভাগ্যবশত, এই রোগকে প্রতিরোধ করার কিংবা এই রোগকে নিরাময় করার কোনও কার্যকরী উপায় এখনও অবধি নেই। তবে একটি স্বাস্থ্যকর জীবনধারা মেনে চললে এই রোগ কোনও ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে না।
কিন্তু টাইপ ১ ডায়বেটিস রোগীরা কীভাবে মেনে চলবে একটি স্বাস্থ্যকর জীবনধারা? এই বিষয়ে TV9 বাংলার মাধ্যমে পরামর্শ দিলেন শিশু বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসক সুমন পোদ্দার।
শিশু বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসক সুমন পোদ্দার জানিয়েছেন যে, টাইপ ১ ডায়বেটিস শিশুদের ক্ষেত্রে অনেক কম বয়সেই ধরা পড়ে। যার ফলে, অভিভাবকরা আগেই সচেতন হয়ে যান। এবং বয়স বেড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে শিশুটিও তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে ধারণা লাভ করে এবং সচেতনতা বজায় রাখে। কিন্তু অনেক বাচ্চাদের এই রোগ ১১-১২ বছর বয়সে এসেও ধরা পড়ে। সেই ক্ষেত্রে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
তিনি আরও জানান যে, এমনও ঘটনা রয়েছে, যখন একটি শিশুকে অজ্ঞান অবস্থা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এরকম ধরনের যে কোনও অবস্থায় প্রথমেই শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করে নেওয়া হয়। তখনই ধরা পড়ে যায় ওই শিশুটি ডায়বেটিসে আক্রান্ত কিনা। তবে, শিশুদের মধ্যে টাইপ ১ ডায়বেটিসের কিছু লক্ষণ দেখা যায়। যেমন- ঘন ঘন ইউরিন হওয়া, তৃষ্ণার্ত বোধ করা, যথার্থ পরিমাণ খাবার না খেয়েও ওজন বৃদ্ধি হওয়া কিংবা পরিমাণের থেকে বেশি খেয়েও ওজন কমে যাওয়া।
তবে অন্যান্য শিশুদের থেকে আলাদা হবে না টাইপ ১ ডায়বেটিসে আক্রান্ত শিশুদের জীবনধারা। শুধু পরিবর্তন আসবে তাদের ডায়েটে। এই বিষয়ে চিকিৎসক সুমন পোদ্দার জানিয়েছেন যে, খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিতে হবে উচ্চ ক্যালোরি যুক্ত খাবার। বাদ দিতে হবে জাঙ্ক ফুডকে। তার বদলে ডায়েটে যুক্ত করতে হবে উচ্চ ফাইবার যুক্ত খাবারকে। কম ক্যালোরি যুক্ত খাবারকেই খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে।
এমনকি যে সব ফলে ক্যালোরি বেশি, যেমন কলা, এই ধরনের ফলকেও রাখা যাবে না খাদ্যতালিকায়। উপরন্ত টাইপ ১ ডায়বেটিসে আক্রান্ত শিশুরা নিজের পছন্দ যেমন খুশি মিষ্টি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার খেতে পারবে না। যেহেতু টাইপ ১ ডায়বেটিসে আক্রান্ত বাচ্চাদের ইনসুলিন নিতে হয়, তাই ডাঃ সুমন জানিয়েছেন নির্দিষ্ট সময় অন্তর অল্প অল্প করে খাবার খেতে হবে রোগীদের। আর এর সঙ্গে করতে হবে নিয়মিত যোগব্যায়াম।
বাড়ির তুলনায় স্কুলে গেলে বাচ্চারা বেশি খেলাধুলা করে, যা তাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। দীর্ঘ দেড় বছর পর আগামী সপ্তাহ থেকে স্কুল খুলছে। ভাবছেন বাচ্চাকে টিফিনে কী খাবার দেবেন? এই বিষয়েও শিশু বিশেষজ্ঞ সুমন পোদ্দার জানিয়েছেন যে, কোনও রকম জাঙ্ক ফুড, কেক, ম্যাগি জাতীয় খাবার চলবে না টিফিনে। এর বদলে স্বাস্থ্যকর খাবার দিন আপনার সন্তানকে। নিরাময়ের হয়তো কোনও উপায় নেই, কিন্তু এই জীবনধারা মেনে চললে নিয়ন্ত্রণে থাকে শর্করার মাত্রা এবং সুস্থ থাকবে আপনার সন্তান।
আরও পড়ুন: শিশুদের মধ্যে ডায়বেটিসের সমস্যা দেখা দিলে কী করবেন জেনে নিন?